ত্বকী হত্যার বিচার বন্ধ রাখার জন্য শেখ হাসিনা দায়ী: রফিউর রাব্বি

ত্বকী হত্যার বিচার বন্ধ রাখার জন্য শেখ হাসিনা দায়ী: রফিউর রাব্বি

মেধাবী কিশোর তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার বিচার বন্ধ রাখার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দায়ী করে তাকেও বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন নিহত ত্বকীর বাবা ও সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি।

মেধাবী কিশোর তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার বিচার বন্ধ রাখার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দায়ী করে তাকেও বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন নিহত ত্বকীর বাবা ও সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি।

শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে শহরের চাষাঢ়ায় শহীদ মিনারে ত্বকী হত্যার সাড়ে ১১ বছর উপলক্ষ্যে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ দাবি জানান।

রফিউর রাব্বি বলেন, ‘ত্বকী হত্যার সঙ্গে জড়িত শামীম ওসমান বাহিনী ও তাদের মাফিয়া চক্রের বিচারের দাবিতে আমরা দাঁড়িয়েছি। ত্বকী হত্যার পূর্বে এক যুগেরও বেশি সময় থেকে তাদের দুর্বৃত্তায়ন, লুটপাট, হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে আমরা কথা বলেছি। নারায়ণগঞ্জে এই ওসমান পরিবারের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য কোনো বিরোধী দল ছিল না। কিন্তু আমরা দীর্ঘদিন ধরে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলে আসছি।’

‘ত্বকী হত্যাকাণ্ড কেন এবং কারা করেছে তা সারা দেশের মানুষ জানে। হত্যা করে মুখ বন্ধ রাখার প্রক্রিয়া তাদের দীর্ঘদিনের। নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করে তারা নারায়ণগঞ্জবাসীকে বুঝাতে চেয়েছে যে তাদের বিরুদ্ধে যাওয়ার পরিণতি কী হতে পারে। আমরা বারবার বলেছি, সরকার, প্রশাসন, পুলিশ যদি তাদের পেছনে না থাকে তাহলে নারায়ণগঞ্জের মানুষ লাঠি দিয়ে পিটিয়ে তাদের রাজপথে হত্যা করবে, হয়েছেও তাই। তাদের পেছন থেকে যখন সরকার ও প্রশাসন সরেছে তখন তারা পালিয়েছে।’

ত্বকী ছাড়াও ওসমান পরিবার আশিক, চঞ্চল, ভুলু, মিঠুসহ অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেছে অভিযোগ করে রাব্বি বলেন, ‘জামতলায় মিঠুকে কুপিয়ে হত্যা করেছে, আশিককে তাদের টর্চার সেলে হত্যা করেছে। ত্বকীকে এই টর্চার সেলে নিয়ে গজারির লাঠি দিয়ে ১১ জন মিলে পিটিয়ে অজ্ঞান করেছে। তারপর তার বুকের ওপর উঠে গলা টিপে হত্যা করেছে। শরীরের কয়েকটি অঙ্গ তারা থেতলে, চোখ উপড়ে নিয়েছে। এই নৃশংসতার মধ্য দিয়ে তারা কতটা ভয়াবহ তা জানান দিয়েছে।’

‘এসব কথা জেনেও শেখ হাসিনা এই খুনি, জল্লাদদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে রক্ষা করেছে। ত্বকীকে হত্যার পরেও এই ওসমান পরিবারকে দেখে রাখার কথা বলেছিলেন হাসিনা। জল্লাদদের পাহারাদার যে হতে পারে, সে নিজে কতটা নৃশংস ও ভয়াবহ। শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে প্রাণরক্ষা করেছে। কিন্তু ত্বকী হত্যার বিচার বন্ধ রাখার জন্য শেখ হাসিনাকে বিচারের আওতায় আনতে হবে’, যোগ করেন ত্বকীর বাবা।

তিনি আরও বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে চাই। আমাদের ধ্বংস করা বিচারব্যবস্থা ফিরে আসবে। গণতন্ত্র মুক্তি পাক, নির্বাচন কমিশন স্বাধীন হোক; এইটা আমাদের আকাঙ্ক্ষা।’

তিনি ত্বকী, সাগর-রুনি, তনুসহ সব হত্যাকাণ্ডের বিচার দ্রুত করার দাবি জানান।

সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চ আয়োজিত এ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন শিশু সংগঠন খেলাঘর আসরের সাবেক সভাপতি রথীন চক্রবর্তী, সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান মাসুম, সদস্য সচিব কবি ও সাংবাদিক হালিম আজাদ, সিপিবির জেলা সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন, বাসদের সমন্বয়কারী নিখিল দাস, ন্যাপের জেলা সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন প্রমুখ।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ বিকেলে বঙ্গবন্ধু সড়ক থেকে তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীকে অপহরণ করে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। একদিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যায় মেলে ত্বকীর লাশ। ত্বকী হত্যার সঙ্গে ওসমান পরিবারের সদস্যরা জড়িত আছেন বলে শুরু থেকে অভিযোগ করে আসছে তার পরিবার। তবে দীর্ঘসময় পেরিয়ে গেলেও এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত শেষ করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিতে পারেনি তদন্তকারী সংস্থা র‌্যাব।

মেহেদী হাসান সৈকত/এসএসএইচ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *