ধর্ম যার যার, নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার সবার : তারেক রহমান

ধর্ম যার যার, নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার সবার : তারেক রহমান

ধর্ম যার যার, নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার সবার মন্তব্য করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নির্ভয়ে দুর্গাপূজার উৎসব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

ধর্ম যার যার, নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার সবার মন্তব্য করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নির্ভয়ে দুর্গাপূজার উৎসব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সম্মানে এক শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে সবাইকে দুর্গাপূজার অগ্রিম শুভেচ্ছা জানিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এই বাংলাদেশ আপনার-আমার সবার। প্রতিটি নাগরিক সব ক্ষেত্রে সমান অধিকার ভোগ করবে, এটাই বিএনপির নীতি ও রাজনীতি। বিএনপি বিশ্বাস করে দলমত ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। ধর্ম যার যার, নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার সবার।

তারেক রহমান বলেন, আগামী মাসেই আপনাদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। এই উৎসব উপলক্ষ্যে আমি আপনাদের আগাম শুভেচ্ছা জানাই। আপনারা প্রত্যেকে উৎসব উদযাপন করুন নির্ভয়ে নিশ্চিন্তে নিরাপদে।

তিনি বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল মন্ত্র ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার। কে মুসলমান, কে হিন্দু, কে বৌদ্ধ, কে খ্রিষ্টান মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের এমন কোনো জিজ্ঞাসা কিন্তু ছিল না। আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশে সংখ্যালঘু কিংবা সংখ্যাগুরু এসব নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাঙালি-অবাঙালি বিশ্বাসী অবিশ্বাসী কিংবা সংস্কারবাদী প্রতিটি নাগরিকের একমাত্র পরিচয় আমরা বাংলাদেশি।

‘আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও সুষ্ঠু ভোটের বিকল্প নেই’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, গত ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনে যা হয়েছে আপনারা দেখেছেন। সারা দেশে আইনের শাসন ছিল না বলেই কিন্তু প্রধান বিচারপতি হয়েও এসকে সিনহাকে অবিচারের শিকার হতে হয়েছিল। পলাতক স্বৈরাচারের আমলে আদালত আর আয়নাঘর একাকার হয়ে গিয়েছিল। সুতরাং সংখ্যালঘু কিংবা সংখ্যাগুরু দলমত ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রত্যেকটা নাগরিকের অধিকার এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে রাষ্ট্র ও সমাজে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই।

তারেক রহমান বলেন, আমি মনে করি নিজ নিজ অধিকার রক্ষায় প্রত্যেকটি নাগরিকের ভোটের অধিকার একটি কার্যকরী শক্তিশালী অস্ত্র। যতদিন পর্যন্ত মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান অর্থাৎ দলমত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশের প্রত্যেকটি নাগরিক নির্ভয়ে নিশ্চিন্তে নিজের ভোট দিয়ে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করে জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করতে না পারবেন, ততদিন পর্যন্ত কোনো নাগরিকের নিরাপত্তা ও অধিকার সুরক্ষিত নয়।

‘চক্রান্ত রুখতে হবে’

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন,  বিএনপির রাজনীতি হচ্ছে সবাইকে নিয়ে রাজনীতি করা। একটা ভয়াবহ দানবের বিরুদ্ধে একটা অবিশ্বাস্য বিপ্লবের মধ্য দিয়ে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ১৫ বছর লড়াই করে বিজয় অর্জন করেছি। তারপরে এই বিপ্লবে নস্যাৎ করার জন্য পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র হয়েছে। এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। দুঃখজনকভাবে আপনাদেরকে এর ভেতরে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, যেটা আমরা সবসময় আপত্তি জানিয়েছি। ইন্ডিয়ার জার্নালিস্ট এসেছিল দলে দলে… সবাইকে একটা কথা আমরা বলেছি যে, এই পরিবর্তনের ফলে যেটুকু ঘটেছে সেটা সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক, কোনো সাম্প্রদায়িক নয়। আজ আবার একই চক্রান্ত শুরু হয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামে। এগুলোকে বিচ্ছিন্ন করে দেখবেন না। আজ সেখানে একইভাবে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। কিন্তু আমাদের অবশ্যই রুখে দাঁড়াতে হবে।

বিএনপির ধর্ম বিষয়ক সহ সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু এবং হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব তপন দে’র যৌথ পরিচালনায় শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার, ফেনীর কামাক্ষা চন্দ, খাগড়াছড়ির অজয় সেনগুপ্ত, সাভারের উত্তম ঘোষ, খুলনার সুজনা জলি, বরিশালের সঞ্জয় গুপ্ত, অবসরপ্রাপ্ত টিভি প্রযোজক মনোজ সেন গুপ্ত, গৌড় সিনহা প্রমুখ বক্তব্য দেন।

এএইচআর/এসএসএইচ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *