সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব ও আলোচিত বিএনপি নেতা হারিচ চৌধুরীর মরদেহের পরিচয় নিশ্চিতের জন্য হাইকোর্টের নির্দেশে উত্তোলন করা হচ্ছে। এরপর নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব ও আলোচিত বিএনপি নেতা হারিচ চৌধুরীর মরদেহের পরিচয় নিশ্চিতের জন্য হাইকোর্টের নির্দেশে উত্তোলন করা হচ্ছে। এরপর নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে সাভার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস.এম রাসেল ইসলাম নূরের নেতৃত্বে সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের জামিয়া খাতামুন্নাবিয়্যিন মাদরাসা থেকে তার মরদেহের উত্তোলন কাজ শুরু হয়।
পুলিশ জানায়, হারিচ চৌধুরীর মেয়ে ব্যারিস্টার সামিরা তানজিনের করা এক রিট আবেদনের শুনানি হয়। এ সময় বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মুহম্মদ মাহবুব-উল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ মরদেহ উত্তোলন করার আদেশ দেন। সেই আদেশ মোতাবেক সকাল ১০টার দিকে মরদেহ উদ্ধার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়।
জামিয়া খাতামুন্নাবিয়্যিন মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আশিকুর রহমান কাসিমি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ২০২১ সালে ৩ সেপ্টেম্বর মাহমুদুর রহমান নামে এক ব্যক্তিকে মাদরাসায় দাফন করা হয়। সে সময় তার ভোটার আইডিকার্ডের ফটোকপি মাহমুদুর রহমান নামেই দিয়েছিল। এরপরে পত্রিকায় হঠাৎ একটি খবরে জানতে পারি সে হারিচ চৌধুরী। পরে আজকে তার মরদেহের পরিচয় নিশ্চিতের জন্য মরদেহ উত্তোলন করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
হারিচ চৌধুরীর মেয়ে ব্যারিস্টার সামিরা তানজিন বলেন, আমি খুব ভয়-ভীতির মধ্যে ছিলাম। আমি আমার পরিবারের সহায়তা পাই নাই। কারণ ১৫ বছর আমার পরিবারের ওপর অনেক অত্যাচার চলেছে এবং আরও অত্যাচারের সম্ভাবনা ছিল। সে সময় আমি বিদেশে ছিলাম। দাফন করার জন্য আমি পাগলের মতো একটি জায়গা খুঁজতে থাকি। এ সময় একটা জায়গা ম্যানেজ করার জন্য অনেক কান্নাকাটি করি। আমার পরিবারের পক্ষ থেকে অনেকেই বলেছিলেন, আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামে দাফনের জন্য। কিন্তু আমি রাজি হইনি। পরে আমার মধ্যে জিদ চেপে যায় এবং আমার নানুর জন্য বড় মামা এই মাদরাসাতে জমি নিয়েছিলেন। সেখানেই ২০২১ সালে ৩ সেপ্টেম্বর দাফন করা হয়।
ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আহম্মদ মুঈদ বলেন, হারিচ চৌধুরীর মেয়ের করা এক রিটে প্রফেসর মাহমুদুর রহমান নামে দাফন করা সেই ব্যক্তিই হারিচ চৌধুরী, তার পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য ডিএনএ টেস্ট করা হবে। সে জন্যই মরদেহ উদ্ধার করে ল্যাবে পাঠানো হবে বলে জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।
সাভার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস.এম রাসেল ইসলাম নূর ঢাকা পোস্টকে বলেন, হারিচ চৌধুরীর মেয়ের করা একটি রিটে হাইকোর্টের নির্দেশে মরদেহ উদ্ধার করা হচ্ছে। এরপরে পরিচয় নিশ্চিতের জন্য ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। হারিচ চৌধুরীর মরদেহের পরিচয় নিশ্চিত হলে তাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা জানিয়ে দাফন করা হবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে ৩ সেপ্টেম্বর সাভারের বিরুলিয়ার কমলাপুর এলাকার জামিয়া খাতামুন্নাবিয়্যিন মাদরাসায় মাহমুদুর রহমান নামে এক ব্যক্তিকে দাফন করা হয়। পরে হারিচ চৌধুরীর মেয়ে দাবি করেন এই মরদেহ তার বাবার।
লোটন আচার্য্য/এএমকে