আন্তর্জাতিক নদী দিবস উপলক্ষ্যে খুলনার ময়ূর নদ খনন ও সংরক্ষণের দাবিতে ‘মার্চ টু ময়ূর রিভার’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আন্তর্জাতিক নদী দিবস উপলক্ষ্যে খুলনার ময়ূর নদ খনন ও সংরক্ষণের দাবিতে ‘মার্চ টু ময়ূর রিভার’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) খুলনা শাখার উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
নগরীর গল্লামারীস্থ লায়নস স্কুল এন্ড কলেজের সামনে থেকে মার্চ শুরু হয়ে ময়ূর নদের পাড়ে এক সমাবেশের মধ্য দিয়ে কর্মসূচিটি শেষ হয়।
এবারের নদী দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল ‘নদী বাঁচলে পরিবেশ বাঁচবে, পরিবেশ বাঁচলে দেশ ও মানুষ বাঁচবে’ এ স্লোগান এবং ‘আন্তঃসীমান্ত নদীতে আমাদের অধিকার’।
এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের জাতীয় পরিষদ সদস্য ও খুলনা শাখার সমন্বয়কারী অ্যাড. মোহাম্মদ বাবুল হাওলাদার।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ নদী মাতৃক দেশ, নদীর পলিমাটি দিয়ে এ দেশটির জন্ম হয়েছে। নদী মায়ের মতোই দেশের ভূমি, প্রকৃতি, গাছপালা, পশুপাখি এক কথায় সবকিছুই প্রতিপালন করছে। অথচ দখল-দূষণসহ মনুষ্যসৃষ্ট বিভিন্ন কারণে আমাদের নদীগুলো নানামুখী সংকটের মধ্যে। সারা দেশের মতো খুলনাঞ্চলের নদীগুলোও মারাত্মক ঝুঁকির মুখে। অনেক নদ-নদী রুগ্ণ অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। খুলনা মহানগরীর পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ময়ূর নদটিও মৃতপ্রায়।
বক্তারা বলেন, প্রায় তিন যুগ ধরে এ নদীটি রক্ষায় বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম হয়ে আসছে। খুলনা সিটি করপোরেশন একাধিকবার প্রকল্প গ্রহণ করলেও তা অপরিকল্পিত হওয়ায় এবং দুর্নীতি ও স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতার অভাবে বিশেষ করে প্রকল্পগুলো বিজ্ঞানসম্মত না হওয়ায় রাষ্ট্র তথা জনগণের অর্থ লুটপাট এবং অপচয় হয়েছে। স্থানীয় ভৌগোলিক অবস্থাকে বিবেচনায় না নিয়ে, লোকায়ত জ্ঞানকে পাশ কাটিয়ে বিদেশি প্রেসক্রিপশনে অবাস্তবসম্মত প্রকল্প গ্রহণ অনেকাংশে দায়ী।
তারা আরও বলেন, ময়ূর নদকে রক্ষা করতে হলে এ নদসংযুক্ত হাতিয়া ও ক্ষেত্রখালীসহ প্রায় ২২ কিলোমিটার নদী খনন, সংযুক্ত খালসমূহ পুনরুদ্ধার, এ নদের উৎসস্থল বিল ডাকাতিয়াকে অবমুক্ত ও জলাবদ্ধতা নিরসন, এ নদের মিলিতস্থলে নির্মিত স্লুইজ গেট নিয়মিত পরিচালনা বা সম্ভাব্যতা যাচাইপূর্বক গেটগুলো স্থায়ীভাবে অবমুক্ত করা, খননকৃত মাটি-বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বাস্তবসম্মত ব্যবস্থা গ্রহণ করে একটি সমন্বিত পরিকল্পনার আওতায় স্বল্প-মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় এ অঞ্চলের পরিবেশ প্রকৃতির ভারসাম্য বিনষ্ট হবে।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ-উজ-জামান, খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা অনুষদের অধ্যাপক তুষার কান্তি রায়, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির খুলনা মহানগর সভাপতি শেখ মফিদুল ইসলাম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) খুলনা জেলা আহ্বায়ক জনার্দন দত্ত নান্টু, গণসংহতি আন্দোলনের খুলনা জেলা আহ্বায়ক মুনীর চৌধুরী সোহেল, পরিবেশ সুরক্ষা মঞ্চ, খুলনার সদস্য সচিব সুতপা বেদজ্ঞ, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), খুলনার বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান মুকুল, দক্ষিণ অঞ্চল উন্নয়ন পরিষদের মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার রোটা. রুহুল আমিন হাওলাদার, খুলনা উন্নয়ন আন্দোলনের সভাপতি শেখ মো. নাসির উদ্দিন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) খুলনা জেলা সদস্য সচিব কোহিনুর আক্তার কণা, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) খুলনা মহানগর সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান বাবু।
এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, মহানগর সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শিক্ষক বীর মুক্তিযোদ্ধা নিতাই পাল, সোনাডাঙ্গা থানা সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক সঞ্জয় সাহা, উন্নয়ন সংগঠক এম এ কাশেম, আমরা বৃহত্তর খুলনাবাসীর সাধারণ সম্পাদক রোটা. সরদার আবু তাহের, সোনালী ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত ডিজিএম এফ এম মনিরুজ্জামান, সিনিয়র আইনজীবী অ্যাড. মমিনুল ইসলাম, ফারমার্স ক্লাব খুলনার সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আলাউদ্দিন আল মাসুদ (লিটন), পরিবেশ ও উন্নয়ন সংগঠক অ্যাড. মেহেদী হাসান, খ ম শাহীন হোসেন, নাজমুল তারেক তুষার, অ্যাড. মোস্তফা বিলাল, সাবেক ছাত্রনেতা নিউটন ঢালী, শেখ মুজিবুর রহমান, বাসদের অ্যাড. সনজিত মন্ডল, শিক্ষানবিশ আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল লালি, হাফিজুর রহমান, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাকিরুন তাহা, আলাফাত হোসেনসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।
মোহাম্মদ মিলন/এএমকে