একটি পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব
বর্তমান বাস্তবতায় মৃত্যুদণ্ডের বিধান রহিত করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
আজ (মঙ্গলবার) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্কের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, আজ জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক তার কাছে এসেছিলেন। তাদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডের বিধান রহিত করা যায় কি না সে বিষয়ে মি. টুর্ক কথা বলেছেন। এ প্রসঙ্গে আমি বলেছি, এটা বর্তমান বাস্তবতায় সম্ভব না। কারণ আমাদের পেনাল সিস্টেম ও শত বছরের জাস্টিস সিস্টেমে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। যে ফ্যাসিস্টদের হাতে হাজার হাজার তরুণ নিহত হয়েছে, তাদের হত্যার বিচারকে সামনে রেখে হঠাৎ করে মৃত্যুদণ্ডের বিধান বাতিল করার প্রশ্নই আসে না। তাছাড়া যে কোনো বড় ধরনের আইনগত পরিবর্তন সমাজ আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে মিল রেখে করতে হয়।
আসিফ নজরুল বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে বিচারকে অধিকতর গ্রহণযোগ্য করার জন্য জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন আইনগত সংস্কারে জড়িত রয়েছে। এ ছাড়া ফরেনসিক সাপোর্ট, টেকনিক্যাল সাপোর্ট বা ক্যাপাসিটি বিল্ডিংয়েও সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তারা। ফলকার টুর্ককে আশ্বস্ত করে আইন উপদেষ্টা বলেছেন, এই ট্রাইব্যুনালে সুবিচার করা হবে। প্রতিশোধ নেওয়ার ইচ্ছা থেকে এটা করা হচ্ছে না। অবিচার করার জন্য আগের আদালতে যে রকম হয়েছে, সেরকম অবিচার করা হবে না। এখানে কোনো কিছু লুকানোর নেই। যে কেউ এসে এই বিচার দেখতে পারবেন।
আসিফ নজরুল বলেন, ফলকার টুর্ক বর্তমান সরকারের বিভিন্ন কাজ বিশেষ করে সংস্কার কাজ, ট্রান্জিশনাল ট্রান্সফরমেশন, ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক অভ্যুত্থান পরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সর্বাত্মক সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। সরকারের সংস্কার কার্যক্রমের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তার পক্ষ থেকে দুটি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন, যার মধ্যে একটি বিচার বিভাগ স্বাধীন করা। এ বিষয়ে তাকে বলেছি আমরা এ প্রসঙ্গে অবশ্যই কমিটেড। প্রধান বিচারপতি ইতোমধ্যে একটি পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দিয়েছেন। আমরা অবশ্যই এটি নীতিগতভাবে গ্রহণ করি। এর ‘মডালিটিস’ কেমন হবে, সেটা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করা হবে। এটা ছাড়াও বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশন সম্পর্কে তাকে অবহিত করা হয়েছে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণে উচ্চ আদালত ও নিম্ন আদালত নিয়ে আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে কী কী সংস্কার ভাবনা রয়েছে, সেটা হাইকমিশনারকে জানানো হয়েছে। তিনি এসব বিষয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
এমএম/এনএফ