পুরান ঢাকার জামিল হত্যা : স্ত্রীসহ ৩ জনের আমৃত্যু কারাদণ্ড 

পুরান ঢাকার জামিল হত্যা : স্ত্রীসহ ৩ জনের আমৃত্যু কারাদণ্ড 

রাজধানীর পুরান ঢাকায় ব্যবসায়ী জামিল হোসেনকে (৩২) গলা কেটে ও কুপিয়ে হত্যার দায়ে নিহতের স্ত্রী মৌসুমি জামিলসহ ৩ জনের আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। 

রাজধানীর পুরান ঢাকায় ব্যবসায়ী জামিল হোসেনকে (৩২) গলা কেটে ও কুপিয়ে হত্যার দায়ে নিহতের স্ত্রী মৌসুমি জামিলসহ ৩ জনের আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। 

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ মোরশেদ আলম এই রায় ঘোষণা করেন। 

দণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেক আসামিকে ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। 

আমৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন, নিহতের ভায়রা জুয়েল রানা ওরফে তানভীর ও ভাড়াটিয়া খুনি শফিকুল আলম ওরফে কসাই শফিক।

মামলায় অপর আসামি এমরান হাসান ওরফে ইমরান ওরফে সুলতান হত্যার বিষয়টি জেনে সংশ্লিষ্ট থানায় না জানানোর কারণে তাকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে তিনি ইতোমধ্যে ১০ মাস কারাভোগ করায় তাকে মুক্তি দিয়েছেন আদালত।  

এদিকে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন এরফান ও মো. ইউনূস।

আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি এই রায়ে বিরুদ্ধে আপিল করার কথাও জানান। 

রায় ঘোষণার আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। রায় ঘোষণার শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় নিহতের স্ত্রী মৌসুমি জামিলকে আদালতে কান্নাকাটি করতে দেখা গেছে। 

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ঢাকার সোয়ারীঘাটে গাম ও স্কচটেপের কারখানা ছিল জামিলের। ওয়াটার ওয়ার্কস রোডের ৫৯ নম্বর বাসার দ্বিতীয় তলায় স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন তিনি। জুয়েল রানা ওরফে তানভীর জামিলের ভায়রা ভাই। তার সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে জামিলের স্ত্রী মৌসুমির। এর জের ধরে ২০১৬ সালের ২ মে জুয়েল ও মৌসুমিসহ অন্যরা জামিলকে গলা কেটে হত্যা করে।

হত্যার পর জামিলকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না স্ত্রী তা প্রচার করলে এ নিয়ে চকবাজার থানায় একটি জিডি করা হয়। এরপর পুলিশ স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার বক্তব্যে অসংলগ্নতা পাওয়া যায়। পরে তাকেসহ স্বজনদের নিয়ে রহমতগঞ্জের বাসায় যাওয়া হয়। এ সময় বাসা তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। পুলিশ চাবি চাইলে তা হারিয়ে ফেলেছেন বলে দাবি করেন মৌসুমী। এরপর তালা ভেঙে ঘরে ঢুকতেই দুর্গন্ধ পাওয়া যায়। একপর্যায়ে খাটের নিচে বস্তায় ভরে রাখা জামিলের গলা কাটা লাশ পাওয়া যায়। 

এ ঘটনায় পরদিন জামিলের বড় বোন শাহিদা পারভীন চকবাজার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। 

মামলাটি তদন্ত করে ২০১৭ সালের ৩১ অক্টোবর ছয়জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম।

মামলাটির বিচার চলাকালীন সময়ে ১৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার ৪ জন আসামি আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।

এনআর/এমএসএ 

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *