প্রথম আলো
প্রতিদিন জাতীয় দৈনিকে অসংখ্য খবর প্রকাশিত হয়। সেইসব খবর থেকে আলোচিত কিছু খবরের সংকলন করা হলো।
৭২ ঘণ্টা অবরোধের পর গতকাল মঙ্গলবার থেকে খাগড়াছড়িতে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে। দীঘিনালাসহ বিভিন্ন জায়গায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি দেখা গেছে। তবে এর মধ্যে গতকাল দীঘিনালার বোয়ালখালী মাছবাজার এলাকায় সাজেক থেকে ফেরার পথে তিন পর্যটককে অপহরণচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার পর সাজেকে আগামী তিন দিন পর্যটকদের যাওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এর পাশাপাশি অন্যান্য খবরগুলো দেখে আসি—
প্রথম আলো
লারমা স্কয়ারজুড়ে পোড়াচিহ্ন
১৮ সেপ্টেম্বর মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে মো. মামুন নামের এক বাঙালি যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। পরদিন দীঘিনালায় পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে সহিংসতা হয়। ওই দিন দীঘিনালায় পিটুনিতে ধনঞ্জয় চাকমা নামে এক ব্যক্তি মারা যান। রাতে সদরে গোলাগুলি হয়। এ সময় দুজন পাহাড়ি যুবক মারা যান।
গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, দোকানিরা তাঁদের পোড়া ভিটায় ফিরছেন। পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন। দীঘিনালা উপজেলা প্রশাসনের হিসাবে ৮৬টি দোকান পুড়েছে। এর মধ্যে ৫৫টি পাহাড়িদের; বাকিগুলো বাঙালিদের। এর বাইরে ২৬টি দোকান ভাঙচুর করা হয়।
কালবেলা
‘জিনের বাদশা’ আবু বকর অবৈধ সম্পদেও বাদশা
বিলুপ্ত দুর্নীতি দমন ব্যুরোতে স্টেনোগ্রাফার হিসেবে চাকরিজীবন শুরু আবু বকর সিদ্দিকের। পর্যায়ক্রমে হন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক। তার এই পদোন্নতির পেছনেও রয়েছে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা। সহকর্মীদের কাছে আবু বকরের পরিচিতি ‘জিনের বাদশা’ নামে।
ঘুষের বিনিময়ে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দায়মুক্তি দিতেন তিনি। তাদের কাছ থেকে ঘুষ নিতেন ডলার ও ইউরোতে। গত জানুয়ারিতে অবসরে যাওয়া এই ব্যক্তি গড়ে তুলেছেন অবৈধ সম্পদের পাহাড়। রাজধানীতে তার রয়েছে কয়েকটি বাড়ি, ফ্ল্যাট ও প্লট। ব্যাংকেও রয়েছে বিপুল অঙ্কের টাকা।
কালের কণ্ঠ
গোয়েন্দা নজরে নতুন ডিসিরা
আরো জটিল হচ্ছে ডিসি নিয়োগ বিতর্ক। এ নিয়োগের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের প্রশ্নও এখন সামনে এসেছে। এরই মধ্যে এক কর্মকর্তার কক্ষ থেকে তিন কোটি টাকার ক্যাশ চেকসহ চিরকুট পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে তথ্য দিতে বলা হয়েছে। এদিকে নিয়োগপ্রক্রিয়া থেকে একের পর এক ঘটনার জন্ম হওয়ার প্রেক্ষাপটে সারা দেশের নতুন ডিসিরা এখন গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছেন।
কালবেলা
গণঅভ্যুত্থানে নিহত ৭০৮ জনের তালিকা প্রকাশ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্র করে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নিহতদের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। তালিকায় প্রাথমিকভাবে ৭০৮ জনের পরিচয় জমা হয়েছে, পরে আরও বাড়তে পারে বলে জানা গেছে।
গতকাল মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব উম্মে হাবিবা স্বাক্ষরিত গণবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সমকাল
‘বাংলাদেশ সরকারকে পূর্ণ সমর্থন বাইডেনের’
বাংলাদেশ সরকারকে ‘পূর্ণ সমর্থন’ জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের সফরে থাকা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, মঙ্গলবার জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস বিগত সরকারের আমলে সকল ধরনের নিপীড়নের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সাহসী ভূমিকা ও বাংলাদেশ পুনর্গঠনে তাদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা জো বাইডেনকে জানান। অধ্যাপক ইউনূস জোর দিয়ে বলেন, দেশ পুনর্গঠনে তার সরকারকে অবশ্যই সফল হতে হবে। এ সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন যেকোনো সাহায্যে বাংলাদেশ সরকারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
প্রথম আলো
রাজনীতি ঠিক না হলে ব্যাংক সংস্কার টেকসই হবে না
অর্থনীতি খারাপ হয়ে পড়লে সরকারের পতন হয়। বাংলাদেশেও তা–ই হয়েছে। অর্থনৈতিক নিষ্পেষণ, দুর্নীতি ও ভোটাধিকার হরণের কারণে সরকারের পতন হয়েছে। রাজনৈতিক কারণে কিছু ভালো ব্যাংক দুর্বল হয়েছে। এক পরিবারের কাছে ৮-৯টি ব্যাংক তুলে দেওয়া হয়েছে।
৪-৫টি পরিবার ব্যাংক থেকে ২ লাখ কোটি টাকা নিয়ে গেছে। বিস্ফোরণোন্মুখ এই অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশ ব্যাংক চেষ্টা করে যাচ্ছে। টাকা ছাপানো বন্ধ, সঙ্গে বন্ধ রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রিও। এই নীতি স্থিতিশীল হলে মূল্যস্ফীতি কমতে বাধ্য। এতে সবাই স্বস্তিতে থাকবে। ব্যাংক খাত সংস্কারে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে রাজনীতি ঠিক না হলে ব্যাংক খাতের সংস্কারগুলো টেকসই হবে না। সুতরাং সংস্কার উদ্যোগ টেকসই করতে হলে রাজনীতিতেও সংস্কার আনতে হবে।
বণিক বার্তা
ফ্যাসিবাদী কাঠামো তৈরিতে মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন ঢাবি শিক্ষক ও সাবেক শিক্ষার্থীরা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। ইডেন কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্নের পর ১৯৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে স্নাতকোত্তর শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়টির রোকেয়া হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন ওবায়দুল কাদের। টানা তৃতীয় মেয়াদে দলটির এ পদে রয়েছেন তিনি। দল ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে সড়ক যোগাযোগ, পরিবহন এবং সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন দীর্ঘদিন। সর্বশেষ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ছাত্রলীগকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়ে ব্যাপক সমালোচিত ও নিন্দিত হয়েছেন তিনি। আওয়ামী লীগের মতো দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনকালে দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে কলুষিত করে তোলারও অভিযোগ রয়েছে ঢাবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক এ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে।
যুগান্তর
সংস্কার সম্পন্ন করে দেড় বছরের মধ্যে নির্বাচন
গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার সম্পন্ন করে ১৮ মাস বা দেড় বছরের মধ্যে নির্বাচনের লক্ষ্যে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্র্বর্তী সরকারকে যে কোনো পরিস্থিতিতে পূর্ণ সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তার নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনী রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করবে না বলেও তিনি জানান।
তিনি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়েও কথা বলেন। সেক্ষেত্রে সশস্ত্র বাহিনীকে রাষ্ট্রপতির অধীনে নেওয়া যেতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন। মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে সেনাপ্রধান এসব কথা বলেন।
মানবজমিন
এক প্রকল্প থেকেই ৩০০ কোটি লোপাট
