ডালিমের খোসার চা খেলে কী হয়?

ডালিমের খোসার চা খেলে কী হয়?

পুরনো কাশি ও কফ নিরাময় করে

ডালিম খেতে বেশ সুস্বাদু। সেইসঙ্গে এটি অনেক উপকারীও। এখানেই শেষ নয়, ডালিমের খোসাও অনেক সুবিধা দেয়। ডালিম চা, বিশেষ করে এই ফলের খোসা ব্যবহার করে প্রস্তুত করা হয়; এটি পলিফেনল, ফ্ল্যাভোনয়েড, অ্যালকালয়েড এবং ট্রাইটারপেনেসের সমৃদ্ধ সামগ্রীর জন্য পরিচিত এবং এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, প্রদাহরোধী এবং মূত্রবর্ধক প্রভাব রয়েছে। এই চা গলা ব্যাথা, মাড়ির প্রদাহ, ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ মোকাবিলায় উপকারী।

ডালিমের খোসা পেট ফাঁপা, প্রদাহ, ডায়রিয়া, আমাশয় এবং রক্তপাত কমাতে সাহায্য করে, হজমের উন্নতি করে এবং লিভারকে সুস্থ রাখে। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর এবং খাদ্য ও ফার্মাসিউটিক্যাল প্রিজারভেটিভ হিসেবে ভালো কাজ করে। স্বাস্থ্য প্রতিকার হিসাবে এই চা খাওয়ার কিছু উপকারিতা চলুন জেনে নেওয়া যাক-

পুরনো কাশি ও কফ নিরাময় করে

কাশি এবং গলা ব্যথা উপশমের জন্য বিশেষভাবে কার্যকর হতে পারে ডালিমের খোসার চা। পুরনো কাশি উপশম করতে এবং গলা থেকে কফ বের করে দিতে কাজ করে। গলা ব্যথা এবং কাশি উপশম করতে ডালিমের খোসার চা গার্গল হিসাবেও ব্যবহার করতে পারেন।

কোলেস্টেরল কমায়

ডালিম চা উচ্চ ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমাতে, এইচডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা উন্নত করতে এবং আর্থ্রাইটিস ও গাউটের মতো সমস্যা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। চায়ের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য কার্ডিওভাসকুলার রোগ প্রতিরোধ করতে এবং ক্যান্সার প্রতিরোধেও সহায়তা করে।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করে

গবেষণায় দেখা গেছে যে, ডালিম চা স্তন, প্রোস্টেট এবং অন্ত্রের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞরা এই দাবিগুলোকে প্রমাণ করার জন্য আরও গবেষণার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন। যদিও অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে, তবে ডালিমের চা ডাক্তারের নির্দেশিত চিকিৎসার বিকল্প নয়।

ব্রণমুক্ত পরিষ্কার ত্বক

ব্রণের মতো ত্বকের সমস্যার জন্য ডালিমের খোসার অ্যান্টিভাইরাল, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য বেশ কার্যকরী। এটি ফুসকুড়ি, পিম্পল এবং ব্রণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে। ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে ডালিমের খোসা ফেসপ্যাক বা স্ক্রাব হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে। ত্বকের ডিটক্সিফিকেশন আরেকটি সুবিধা। ডালিমের খোসায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে। ডালিমের খোসা খুশকি এবং চুল পড়া রোধেও সাহায্য করতে পারে। গুঁড়া খোসা  তেলের সঙ্গে মিশিয়ে চুলে ব্যবহার করলে এই সমস্যাগুলো কার্যকরভাবে মোকাবিলা করা যায়।

ব্লাড সুগার কমায়

ডালিমের খোসার চা ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকির কারণ কমাতে পারে। ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথের একটি গবেষণার রেফারেন্স ইঙ্গিত দেয় যে, ১,০০০ মিলিগ্রাম ডালিমের খোসার নির্যাস উল্লেখযোগ্য অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি প্রভাব ফেলে, যা অতিরিক্ত ওজন বা স্থূল ব্যক্তিদের রক্তে শর্করা এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

ডালিম চা কীভাবে তৈরি করবেন?

এটি তৈরি করা সহজ। এক কাপ পানিতে ১০ গ্রাম ডালিমের খোসা সেদ্ধ করুন। পাঁচ মিনিটের জন্য ফুটতে দিন, তারপর আরও পাঁচ মিনিটের জন্য ঢেকে রাখুন। দিনে দুই থেকে তিনবার চা পান করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

লক্ষ্য করুন

উপকারিতা সত্ত্বেও এই চা অতিরিক্ত খেলে বমি বমি ভাব, বমি বা পেট জ্বালার মতো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে। গুরুতর এলার্জি প্রতিক্রিয়াও ঘটতে পারে, সেক্ষেত্রে অবিলম্বে চিকিৎসা ও যত্নের প্রয়োজন। দুই বছরের কম বয়সী শিশু, গর্ভবতী বা স্তন্যপান করানো মহিলা, পেটের আলসারে আক্রান্ত ব্যক্তি এবং ডালিমের প্রতি অ্যালার্জি রয়েছে এমন কারও এই চা পান করা যাবে না।

এইচএন

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *