কোম্পানির সাত লাখ টাকা চুরির অপবাদ ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করেন অ্যান্থনি আকাশ গোমেজ নামের যুবক। এ ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ তুলেছেন স্বজনরা। তাই সুষ্ঠু তদন্ত করে কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন তারা।
কোম্পানির সাত লাখ টাকা চুরির অপবাদ ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করেন অ্যান্থনি আকাশ গোমেজ নামের যুবক। এ ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ তুলেছেন স্বজনরা। তাই সুষ্ঠু তদন্ত করে কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন তারা।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সম্মিলিত খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ব্যান্যারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে আকাশের পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন এবং বন্ধুবান্ধবরা অংশ নেন।
তারা জানান, টাস গ্রুপ অব কোম্পানির এসএমএসএ এক্সপ্রেসে কর্মরত ছিলেন আকাশ। ওই প্রতিষ্ঠানের উত্তরা শাখায় কর্মরত অবস্থায় গত জানুয়ারি মাসে তার প্রমোশন (পদোন্নতি) হয়। পরে গত ২৫ আগস্ট তাকে উত্তরা শাখা থেকে বদলি করে বনানী শাখার অর্থ বিভাগে নিয়ে আসা হয়। সেখানেই গত ১১ সেপ্টেম্বর হঠাৎ করে জরুরি সভা আহ্বান করে আকাশকে অফিসের সাত লাখ টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে হেনস্তা করা হয়। ওই সময় তার কাছে থাকা ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ, অফিস পরিচয় পত্র এবং দরকারি ডকুমেন্ট জোর করে জব্দ করা হয়। এমনকি তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো সুযোগ না দিয়ে অফিস থেকে বের করে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় আকাশ অত্যন্ত বিমর্ষ হয়ে পড়েন। সবশেষ কোনো উপায় অন্তর না দেখে ১২ সেপ্টেম্বর চিরকুট লিখে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।
মানববন্ধনে উপস্থিত রঞ্জন গোমেজ বলেন, আকাশের সাথে ১১ তারিখের জরুরি সভায় ঠিক কী ধরনের ঘটনা ঘটানো হয়েছিল, তা আমরা তদন্ত সাপেক্ষে জানতে চাই। তাকে প্রচন্ড মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। যার দরুন শেষপর্যন্ত আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। যদি আকাশ অপরাধ করে থাকে তাহলে আইনের আশ্রয় তারা নিতে পারত। কিন্তু নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়ে দোষ চাপিয়ে দিয়ে অপরাধ করেছে। তাই সংশ্লিষ্ট সবাইকে আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগে আটক করে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাতে হবে।
মানববন্ধনে উপস্থিত আকাশের প্রতিবেশী উৎস গোমেজ বলেন, আকাশ ছোটবেলায় মা-বাবাকে হারিয়েছেন। পরে একমাত্র ছোট বোনসহ তার ঠাঁই হয়েছিল মামা, ফুফু আর খালাদের বাড়িতে। সেখানেই তিনি বড় হয়েছেন। এরপর এই বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি শুরু করেন। সেখানে তাকে নির্মমভাবে জীবনের রীতি টানতে হয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত দোষীদের বিচার না করা হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। ষড়যন্ত্রকারীদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দিতে হবে। ক্ষতিপূরণের পরিবর্তে আমরা অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
আরএইচটি/কেএ