দিনাজপুরে আগাম আলু চাষে ব্যস্ত কৃষক

দিনাজপুরে আগাম আলু চাষে ব্যস্ত কৃষক

দিনাজপুরে ধান কাটার পর সেই জমিতে আগাম আলুর বীজ রোপণের কাজ করছেন ১৩টি উপজেলার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিরা। ভাদ্র, আশ্বিন ও কার্তিক মাসে স্বল্পমেয়াদী আগাম আউশ, আমন ধান কাটা ও মাড়াই শেষে সেই জমি প্রস্তুত করে এখন আলু রোপণের পালা।

দিনাজপুরে ধান কাটার পর সেই জমিতে আগাম আলুর বীজ রোপণের কাজ করছেন ১৩টি উপজেলার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিরা। ভাদ্র, আশ্বিন ও কার্তিক মাসে স্বল্পমেয়াদী আগাম আউশ, আমন ধান কাটা ও মাড়াই শেষে সেই জমি প্রস্তুত করে এখন আলু রোপণের পালা।

হিমাগার থেকে বীজ সংগ্রহ, জমি প্রস্তুত, সার প্রয়োগসহ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। কিন্তু আলুর বীজ সার কীটনাশক ও মজুরের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবার আগাম আলু চাষে উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে বলে জানিয়েছেন আলু চাষিরা।

জেলার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন প্রকার জৈব ও রাসায়নিক সার দিয়ে আলু চাষের জন্য জমি তৈরি করছেন কৃষক। আবার কেউ জমি তৈরি করে বীজ আলু জমিতে লাইন ধরে রোপণ করছেন। এক একর জমিতে ২৫ থেকে ২৮ মণ বীজ আলুর প্রয়োজন হয়। একর প্রতি ১৪০ থেকে ১৫০ মন আলুর ফলন হয়। বীজ লাগানোর ৫০ থেকে ৫৫ দিনের মধ্যেই ফসল ঘরে তোলেন কৃষক। অগ্রহায়ণ মাসে আলু চাষের মৌসুম হলেও বেশি দাম পাওয়ার আশায় আশ্বিন মাস থেকে আগাম আলু চাষ করছেন কৃষক।

চিরিরবন্দর উপজেলার আউলিয়াপুকুর গ্রামের কৃষক হামিদুল ইসলাম বলেন, আগাম জাতের এই আলু ৫৫ থেকে ৬০ দিনে তুলে বাজারজাত করা যায়। বাজারে আগাম জাতের আলুর চাহিদা এবং দাম বেশি পাওয়া যায়, লাভও ভালো হয়। এবার দুই একর জমিতে আগাম জাতের আলু লাগিয়েছি। গতবারের তুলনায় খরচটা বাড়ছে। এবার একর প্রতি প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার থেকে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা উৎপাদন খরচ হবে। একর প্রতি ভালো ফলন হলে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার আলু বিক্রি করতে পারব বলে আশা করছি। অন্য ফসলের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ব্যাপক অবদান রাখে আগাম আলু। তাই আগাম আলু চাষ করি।

ফুলবাড়ী উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের গঙ্গাপ্রসাদ গ্রামের আলুচাষি খলিল বলেন, গত বছর ধান কাটার পর এক একর জমিতে আলু রোপণ করেছিলাম। সেই আলু বিক্রি করে দ্বিগুণ লাভ হয়েছে। এবারও সমপরিমাণ জমিতে ক্যারেজ জাতের আলু রোপণ করেছি। এতে খরচ গতবারের তুলনায় প্রায় ৫০ হাজার টাকা বেশি হয়েছে। এবার মজুরি, আলুর বীজের দাম, সরকারি দামের থেকেও খুচরা বাজরে সার কীটনাশকের দাম বেশি। আলু ফলন ও দাম ভালো হলে এই আলু বিক্রি করে লাভবান হব বলে আশা করছি।

খানসামা উপজেলার গোয়ালডিহি গ্রামের হবিবর ইসলাম বলেন, আগাম আলু লাগানো নিয়ে এক প্রকার প্রতিযোগিতা হয়। যার আলু যত আগে উঠবে, সেই কৃষক তত বেশি ভালো দামে বিক্রি করবে। মৌসুমের শুরুতে বাজারে নতুন আলুর চাহিদা থাকে প্রচুর। ভোক্তার কাছে আগাম দিতে পারলে চড়া বাজার মূল্য পেয়ে দ্বিগুণ লাভবান হওয়া যায়। তবে গত বছরের তুলনায় এবার সার বীজের দাম বেড়েছে তাই উৎপাদন খরচও বেড়েছে।আবহওয়া ভালো থাকলে আশা করছি আগাম আলুর ফলন ভালো হবে।

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নুরুজ্জামান বলেন, দিনাজপুর জেলায় আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। খসড়া তালিকা অনুয়ায়ী দিনাজপুরে ৪৭ হাজার ২৩৬ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হবে। এর মধ্যে আগাম জাতের আলু চাষ হবে ১১ হাজার হেক্টর জমিতে। এ পর্যন্ত প্রায় ৭ হাজার হেক্টর জমিতে আগাম জাতের আলু বীজ বোপণ হয়ে গেছে। কয়েকদিনে মধ্যে আগাম আলু বীজ বোপন শেষ হয়ে যাবে। সার ও বীজ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে এরকম খবর বা অভিযোগ আমি পাইনি। যদি বেশি দামে সার বিক্রি হয়ে থাকে তাহলে তদন্ত করে ডিলারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে।

সোহাগ গাজী/আরকে

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *