পুরান ঢাকায় দেবীর বোধন ও ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে উৎসব মুখর পরিবেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রাণের শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হয়েছে। ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরসহ অন্যান্য মন্দির মণ্ডপে উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্যে ঠাকুর দর্শন ও পূজা পালন করছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
লোকনাথ পঞ্জিকা অনুযায়ী গত ৯ অক্টোবর মহাষষ্ঠী, ১০ অক্টোবর মহাসপ্তমী শেষে শুক্রবার ১১ অক্টোবর মহাষ্টমী ও ১২ অক্টোবর মহানবমী। এরপর ১৩ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে সমাপ্তি ঘটবে শারদীয় দুর্গোৎসবের। এর আগে ২ অক্টোবর শুভ মহালয়ার মধ্য দিয়ে দেবীপক্ষের সূচনা হয়। এরপর বোধনের মাধ্যমে দেবী দুর্গাকে জাগ্রত করা হয়।
এবারের পূজা নিয়ে শাঁখারী বাজার এলাকার বাসিন্দা দীপিকা হালদার বলেন, আমরা সকলেই ইতোমধ্যে উৎসবের আমেজে পূজা শুরু করেছি। এ উৎসব বাংলার প্রতিটি মানুষের সাথে ভাগাভাগি করতে চাই। কাউকে কোনো গুজবে কান না দিতে অনুরোধ করে তিনি বলেন, বিগত দিনের চেয়েও এবারের উৎসব আরও আনন্দদায়ক হবে এবং দেশের সার্বিক কল্যাণের জন্য মা দুর্গার কাছে প্রার্থনা করবো।
শ্রী শ্রী নরসিংহ জিউর মন্দির পূজা পরিষদ উপদেষ্টা কমিটির সদস্য শক্তিপদ মজুমদার বলেন, পূজার প্রথম থেকেই প্রশাসন আমাদের সহায়তা করছে, আনসার এবং পুলিশ সদস্যরা দিন রাত পালাক্রমে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন।
শ্রীশ্রী কালী ও শ্রীশ্রী রাধা কৃষ্ণ জিউ বিগ্রহ মন্দির কমিটি সেক্রেটারি দিপঙ্কর কর্মকার রিপণ বলেন, পুরান ঢাকায় হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সকলের মধ্যে একটা চমৎকার ভ্রাতৃত্ব রয়েছে। এ ছাড়া আমাদের মণ্ডপগুলোতে ৬ জন করে পুলিশ ও আনসার পাহারা দিচ্ছেন। সেনাসদস্যরা পালাক্রমে মণ্ডপে এসে ঘুরে ঘুরে দেখছেন। এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা হয়নি। এ ছাড়া বিএনপি, জামায়াতের নেতারাও আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
কোতোয়ালি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. ফজলুল হক বলেন, ৭ অক্টোবর থেকেই প্রতিটি মণ্ডপে পুলিশ সদস্যদের দল পাঠানো হয়েছে। প্রতি দলে ৬ থেকে ৯ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া আরও এক সপ্তাহ আগে থেকেই পূজার স্থানগুলো নজরে রাখা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা খোঁজ খবর নিচ্ছেন। নিরাপত্তার বিষয়ে আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি।
এদিকে পুরান ঢাকার স্থানীয় জামায়াত ইসলামী ও বিএনপি এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির ও ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
এমএল/এনএফ