বাংলাদেশি নাগরিকদের চার শতাধিক ভিসা আবেদন রিভিউ করেছে ভারত। গত আগস্টে এসব ভিসা আবেদন করা হয়েছিল। এর মাধ্যমে ভিসা দেওয়ার আগে গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থার মাধ্যমে আবেদনকারীর ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করা হয়েছে।
বাংলাদেশি নাগরিকদের চার শতাধিক ভিসা আবেদন রিভিউ করেছে ভারত। গত আগস্টে এসব ভিসা আবেদন করা হয়েছিল। এর মাধ্যমে ভিসা দেওয়ার আগে গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থার মাধ্যমে আবেদনকারীর ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করা হয়েছে।
বাংলাদেশিদের জন্য ভারতীয় ভিসা পরিষেবা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত রয়েছে এবং এর মধ্যেই নির্দিষ্ট কিছু ক্যাটাগরির এসব ভিসার আবেদন পর্যালোচনা করল দেশটি।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভিসা পরিষেবা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত থাকলেও ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত আগস্ট মাসে বাংলাদেশ থেকে নির্দিষ্ট কিছু বিভাগে করা ৪০০টিরও বেশি ভিসা আবেদন পর্যালোচনা করেছে।
ছাত্র-জনতার ব্যাপক গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর ব্যাপক রাজনৈতিক পরিবর্তনের সাক্ষী হয়েছে বাংলাদেশ।
দ্য হিন্দু বলছে, গত দুই মাস ধরে বাংলাদেশে ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রগুলো কেবল শিক্ষার্থীদের এবং জরুরি চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ভারতে যেতে ইচ্ছুক রোগীদের সীমিত সংখ্যক ভিসা পরিষেবা প্রদান করছে।
মূলত বাৎসরিক হিসাবে ভারতে সবচেয়ে বেশি বিদেশি পর্যটক যায় বাংলাদেশ থেকে। একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত বছর প্রায় ১৬ লাখ বাংলাদেশি নাগরিককে ভিসা দেওয়া হয়েছে।
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, গত আগস্টে বাংলাদেশি নাগরিকদের ৪৩৪টি প্রিয়ার রেফারেল চেক (পিআরসি) কেস ক্লিয়ার করা হয়েছে। একই মাসে পাকিস্তানের ক্ষেত্রে এই ধরনের পর্যালোচনার সংখ্যা ৮৭৮টি বলেও ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
মূলত পিআরসি বলতে নির্দিষ্ট একটি প্রক্রিয়া বোঝায় যেখানে ভিসা দেওয়ার আগে গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থার মাধ্যমে আবেদনকারীর ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করা হয়। তবে এই সময়ের মধ্যে মোট কতটি ভিসা দেওয়া হয়েছে তা জানা যায়নি।
এছাড়া ভারত বাংলাদেশকে ১৫টি ক্যাটাগরিতে ভিসা দেয়, যার মধ্যে “জরুরি পরিষেবাও” রয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের মতে, “বাংলাদেশের নাগরিকদের ভিসা প্রদানের বিষয়টি ২০১৩ সালের ২৮ জানুয়ারি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত সংশোধিত ভ্রমণ ব্যবস্থা এবং বিভিন্ন সময়ে জারি করা প্রশাসনিক নির্দেশাবলীর মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে থাকে।”
কূটনৈতিক এবং অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীরা পারস্পরিক ভিত্তিতে ভিসা ছাড়া ৪৫ দিন পর্যন্ত থাকার সুযোগ পেয়ে থাকেন।
দ্য হিন্দু বলছে, ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ইরাক এবং সুদানের মতো দেশগুলোকে প্রিয়র রেফারেন্স ক্যাটাগরির (পিআরসি) অধীনে রাখা হয়েছে, সেখানে চীন এবং বাংলাদেশের মতো নির্দিষ্ট দেশগুলোর জন্য নির্দিষ্ট কিছু ধরনের ভিসা রয়েছে, যেগুলো প্রদানের আগে অতিরিক্ত নিরাপত্তা পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়।
চীনা নাগরিকদের জন্য ভারতের ব্যবসায়িক প্রিয়র রেফারেন্স ক্যাটাগরির অধীনে না থাকলেও নিয়োগ এবং কনফারেন্স ভিসার জন্য বাড়তি যাচাইকরণ করা হয়ে থাকে। ভারত শুধুমাত্র জাপান, কোরিয়া প্রজাতন্ত্র এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) নাগরিকদের ব্যবসা, পর্যটন, সম্মেলন এবং চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ৬০ দিন পর্যন্ত ভিসা অন অ্যারাইভাল সুবিধা প্রদান করে।
ভারতীয় এই সংবাদমাধ্যম বলছে, বাংলাদেশ সীমান্তে মোতায়েন থাকা বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) গত ৫ আগস্ট থেকে কঠোর সতর্কতায় রয়েছে এবং বৈধ নথি বা ভিসা ছাড়া কাউকে দেশটিতে প্রবেশ করতে না দেওয়ার বিষয়ে সরকারের কাছ থেকে কঠোর নির্দেশনা পেয়েছে।
টিএম