বন্যায় ক্ষতি নিরূপণ ও ঘুরে দাঁড়তে যে পরামর্শ দিলো ক্যাপস

বন্যায় ক্ষতি নিরূপণ ও ঘুরে দাঁড়তে যে পরামর্শ দিলো ক্যাপস

দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় কৃষি, মৎস ও প্রাণিসম্পদ খাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ। বন্যাকবলিত এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ওঠতে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছে সেন্টার ফর এগ্রিকালচার পলিসি স্টাডিজ (ক্যাপস)।

দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় কৃষি, মৎস ও প্রাণিসম্পদ খাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ। বন্যাকবলিত এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ওঠতে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছে সেন্টার ফর এগ্রিকালচার পলিসি স্টাডিজ (ক্যাপস)।

শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বন্যা পরবর্তী কৃষি ব্যবস্থাপনা নিয়ে এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা তাদের পরামর্শ তুলে ধরেন।

বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম। তিনি বলেন, দেশে যে বন্যা হয়েছে তা স্বাভাবিক বন্যা নয়। ত্রিপুরা রাজ্য থেকে পানি এসেছে বাংলাদেশের সঙ্গে বৈরি ভাবের কারণে। পরিকল্পিতভাবেই এ পানি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ওই অঞ্চলের মানুষ কখনো এরকম বন্যা দেখেনি। গোমতী নদী পাহাড়ি নদী। সেখান থেকে ঢলের পানি এসে বন্যা হলেও তা মেঘনা দিয়ে প্রবাহিত হয়ে যায় খুব বেশি ক্ষতি করতে পারে না।

সাবেক এ মহাপরিচালক বলেন, ইন্ডিয়া আবারও এরকম করবে। এ জন্য আমাদের লং টার্ম ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করতে হবে। ক্লাইমেট চেঞ্জ এর মেডিটেশন এন্ড এডাপটেশন এর দিকে নজর দিতে হবে। আবারো ওই এলাকায় বন্যা হতে পারে।

এছাড়া বন্যাপরবর্তী রোগ থেকে নিরাপদ থাকার আহ্বান জানান তিনি।

এসময় মূল প্রবন্ধে সেন্টার ফর এগ্রিকালচার পলিসি স্টাডিস এর নির্বাহী পরিচালক ড. মুহাম্মদ রুহুল আমিন বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় পরামর্শ তুলে ধরেন।

বন্যাকবলিত এলাকার কৃষি ফসলের প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি, বিশেষ করে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার রোপা আমনের বীজতলা, রোপিত আমন এবং আউশ ধানসহ অন্যান্য ফসলের ক্ষতি নির্ধারণ করে দ্রুত পুনর্বাসন কাজ শুরু করতে হবে। 

এছাড়া আগাম শীতকালীন শাক-সবজি, ডাল ফসল, তেল ফসলসহ অঞ্চল উপযোগী ফসল চাষের পরিকল্পনা ও কার্যক্রম দ্রুত শুরু করতে হবে। বিভিন্ন দপ্তর, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের আওতাভুক্ত নিজস্ব উঁচু জমিতে নাবী জাতের আমনের বীজতলা, পলি ব্যাগে অথবা বেডে বিভিন্ন সবজি, চারা উৎপাদনের ব্যবস্থা নিতে হবে।

সেন্টার ফর এগ্রিকালচার পলিসি স্টাডিসের চেয়ারম্যান কৃষি অর্থনীতিবিদ ও কলামিস্ট ড. মুহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, বন্যা দুর্গত এলাকায় রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ, আবাসন তৈরি ও মেরামত সংক্রান্ত পুনর্বাসন কাজে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে ক্ষয় ক্ষতি নির্ধারণ পূর্বক দ্রুত পুনর্বাসন ও মেরামতের ব্যবস্থা নিতে হবে। স্বাস্থ্য সেবা, জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিষয়ক কাজের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে ক্ষয় ক্ষতি নিরূপণ পূর্বক দ্রুত পুনর্বাসন ও সেবা প্রদানের ব্যবস্থা নিতে হবে।

তিনি বলেন, কৃষকদের শস্যঋণের/ কৃষি ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে। সেই সঙ্গে ঋণগ্রস্তদের ঋণ মওকুফ অথবা ঋণের কিস্তি মওকুফ করতে হবে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ফিরোজ মাহমুদ, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মোশাররফ হোসেন, ডিএইর সাবেক মহাপরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ মহসীন, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মামুনুর রশিদ, পিকে এসএফ এর ডিএমডি ড. ফজলে রাব্বি সাদেক প্রমুখ।

এমএসআই/এমএসএ 

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *