বরিশালে চালের বাজারে অস্থিরতা, প্রতি বস্তায় বেড়েছে ২০ টাকা

বরিশালে চালের বাজারে অস্থিরতা, প্রতি বস্তায় বেড়েছে ২০ টাকা

সপ্তাহের ব্যবধানে বরিশালে ২ টাকা থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে চালের দাম। মিলের সিন্ডিকেটের কারণে অস্থিরতা শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। তবে ক্রেতারা বলছেন, কার্যকরভাবে বাজার মনিটরিং না হওয়ায় বাজারভেদে দাম বাড়ছে।

সপ্তাহের ব্যবধানে বরিশালে ২ টাকা থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে চালের দাম। মিলের সিন্ডিকেটের কারণে অস্থিরতা শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। তবে ক্রেতারা বলছেন, কার্যকরভাবে বাজার মনিটরিং না হওয়ায় বাজারভেদে দাম বাড়ছে।

বরিশালের সবচেয়ে বড় পাইকারি চালের বাজার ফরিয়াপট্টি ঘুরে জানা গেছে, সাত-আট দিন আগে ২৫ কেজি ওজনের প্রতি বস্তা বুলেট হাইব্রিড ১১৭০-৮০ টাকা, গুটি স্বর্ণা ১৪২০-৩০ টাকা, আঠাশ বালাম ১৪৭০-৮০ টাকা এবং মিনিকেট ১৬৮০ টাকায় বিক্রি হতো।

রোববার (২৭ অক্টোবর) সকাল থেকেই পঁচিশ কেজি প্রতি বস্তা বুলেট হাইব্রিড ১২১০ টাকা, গুটি স্বর্ণা ১৪৪০ টাকা, আঠাশ বালাম ১৫০০ টাকা এবং মিনিকেট ১৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

জেবিন এন্টারপ্রাইজের জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমরা অল্প কিছু লাভে ব্যবসা করি। মিল পর্যায়ে দাম বাড়ালে আমাদেরও বাড়াতে হয়। মিল পর্যায়ে দাম কমলে আমরাও কম দামে বিক্রি করি। এক সপ্তাহ আগেও বস্তা প্রতি ১০/২০ টাকা কম ছিল। এখন মিল থেকেই বেশি দামে কিনতে হচ্ছে আমাদের।

হাজি আনোয়ার আড়তের শহিদুল ইসলাম বলেন, মিল পর্যায়ে সঠিক মনিটরিং হলে চালের বাজারে অস্থিরতার সুযোগ নেই। কিন্তু মিল পর্যায়েই কেউ নজরদারি করে না। আমরা তো মিল থেকে কিনে এনে বিক্রি করি। মিলে দাম বাড়লে পাইকারি ও খুচরা বাজারে বাড়বে। মিলে কমলে আমাদের বাজারেও কমবে।

বরিশাল নগরীর বাংলাবাজার, নতুনবাজার ঘুরে ও কয়েকটি মুদি দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ ধরেই প্রতি কেজিতে ২/৩ টাকা বেশিতে বিক্রি করতে হচ্ছে।

বাংলাবাজারের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী বলেন, আমার দোকানে এক সপ্তাহ আগেও আঠাশ বালাম ৬০ টাকা, মিনিকেট ৭০ টাকা, স্বর্ণা ৫২/৫৩ টাকা, মোটা চাল ৮২ টাকা দরে কেজি বিক্রি করতাম। কিন্তু হঠাৎ করেই সকল বস্তায় ১০/২০ টাকা বেড়ে যাওয়ায় আমাদেরও ১/২ টাকা বেশিতে বিক্রি করতে হচ্ছে। এখন আঠাশ বালাম ৬২, মিনিকেট ৭২, স্বর্ণা ৫৫, মোটা চাল ৮৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি।

ক্রেতা আরাফাত হোসেন বলেন, সরকার বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে কোনো কাজই করছে না। মানুষ দুর্বিষহ জীবন ধারণ করছে। বাজারে সব মালামালের দাম বাড়তি। এখন চালের দামও বাড়তে শুরু করেছে। এখনই নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে মানুষের রাস্তায় নেমে আসা ছাড়া পথ থাকবে না।

আরেক ক্রেতা সানজিতা খাতুন বলেন, অবাক লাগে যে কোনো সরকারই সিন্ডিকেট ভাঙতে পারছে না। গত সরকার ১০ টাকায় চাল দেওয়ার কথা বলে ৬০/৭০ টাকার নিচে চাল নামাতে পারেনি। আর এখনকার সরকার তো বাজার নিয়ন্ত্রণেই নিতে পারছে না। এক এক বাজারে এক এক দামে বিক্রি হচ্ছে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বরিশাল জেলার সহকারী পরিচালক সুমি রাণী মিত্র বলেন, চালের বাজারে দাম বেড়েছে। খবর পেয়ে গত সপ্তাহেই আমরা ফরিয়াপট্টিতে অভিযান চালাই। বরিশালের ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর সঙ্গে জড়িত নন। তারা মিল থেকে বেশি দামে ক্রয় করেন বিধায় বেশি দামে বিক্রি করেন। আসলে মিল পর্যায়ে দাম কামালে বরিশালের বাজারেও দাম কমে যাবে।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/এএমকে

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *