বাগেরহাটে ভরা মৌসুমে চড়া ইলিশের দাম, ক্ষুব্ধ ভোক্তারা

বাগেরহাটে ভরা মৌসুমে চড়া ইলিশের দাম, ক্ষুব্ধ ভোক্তারা

শ্রাবনের শেষ থেকে আশ্বিন মাসের মাঝামাঝি সময়টা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ ইলিশের মৌসুম বলে মানে। স্বাভাবিকভাবে এই সময়ে বাজারে ইলিশ মাছের পরিমাণ যেমন বেশি থাকে, তেমনি দামও থাকে সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে। তবে এ বছর পুরো সময় জুড়েই ব্যতীক্রম চিত্র বাগেরহাটের সকল হাট-বাজারে। 

শ্রাবনের শেষ থেকে আশ্বিন মাসের মাঝামাঝি সময়টা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ ইলিশের মৌসুম বলে মানে। স্বাভাবিকভাবে এই সময়ে বাজারে ইলিশ মাছের পরিমাণ যেমন বেশি থাকে, তেমনি দামও থাকে সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে। তবে এ বছর পুরো সময় জুড়েই ব্যতীক্রম চিত্র বাগেরহাটের সকল হাট-বাজারে। 

বাজারে মাছের পরিমাণ কম, দামও বেশি। চড়া দামের কারণে বেশিরভাগ মানুষই ইলিশ ক্রয় করতে পারছেন না। ভরা মৌসুমে মাছের দাম না কমায় ক্ষুব্ধ সাধারণ ক্রেতারা। শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে বাগেরহাট শহরের মাছ বাজার ঘুরে দেখা যায় অন্যান্য দিনের তুলনায় মাছের পরিমাণ কম, দামও বেশি। গেল কয়েকদিনের তুলনায় বেড়েছে প্রতিটি মাছের দাম। 

এর মধ্যে সব থেকে বেশি বেড়েছে ইলিশের দাম। অনেকেই ইলিশের দাম শুনে চলে যাচ্ছেন অন্য মাছের দোকানে। দেড় কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৮শ টাকা কেজি, এক কেজি ওজনের ইলিশ ১৪-১৫শ টাকা, ৭৫০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১২শ টাকা কেজি, ৫-৬টায় কেজি ৬শ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। সাগরের রুপচাঁদা, মেদ ও ভেটকি বিক্রি হচ্ছে আকারভেদে ৬০০ থেকে ১২শ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে। এছাড়া জাবা, কৈয়া ভোল, ভোল, তুলার ডাটি, কঙ্কন, স্যামন, চ্যালাও বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে।

অন্য দিকে বাগেরহাটে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত রুই, গ্রাসকার্প, মিনারকার্প, মৃগেল, চায়নাপুটি, কাতলা বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে। দাম বেড়েছে চিংড়ি, ফাইস্যা, টেংড়া, বাইলা, দাতিনাসহ স্থানীয় সকল মাছের। ৫শ থেকে শুরু করে ৮শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে এসব মাছ। দাম বিবেচনায় সব মাছ যখন ক্রেতাদের নাগালের বাইরে তখন কম দামে বিক্রি হচ্ছে পাঙ্গাস ও তেলাপিয়া। আকারভেদে এই মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে। মাছের মৌসুমে চড়া দাম থাকায় ক্ষুব্ধ ভোক্তারা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহ কম তাই দাম বেশি। 

মাছ ব্যবসায়ী রুহুল বলেন, আসলে আড়তে মাছ খুব কম। কিনতে হচ্ছে চড়া দামে, তাই বিক্রিও সেই অনুযায়ী করতে হচ্ছে। মাছ কিনতে আসা সিদ্দিক শেখ নামের এক ব্যক্তি বলেন, এ বছর এখনও ইলিশ মাছ কিনিনি। আজও কিনতে পারব না। তুলার ডাটি মাছ কিনেছি ৩শ টা টাকা করে। যদি দাম কমে তাইলে হয়ত ইলিশ কিনব।

রহিমা খানম নামের এক ক্রেতা বলেন, কয়েক বছর আগেও এই সময়ে ইলিশের দাম খুব কম থাকত। দুই বছর আগেও আধা কেজি ওজনের মাছ ৫শ টাকা কেজি দরে কিনেছি। কিন্তু এখন সেই মাছ ১২শ টাকা কেজি। তাহলে কেমনে খাব আমরা। পাশে দাঁড়ানো আরেক ক্রেতা বলেন, আসলে ইলিশ মাছ যেহেতু জাতীয় মাছ এবং সবার পছন্দের এ বিষয়ে সরকারের নজর দেওয়ার দরকার। ইলিশ মাছ সাধারণ মানুষের নাগালের ভেতরে আনতে হবে। 

মহসিন নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, সাগরে এবার মাছ খুব কম। তাই মাছের দাম কোনোভাবে কমতেছে না। অনেকেই শুধু দাম জেনে চলে যায়। দাম বেশি থাকায় ক্রয়-বিক্রয়ও কমে গেছে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বাগেরহাটের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল ইমরা জানান, ইলিশের দাম ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্য আনতে মাঠে নামছে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিকার অধিদপ্তর। সংস্থাটি ইলিশের বাজার নিয়ে তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছে। দাম নিয়ন্ত্রণে শিগগিরই মাঠে নামবে সংস্থাটি।  

শেখ আবু তালেব/আরকে

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *