ঢাবিতে সব ধরনের রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত

ঢাবিতে সব ধরনের রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের রাজনীতি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের রাজনীতি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে উপাচার্য লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। 

সভা শেষ হওয়ার পর এক সিন্ডিকেট সদস্য ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

ওই সিন্ডিকেট সদস্য বলেন, আজ জরুরি সিন্ডিকেট মিটিংয়ে ক্যাম্পাসের ভেতরে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ছাত্র-শিক্ষক- কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের রাজনীতি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

কেউ ক্যাম্পাসের বাইরে রাজনীতি করতে পারবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।

জরুরি এ সিন্ডিকেট সভা সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হয়ে রাত ৯টায় শেষ হয়। আজ সিন্ডিকেটে শুধু ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধের ব্যাপারেই আলোচনা করা হয় বলে জানা গেছে।

জানা যায়, গতকাল (বুধবার) রাত ৮টার দিকে চোর সন্দেহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের অতিথিকক্ষে আটকে রেখে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে একদল শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার রাতে কয়েক ঘণ্টা ধরে দফায় দফায় মারধরে ওই যুবকের মৃত্যু হয়। গতকাল দিবাগত রাত ১২টার দিকে কয়েকজন শিক্ষার্থী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। রাত ২টার দিকে তার মৃত্যুর খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

নিহত ব্যক্তির নাম তোফাজ্জল। তার বাড়ি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠাল তলি ইউনিয়নে। তার বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই। জানা যায়, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ছিলেন।

একটি ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, ফজলুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপসম্পাদক জালাল আহমেদসহ হলের ৮-১০ জন শিক্ষার্থী তোফাজ্জলকে মারধর করছেন।

ভোর সাড়ে ৪টায় প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজে যান। সেখান থেকে পরে হল প্রাঙ্গণে এসে হলের পুরাতন ভবনের গেস্টরুম ও এক্সেটেনশনের গেস্টরুম ঘুরে দেখেন। এই দুটি গেস্টরুমেই তোফাজ্জলকে মারা হয়। এসময় তিনি দুটি রুম সিলগালা করে দেন।

এদিকে এ ঘটনায় মোট ৬ শিক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় তাদের আটক করে শাহবাগ থানা পুলিশ। তারা হলেন- পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী জালাল আহমেদ, মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সুমন, পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মুত্তাকীন সাকিন, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের আল হোসেন সাজ্জাদ,  গণিত বিভাগের আহসান উল্লাহ ও ওয়াজিবুল আলম। তারা সবাই এফএইচ হলের আবাসিক ছাত্র। তাদের মধ্যে জালাল মিয়া হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপসম্পাদক। কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে তিনি ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগে করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে সক্রিয় ছিলেন। অপর ৫ জনের রাজনৈতিক পরিচয় জানা যায়নি।

কেএইচ/এসএম

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *