চাকরিতে যোগদান, পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্রসহ নাগরিক সেবার ১৯টি ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রয়োজন হয়। সে কারণে এখন পদে পদে ব্যবহার হচ্ছে এটি। গত এক বছরের বেশি সময় ধরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) থেকে এ গুরুত্বপূর্ণ সনদ হাতে পেয়েও কেউ কাজে লাগাতে পারছিল না। এটি শুধু শিশুর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির কাজে ব্যবহার করা যেত। তবে পাসপোর্ট করানো যেত না দক্ষিণ সিটির এই জন্ম সনদ দিয়ে।
চাকরিতে যোগদান, পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্রসহ নাগরিক সেবার ১৯টি ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রয়োজন হয়। সে কারণে এখন পদে পদে ব্যবহার হচ্ছে এটি। গত এক বছরের বেশি সময় ধরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) থেকে এ গুরুত্বপূর্ণ সনদ হাতে পেয়েও কেউ কাজে লাগাতে পারছিল না। এটি শুধু শিশুর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির কাজে ব্যবহার করা যেত। তবে পাসপোর্ট করানো যেত না দক্ষিণ সিটির এই জন্ম সনদ দিয়ে।
এই অবস্থায় গতকাল বুধবার স্থানীয় সরকার বিভাগের এক অফিস আদেশে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কার্যক্রম কেন্দ্রীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সার্ভারের মাধ্যমে পরিচালনা করতে বলা হয়েছে। ফলে দক্ষিণ সিটির জন্ম নিবন্ধনের মাধ্যমে শিশুদের পাসপোর্ট করানোর জটিলতা থাকছে না। এখন থেকে স্বাভাবিকভাবে জন্ম নিবন্ধন করানো যাবে এবং পাসপোর্ট করতেও কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না।
দক্ষিণ সিটির আওতায় বিভিন্ন আঞ্চলিক কার্যালয়ে করা জন্ম নিবন্ধনের তথ্য এতদিন কেন্দ্রীয় সার্ভার বা সফটওয়্যারে জমা না হওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ কাজে তা ব্যবহার করা যেত না।
জানা গেছে, গত বছরের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত সাড়ে ১০ মাসে দক্ষিণ সিটি থেকে ৭৮ হাজার ৯৫৬টি জন্ম নিবন্ধন এবং ১ হাজার ৪৭১টি মৃত্যু নিবন্ধন হয়েছে। এর আগের চার মাস জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের ফি নিজস্ব তহবিলে জমা দেওয়ার দাবিতে নিবন্ধনের কাজ বন্ধ রেখেছিল দক্ষিণ সিটি।
গত বছরের জুন-জুলাই মাসের দিকে নিবন্ধনের ফির অর্থ নিজস্ব তহবিলে জমা হওয়ার দাবিতে নিবন্ধন বন্ধ রাখে ডিএসসিসি। এরপর ৪ অক্টোবর থেকে নিজস্ব সার্ভারে নিবন্ধনের কাজ শুরু করে ডিএসসিসি। বিষয়টিকে আইনবহির্ভূত জানিয়ে গত বছরের ১৯ অক্টোবর স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবের কাছে চিঠি পাঠান তৎকালীন রেজিস্ট্রার জেনারেল।
ডিএসসিসির নিজস্ব সার্ভারের মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন সনদ দিলেও সেই জন্ম সনদ দিয়ে শুধু স্কুলে ভর্তি করানো যাচ্ছিল শিশুদের। বাকি কোনো কাজ করা যেত না। ডিএসসিসির নিজস্ব সার্ভারের সঙ্গে অন্যান্য সেবাকেন্দ্রিক সার্ভারের সংযোগ না থাকায় এ ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছিল মানুষকে। দক্ষিণ সিটি মূলত জন্মনিবন্ধন ফি নিজেদের রাজস্ব বিভাগে যুক্ত করতে চেয়েছিল। এজন্য তারা নিজস্ব সার্ভার তৈরি করে কাজ শুরু করে। কিন্তু সেই সার্ভার জাতীয় পরিচয় পত্র, পাসপোর্ট অধিদপ্তরসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সার্ভারের সঙ্গে যুক্ত ছিল না। এ কারণেই পাসপোর্ট করাতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হতো।
এই অবস্থায় সবশেষ গতকাল ১৪ আগস্ট স্থানীয় সরকার বিভাগ অফিস আদেশ জারি করলে দক্ষিণ সিটির নিবন্ধনসংক্রান্ত তথ্য কেন্দ্রীয় সার্ভারে নেওয়া শুরু হয়। যার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান হয়েছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, এ বিষয়ে আমরা চিঠি পেয়েছি। চিঠির নির্দেশনা অনুযায়ী আঞ্চলিক কার্যালয়গুলো কাজ করা শুরু করেছে। এতদিন যারা জন্ম নিবন্ধন করেছে নিবন্ধনগুলোর তথ্য কেন্দ্রীয় সার্ভারে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। ফলে এখন থেকে জন্ম নিবন্ধন নিয়ে পাসপোর্ট কেন্দ্রিক আর জটিলতা থাকবে না।
উল্লেখ্য, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন ২০০৪ অনুযায়ী, ২০০৯ সাল থেকে স্কুলে ভর্তি, জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি, পাসপোর্ট তৈরিসহ মোট ১৮টি সেবা পেতে জাতীয় জন্মসনদ প্রয়োজন। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- সরকারি বেসরকারি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ভোটার তালিকা, জমি রেজিস্ট্রেশন, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, আমদানি-রপ্তানি, লাইসেন্স ইস্যু, গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎ, টেলিফোন সংযোগ গ্রহণ, বাড়ির নকশার অনুমোদন, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন, ট্রেড লাইসেন্স ইস্যুসহ নানান কাজে ব্যবহৃত হয় জন্ম সনদ।
এএসএস/এমএ