কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্নাকে ‘ষড়যন্ত্র করে মারা হয়েছে’ বলে দাবি করেছেন তার রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্নাকে ‘ষড়যন্ত্র করে মারা হয়েছে’ বলে দাবি করেছেন তার রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা।
শনিবার (৩১ আগস্ট) রাতে পান্নাকে বনানী কবরস্থানে দাফন শেষে এ দাবি করেন তার রাজনৈতিক অভিভাবক ও পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কাজী রুহিয়া বেগম হাসি।
কাজী রুহিয়া বেগম হাসি একইসঙ্গে মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। তার হাত ধরে আশির দশকে পিরোজপুর মহকুমা ছাত্রলীগের রাজনীতিতে হাতেখড়ি ছাত্রলীগের সাবেক শীর্ষনেতা পান্নার। তারপর মহকুমা ছাত্রলীগের পরে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের রাজনীতিতে এসে ১৯৯৪ সালের কাউন্সিলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হন পান্না।
কাজী রুহিয়া বেগম হাসি বলেন, ‘তার (পান্না) নামে মামলা নেই, চাঁদাবাজির বদনাম নেই। সে কোনোভাবে সুবিধাভোগীও না। সেজন্য মনে হচ্ছে তাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মারা হয়েছে। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট আসছে যে ঘাড় মটকে মারা হয়েছে।’
এ ঘটনায় মামলা করবেন কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা জিডি করেছি, পরবর্তী সময়ে মামলা করব।
তিনি আরও বলেন, ‘২৪ তারিখে ভোররাত আমার ছোট ছেলে বলে মামার খোঁজ পেয়েছি, শুনছি মারা গেছেন। পরে ছবি পেলাম একটা দেখলাম শ্বাসরোধ করার মতো চিহ্ন ঘাড়ে। পা’টা ভেঙে গেছে, কিছুটা রক্তও বের হয়েছে।’
পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও পান্নার আত্মীয় জসিমউদদীন খান বলেন, পান্না দলীয় পদও পায়নি, অর্থনৈতি সুবিধাও নেয়নি। দুই কোটি ডলার কাছে ছিল এমন কথা শোনা যাচ্ছে, দুই কোটি ডলার কত বস্তুা হয় ধারণা আছে, এটা নিয়ে কেউ পাহাড় পার হয়ে পালাতে পারে! তার সাথে কী হয়েছে আমরা এখনও ঠিক জানি না।
বনানী কবরস্থান মসজিদে জানাজা শেষে স্ত্রী আইরিন পারভীন বাঁধনের (সাবেক উপসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলের সাবেক ভিপি) কবরের পাশে দাফন করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মঈনুদ্দীন হাসান চৌধুরী, আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ শাহ আলম, পিরোজপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয় কাজী সাইফুদ্দিন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য শেখ জামাল।
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগের পর থেকেই তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। ২৪ আগস্ট রাতে সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালানোর সময় তিনি মারা যান।
জানা যায়, শিলংয়ের পাহাড়ে ওঠার সময় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। পরে ২৬ আগস্ট ভারতের অভ্যন্তরে অর্ধগলিত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে উমকিয়াং থানা পুলিশ।
তবে মেঘালয় পুলিশের পোস্টমর্টেম রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতের এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, পান্নাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।
এমএসআই/এমএ