কুমিল্লা-৮ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবু জাফর মো. শফিউদ্দিন শামীম। এমপি হয়ে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে গড়ে তুলেছিলেন নিজের সাম্রাজ্য। সংস্থাটির যেকোনো প্রকল্পের ঠিকাদার ছিল শামীমের নিজস্ব মালিকানা প্রতিষ্ঠান টিএস ট্রান্সফরমার।
জানা গেছে, আরইবি’র উপকেন্দ্র নির্মাণে ৭৭৩ কোটি টাকার দরপত্র ১ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ ও স্মার্ট মিটার প্রকল্পে বেশি দর দিয়ে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় সাবেক এমপি শামীমের সরাসরি সম্পৃক্ততার অভিযোগ করেছেন আরইবি’র একাধিক কর্মকর্তা। তারা জানান, দরপত্র জালিয়াতির মাধ্যমে বিদ্যুতের এই খাত থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেন সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংকের এই চেয়ারম্যান। অনিয়ম আর দুর্নীতির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটও (বিএফআইইউ)। এরই মধ্যে সংস্থাটির পক্ষ থেকে তার ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে।
দেশ রূপান্তর
নির্বিচার মামলায় অবিচারের শঙ্কা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় হতাহতের ঘটনায় যেসব মামলা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঢালাও মামলাগুলোয় নির্বিচারে আসামি করা হচ্ছে বাছবিচার ছাড়াই। এরই মধ্যে কয়েকটি চক্র মেতেছে মামলাবাণিজ্যে। তাদের লক্ষ্যই প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর কর্ণধাররা। মামলায় আসামি না করার জন্য তাদের কাছে দাবি করা হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা।
দাবি করা টাকা না দিলেই দেওয়া হচ্ছে একের পর এক মামলা। শুধু ব্যবসায়ীই নন, বাদ যাচ্ছেন না শিক্ষক, সাংবাদিক ও তারকারাও। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল ও পূর্বশত্রুতার জেরে মামলার আসামি করারও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে মামলার বাদী চেনেন না আসামিকে আর আসামি চেনেন না বাদীকে। এমনকি ঢাকার ঘটনার মামলায় আসামি করা হয়েছে ঢাকার বাইরের জেলার শত শত মানুষকে।
প্রথম আলো
শুধু ১৮৭ জন নন, আরও অনেক পুলিশ সদস্য আত্মগোপনে
আগস্টের ৫ তারিখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের ১৮৭ জন সদস্য এখনো কর্মস্থলে যোগ দেননি। এ তথ্য পুলিশ সদর দপ্তরের। তবে এর বাইরেও অনেক পুলিশ সদস্য নানা কৌশলে বা কারণ দেখিয়ে কর্মস্থলে এখনো অনুপস্থিত রয়েছেন।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ক্ষমতার দাপট দেখানোসহ নানা বিতর্কের জন্ম দেওয়া পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা এখন আর প্রকাশ্যে আসছেন না। তাঁদের কেউ কেউ কর্মস্থলে যোগ দিয়েই নানা কারণ দেখিয়ে ছুটি নিয়েছেন। অনেকে আবার কাজে যোগ দেওয়ার পর ছুটি না নিয়েই কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকছেন। গত ৫ আগস্টের পর কর্মস্থলে যোগ না দেওয়া পুলিশ সদর দপ্তরের করা ১৮৭ জনের তালিকায় তাঁদের নাম নেই। পুলিশের একাধিক সূত্র বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছে।
এছাড়া সন্দেহভাজন হিসেবে তুলে নিয়ে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার; সেনাপ্রধান মনে করেন নির্বাচন ১৮ মাসের মধ্যে হওয়া উচিত; সাঈদ খোকন ও তার স্ত্রীর দুর্নীতির অনুসন্ধানে দুদকে আবেদন; বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন / আলমগীরের খবর রাখেনি কেউ; ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করাকে খারাপ পদক্ষেপ মনে করে বিএনপি; প্রধান শিক্ষকের কর্মকাণ্ডে হতভম্ব শিক্ষার্থীরা; ডিসি নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে তদন্ত কমিটি; ‘শেষবারের মতো মাকে কল দিয়ে বলবি, আর দেখা না-ও হতে পারে’; অভ্যুত্থানে নিহতদের জাতীয় বীর ঘোষণায় হাইকোর্টের রুল—সংবাদগুলো বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।