ফিফার নিয়মের তোয়াক্কা না করেই ভারতের পক্ষে রেফারির সিদ্ধান্ত

ফিফার নিয়মের তোয়াক্কা না করেই ভারতের পক্ষে রেফারির সিদ্ধান্ত

সাফের দ্বিতীয় সেমিফাইনাল। ম্যাচের বয়স ৭১ মিনিট। স্বাগতিক নেপালের বিপক্ষে সঙ্গীতার গোলে ভারতের লিড। এরপরেই অদ্ভুত এক কাণ্ড। একদিকে ভারতীয়দের উদযাপন । আরেকদিকে স্বাগতিক মেয়েরা বল নিয়ে সেন্টারে চলে যান। নেপালের খেলোয়াড়রা বল নিয়ে সেন্টারে বলে কিকের জন্য প্রস্তুত। ভারত তখনো প্রস্তুত না হলেও রেফারি ওম চাকি খেলা শুরু করার জন্য বাঁশি বাজান। 

সাফের দ্বিতীয় সেমিফাইনাল। ম্যাচের বয়স ৭১ মিনিট। স্বাগতিক নেপালের বিপক্ষে সঙ্গীতার গোলে ভারতের লিড। এরপরেই অদ্ভুত এক কাণ্ড। একদিকে ভারতীয়দের উদযাপন । আরেকদিকে স্বাগতিক মেয়েরা বল নিয়ে সেন্টারে চলে যান। নেপালের খেলোয়াড়রা বল নিয়ে সেন্টারে বলে কিকের জন্য প্রস্তুত। ভারত তখনো প্রস্তুত না হলেও রেফারি ওম চাকি খেলা শুরু করার জন্য বাঁশি বাজান। 

বিক্ষিপ্তভাবে থাকা ভারতের খেলোয়াড়রা নিজেদের গোলের দিকে আসতে আসতে দূরপাল্লার শটে গোল করেন নেপালের সাবিত্রা ভান্ডারি। উদ্‌যাপনে মেতে ওঠে স্বাগতিক নেপালের পুরো স্টেডিয়াম। এমন এক গোলের পর  খেলোয়াড় এবং ডাগআউটের সবাই প্রতিবাদ শুরু করেন। ভারতের গোলের আনন্দ তখন হতভম্ব পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে যায়। 

এরপর খেলা শুরু হলেও মিনিটের মধ্যে খেলা বন্ধ করতে হয় রেফারিকে। দীর্ঘ ৬৭ মিনিট খেলা বন্ধ থাকে। ১৩৯ মিনিটের মাথায় নেপালের গোল বাতিল করে খেলা শুরু হয়। যদিও পরের মিনিটে এবার সেই সাবিত্রা ভান্ডারিই গোল করে পুরো নেপালকে আনন্দে ভাসান। 

তবে প্রশ্ন থেকেই যায়, এক্ষেত্রে ফিফার নিয়ম কী বলে। আন্তর্জাতিক ফুটবলের নিয়মটা অবশ্য থেকে যায় নেপালের পক্ষেই। কোনো কারণে একটি দলের ১১ জন খেলোয়াড়ই যদি গোল উদযাপনে মাঠের বাইরে চলে যান, তবে রেফারি খেলা শুরুর বাঁশি বাজানোর পর তারা খেলা চালিয়ে নিতে পারবে। কিংবা গোলও করতে পারে। 

নিচের ছবিতে ফিফা বিশ্বকাপের সময়ের একটি ছবি দেখা যাক। যেখানে পুরো ইংল্যান্ড দল গোলের পর উদযাপনে ব্যস্ত থাকলেও ইংলিশ রাইটব্যাক কিয়েরান ট্রিপিয়ার পুরোটা সময়েই ছিলেন মাঠের মাঝে। সাফের সেমিতে ভুটানি রেফারি যুক্তি দিয়েছেন বেঞ্চের একজন খেলোয়াড় মাঠে ছিলেন। যদিও ম্যাচ রিপ্লেতে এর সত্যতা দেখা যায়নি। 

তবে আন্তর্জাতিক নিয়ম বলছে, বেঞ্চ নয়। একাদশের অন্তত একজন খেলোয়াড়কেই মাঠের মাঝে থাকতে হবে। সঙ্গীতার গোলের পর ভারতীয়দের কেউই মাঠে ছিলেন না। সুতরাং গোলটা প্রাপ্য ছিল নেপালের। 

আন্তর্জাতিক ফুটবলের আইন প্রণয়নকারী সংস্থার আরও এক নিয়ম ভঙ্গ হয়েছে ঘটনাবহুল এই সেমিতে। আইএফএবির ৫.২ ধারায় রেফারির সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে বলা হয়েছিল গোল হওয়া বা না হওয়া এবং খেলা চালুর বিষয়ে রেফারির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। 

এরপরের অনুচ্ছেদেই বলা হয়, ভুল হয়েছে বুঝতে পেরে কিংবা অন্য একজন ম্যাচ অফিসিয়ালের পরামর্শের খেলার কোনো সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের সুযোগ থাকছে না রেফারির সামনে। যদিও ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে রেফারি ওম চাকি ভুল হয়েছে বুঝতে পেরে গোল বাতিল করেন। সেই সঙ্গে নেপালের মেয়েদেরও মাঠে ফেরার অনুরোধ জানান। 

চলতি বছর ৮ই ফেব্রুয়ারি এমনই আরেক অদ্ভুত কাণ্ড দেখিয়েছিল সাফ। অনূর্ধ্ব-১৯ নারী সাফের ফাইনালে বাংলাদেশের বিপক্ষে এসেছিল সেই সিদ্ধান্ত। ২২ শটের পেনাল্টি শ্যুটআউট শেষে সেদিন টস করে ভারতকে বিজয়ী ঘোষণা করেছিলেন ম্যাচ কমিশনার। যেখানে সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার কেবলই রেফারির, সেখানে ম্যাচ কমিশনারের টস কাণ্ড বেশ বড় বিতর্কের জন্ম দেয়। 

এছাড়া আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী টাইব্রেকার চালু থাকার কথা ছিল নির্ধারিত ফল না আসা পর্যন্ত। তবে সাফের ম্যাচ কমিশনার এক্ষেত্রে বেছে নেন টস করার সিদ্ধান্ত। বাংলাদেশ এই সিদ্ধান্ত মেনে নেয়নি। ভারতও মাঠ ছেড়ে চলে যায় হোটেলে। শেষ পর্যন্ত আড়াই ঘণ্টা অপেক্ষা শেষে সেদিন যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন করা হয়েছিল বাংলাদেশ ও ভারতকে।

জেএ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *