ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে প্রতারণা করে ৫০ গ্রাহকের এক কোটির বেশি টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হয়েছেন দাদপুর ইউনিয়নের ভাটদী বাজারের ইসলামী এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ম্যানেজার আক্তারুজ্জামান হাসু (৫৫)। তিনি ফরিদপুরের বোয়ালমারী পৌরসদর বাজারের মৃত আব্দুর রশিদ মিয়ার ছেলে।
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে প্রতারণা করে ৫০ গ্রাহকের এক কোটির বেশি টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হয়েছেন দাদপুর ইউনিয়নের ভাটদী বাজারের ইসলামী এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ম্যানেজার আক্তারুজ্জামান হাসু (৫৫)। তিনি ফরিদপুরের বোয়ালমারী পৌরসদর বাজারের মৃত আব্দুর রশিদ মিয়ার ছেলে।
গত কয়েকদিন ধরে এজেন্ট ব্যাংকটি বন্ধ থাকায় মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এজেন্ট ব্যাংকের কয়েকজন গ্রাহক ইসলামী ব্যাংকের বোয়ালমারী শাখায় গিয়ে জানতে পারেন তাদের হিসাবে ম্যানেজার আক্তারুজ্জামান কোনো টাকাই জমা রাখেননি। সব টাকা জালিয়াতির মাধ্যমে নিজের অ্যাকাউন্টে জমা করেছেন।
গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় তিন বছর আগে বোয়ালমারী উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের ভাটদী বাজারে ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং পরিষেবার আওতায় জামান ট্রেডার্স নামে একটি আউটলেট নিয়ে এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করেন আক্তারুজ্জামান হাসু। এর মধ্যে অনেক গ্রাহক স্থায়ী আমানতসহ বিভিন্ন লেনদেন করেন। তবে গত ১৫ সেপ্টেম্বর কয়েকজন গ্রাহক ভাটদী বাজার ইসলামী ব্যাংকের আউটলেটের কার্যালয়ে গিয়ে অফিস তালাবদ্ধ দেখতে পেয়ে হতাশ হন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ওই শাখাটি তালাবদ্ধ দেখে কর্মরত ম্যানেজার এবং কর্মচারীদের সঙ্গে গ্রাহকেরা যোগাযোগের চেষ্টা করেন। শাখাটির প্রধান হিসাব রক্ষক মো. বাদশা মিয়া গ্রাহকদের জানান, একাধিক গ্রাহকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে গত ৫ সেপ্টেম্বর পালিয়েছেন আক্তারুজ্জামান হাসু।
ভুক্তভোগী গ্রাহক হেনা পারভীন বলেন, গত ২২ জুলাই আমি ১২ লাখ টাকার একটি এফডিআর করি। আমাকে জামান ট্রেডার্স নামে ইসলামী ব্যাংক বোয়ালমারী শাখার একটি হিসাবের ১২ লাখ টাকার চেক দেওয়া হয়েছে। এখন শুনছি ব্যাংকের উদ্যোক্তা এ টাকা মূল শাখায় জমা না দিয়ে নিজে আত্মসাৎ করেছেন।
বোয়ালমারী উপজেলার মাধবপুর গ্রামের রুখসানা খানম জানান, তিন লাখ টাকা এজেন্ট ব্যাংকে এফডিআর করেছিলাম। আমাদের একটি চেকও দেয়। আজকে অ্যাকাউন্টে দেখছি কোনো টাকা জমা নেই। অনেক কষ্ট করে এই টাকাটা জমা করেছিলাম। এখন আমার টাকার কি হবে জানি না।
এজেন্ট ব্যাংকটির প্রধান হিসাবরক্ষক মো. বাদশা মিয়া বলেন, আমাদের ব্যাংকের মালিক আক্তারুজ্জামানের নির্দেশনা মোতাবেক আমরা কাজ করেছি। আমাদের আউটলেটের প্রায় ৫০ জন গ্রাহকের প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়েছে সে। মালিকের মোবাইল নম্বরও গত ৫ সেপ্টেম্বরের পর থেকে বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। আমরাও তাকে খুঁজে পাচ্ছি না।
ইসলামী ব্যাংক বোয়ালমারী শাখার অন্তর্ভুক্ত ভাটদি ইসলামী এজেন্ট ব্যাংকিং ও জামান ট্রেডার্স আউটলেটের ম্যানেজার আক্তারুজ্জামান হাসুর মোবাইল নাম্বার বন্ধ থাকায় একাধিকবার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
ইসলামী ব্যাংকের ফরিদপুরের বোয়ালমারী শাখার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মুহিত শেখ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভাটদী বাজারের আউটলেট জামান ট্রেডার্সের গ্রাহকরা এসেছিল। তাদের সঙ্গে এজেন্ট আক্তারুজ্জামান চেক দিয়ে কিছু লেনদেন করেছে। এটা একান্তই তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। বর্তমান সে পলাতক রয়েছে বলে জানতে পেরেছি। ইসলামী ব্যাংক একটা ব্রান্ড। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের আড়ালে যদি সে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেব।
জহির হোসেন/আরকে