নাটোরে চোর সন্দেহে উজির আলী নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরিবারের দাবি তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
নাটোরে চোর সন্দেহে উজির আলী নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরিবারের দাবি তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) ভোরে গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের বীরবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত উজির আলী সিংড়া উপজেলার চামারি ইউনিয়নের কালিনগর গ্রামের খোরশেদ মাদারের ছেলে।
লক্ষীপুর গ্রামের ইজিবাইকচালক সাইফুল ইসলাম জানান, সোমবার রাতে বাড়ির একটি কক্ষে ইজিবাইক চার্জ দিয়ে ঘুমাতে যান তিনি। রাত ৩টার দিকে চিৎকার শুনে সেখানে গিয়ে দেখেন উজির আলী গাড়ির মধ্যে বিদ্যুতায়িত হয়ে পড়ে আছেন। সেখান থেকে তুলে নিয়ে উত্তেজিত জনতা তাকে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে মারপিট শুরু করে। পরে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। পরে পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়। উজির আলীর কাছ থেকে উপস্থিত জনতা একটি প্লাস, ইলেকট্রিক শক দেওয়া যন্ত্র, বিছুটি পাতার গুড়া, টর্চ লাইট ও একটি ঘড়ি উদ্ধার করেছে বলেও দাবি করেন তিনি।
নিহত উজির আলীর বাবা খোরশেদ মাদার বলেন, আমার ছেলে কৃষিকাজ করত। রাতে ১০ হাজার টাকা নিয়ে বের হয়েছিল। তবে কোথায় যাবে বলেনি। টাকার জন্যই তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
উজির আলী স্ত্রী রতনা বেগম বলেন, তার স্বামী আগে চুরি করতেন। বোঝানোর পরে চুরি করা বাদ দেন। ঘরে ছোট একটি মেয়ে আর বৃদ্ধ বাবা-মা রয়েছে। স্বামীর রোজগারে সংসার চলত। সে যদি চুরি করেও থাকে, দেশে আইন আছে। কেন তাকে পুলিশে না দিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলল। তিনি স্বামী হত্যার বিচার চান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গুরুদাসপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজ্জ্বল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ইজিবাইক চুরির উদ্দেশ্যেই গত রাতে সাইফুলের বাড়িতে গিয়েছিলেন নিহত উজির আলী। সেখানে সে বৈদ্যুতিক শক খায় এবং স্থানীয় লোকজনও উজির আলীকে গণপিটুনি দিলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সহায়তায় পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। পরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
গোলাম রাব্বানী/এএমকে