বাছাইপর্বে এত বাজে আগে খেলেনি ব্রাজিল!

বাছাইপর্বে এত বাজে আগে খেলেনি ব্রাজিল!

মূল পরিসংখ্যানে যাওয়ার আগে ব্রাজিলের বর্তমান কোচ দোরিভাল জুনিয়রের মন্তব্যটা আরেকবার পড়ে নেওয়া যাক, ‘আপনি লিখে রাখতে পারেন ২০২৬ বিশ্বকাপে আমরা ফাইনাল খেলব, বিশ্বাস না হলে দুই বছর পর আমার কথা মিলিয়ে নেবেন।’ 

মূল পরিসংখ্যানে যাওয়ার আগে ব্রাজিলের বর্তমান কোচ দোরিভাল জুনিয়রের মন্তব্যটা আরেকবার পড়ে নেওয়া যাক, ‘আপনি লিখে রাখতে পারেন ২০২৬ বিশ্বকাপে আমরা ফাইনাল খেলব, বিশ্বাস না হলে দুই বছর পর আমার কথা মিলিয়ে নেবেন।’ 

প্যারাগুয়ে ম্যাচের ঠিক আগের সংবাদ সম্মেলনে এমন কথা বলেছিলেন দোরিভাল জুনিয়র। ২৪ ঘণ্টা পর বাস্তবতা কেমন সেটা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে প্যারাগুয়ে। এই দলটিকেই কোপা আমেরিকায় ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল ব্রাজিল। ভিনিসিয়ুস জুনিয়র পেয়েছিলেন জোড়া গোল। সেই প্যারাগুয়ের কাছে এবারে ব্রাজিল হারল ১-০ গোলের ব্যবধানে। 

মাঠের খেলায় ব্রাজিলের পারফরম্যান্স দেখে মনে হতে পারে আগের দিনে কোচের সেই ফাইনাল খেলার স্বপ্নকে জলাঞ্জলি দিতেই যেন মাঠে নেমেছিল তারা। এমন যাচ্ছেতাই পারফরম্যান্সের সুবাদে ম্যাচ চলাকালেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্ন উঠতে থাকে, এটাই কি ব্রাজিলের সবচেয়ে বাজে দল? ম্যাচের শেষে সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করেছে ব্রাজিলের ফুটবলের বিশ্বস্ত মাধ্যম গ্লোবো। 

জয় পরাজয়ের নিরিখে এটাই ব্রাজিলের বাছাইপর্বের সবচেয়ে বাজে ফলাফল।  ২০০৩ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ৭১ ম্যাচ খেলে মাত্র ৫টিতে হেরেছিল ব্রাজিল। কিন্তু এবার ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ৮ ম্যাচ খেলেই ৪ হার। বোঝাই যাচ্ছে দোরিভাল জুনিয়রের সামনের সময়টা খুব একটা সহজ নয়। 

ব্রাজিলের গণমাধ্যম জানাচ্ছে, দক্ষিণ আমেরিকান অঞ্চলের বাছাইপর্বের বিচারে এটাই ব্রাজিলের সবচেয়ে বাজে দল! এর আগে কখনোই শুরুর ৮ ম্যাচ পর্যন্ত এতটা বিধ্বস্ত ছিল না ব্রাজিল। সবশেষ এমন বিধ্বস্ত অবস্থা ছিল ২০১০ বিশ্বকাপ বাছাইয়ের আগে, কার্লোস দুঙ্গার অধীনে। ১৯৯৪ বিশ্বকাপজয়ী ব্রাজিল দলের অধিনায়ক দেশের কোচ পদে ছিলেন ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি। 

সেবারে সেবার ৮ ম্যাচ শেষে ব্রাজিলের সংগ্রহ ছিল ১৩ পয়েন্ট। ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে নবম ম্যাচে ৪-০ গোলের জয়ে ব্রাজিলের সংগ্রহ দাঁড়িয়েছিল ১৬ পয়েন্ট। আর এবারে ৮ ম্যাচে ৪ হারের সুবাদে সেলেসাওদের সংগ্রহ ১০ পয়েন্ট।

আগামী অক্টোবরে চিলির বিপক্ষে নিজেদের নবম ম্যাচটি খেলবে দরিভালের দল। ওই ম্যাচটি জিতলে ৯ ম্যাচে ব্রাজিলের সংগ্রহ দাঁড়াবে ১৩ পয়েন্ট। ২০১০ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে নিজেদের ৯ম ম্যাচে জয় পেয়েছিল ব্রাজিল। সেবারে বাছাইপর্বের প্রথমভাগের ম্যাচ শেষে ব্রাজিলের সংগ্রহ ছিল ১৬। আর এবারে ১৩ হবে কি না তা নিয়েই যথেষ্ট শঙ্কা আছে। 

অথচ এর আগের কোচ তিতের অধীনে ব্রাজিল ছিল রীতিমতো অপ্রতিরোধ্য। ২০২২ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে ৯ ম্যাচ শেষে ব্রাজিল সর্বোচ্চ ২২ পয়েন্ট পেয়ে যায়। সেবার আদতে ৮ ম্যাচ শেষেই ব্রাজিলের সংগ্রহ ছিল ২২ পয়েন্ট। নবম ম্যাচে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ম্যাচ বাতিল করা হয়েছিল। 

প্যারাগুয়ের বিপক্ষে এই ম্যাচ থেকে আরও কিছু দুর্দশার ছবি স্পষ্ট হতে পারে ব্রাজিল ভক্তদের। ২০০৮ সালের পর থেকে কখনোই ৯০ মিনিটে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে হারতে হয়নি ৫ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। ১৬ বছর পর আজ দেখতে হলো সেই লজ্জাজনক হার। মাঝে কোপা আমেরিকায় প্যারাগুয়ের কাছে হারলেও সেটা গিয়েছিল টাইব্রেকার পর্যন্ত। 

ব্রাজিলের কোচ শেষ সংবাদ সম্মেলনেই বলেছিলেন, প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে জাদু দেখাবেন এমন খেলোয়াড়ের ঘাটতি আছে তার দলে। কথাটা কতখানি সত্য, তার প্রমাণ পাওয়া যাবে ব্রাজিলের শেষ ৭ ম্যাচে। জুন মাসের পর থেকে নিজেদের ৭ ম্যাচে একবারই দুইগোল বা এর বেশি করতে পেরেছে সেলেসাওরা। 

অবশ্য এই হারের পরেও বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে ব্রাজিল একেবারেই ছিটকে যায়নি। মোট ১৮ ম্যাচ খেলার পথে এই পর্যন্ত ৮ ম্যাচ খেলেছে ব্রাজিল। তাতে আছে ৫ম স্থানে। নতুন বিশ্বকাপ ফরম্যাটে কনমেবল অঞ্চল থেকে বিশ্বকাপে জায়গা পাবে ৬ দল। আর ৭ম স্থানে থাকা দলটা খেলবে আন্তঃমহাদেশীয় প্লে-অফ। 

জেএ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *