ধর্ষণের অভিযোগ উঠার পর সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ইমরান হোসেন শিশিরকে দলীয় ওই পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।
ধর্ষণের অভিযোগ উঠার পর সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ইমরান হোসেন শিশিরকে দলীয় ওই পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।
রোববার (১৩ অক্টোবর) রাতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক (সহ-সভাপতি পদমর্যাদা) জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অব্যাহতি প্রদানের ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ইমরান হোসেন শিশিরকে সাংগঠনিক পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছেন।
ইমরান হোসেন শিশির কাপাসিয়া উপজেলার তরগাঁও ইউনিয়নের সাফাইশ্রী গ্রামের আব্দুর রশিদ মাস্টারের ছেলে।
ধর্ষণের অভিযোগে ইউটিউবে ভাইরাল হওয়া এ সংক্রান্ত একটি ভিডিওতে থেকে জানা গেছে, গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ভুক্তভোগীর সঙ্গে (২৭) বিয়ের প্রলোভনে দিনের পর দিন শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন। প্রায় ৬ বছর ধরে সম্পর্ক চলছে। এ সম্পর্কের সূত্র ধরে তাকে বিভিন্ন সময় কক্সবাজার এবং ভারতেও নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ভুক্তভোগী চারবার গর্ভবতী হন। পরে ভয়ভীতি দেখিয়ে ওষুধ সেবন করিয়ে গর্ভপাত করানো হয়। সমগ্র বিষয়টি গোপন রাখতে তাকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
ভাইরাল ভিডিওতে ভুক্তভোগী জানান, ইমরান হোসেন শিশির যখন কাপাসিয়া ছাত্রদলের আহ্বায়ক ছিলেন তখন ভুক্তভোগী কাপাসিয়া ডিগ্রি কলেজে লেখাপড়া করতেন। শিশিরের সঙ্গে ৬ বছর আগে পরিচয় এবং প্রেমের সম্পর্ক হয়। সেই সূত্র ধরে বিয়ের প্রলোভনে বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে নিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করেছেন শিশির। গত ছয় বছরে তারা একসঙ্গে কক্সবাজারসহ বিভিন্ন রিসোর্ট এবং ভারতে বেড়াতে গিয়ে শারীরিক মেলামেশা করেছেন।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে তিনি বলেন, ছাত্রদলে থাকা অবস্থায় বিয়ে করলে তার পদ থাকবে না। তাই কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু গত ৫ আগস্টের পর থেকে সে আর আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছে না। আমি তো তাকে চাই। এমতাবস্থায় ছাত্রদলের সেন্ট্রাল কমিটির সভাপতির কাছে অভিযোগ জানালে বিষয়টি মীমাংসার প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু শিশির এ ব্যাপারে আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করছে না। উল্টো সে এবং তার বন্ধুরা বাড়ি ভাঙচুরসহ প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে বাড়াবাড়ি করলে ফল ভালো হবে না বলেও হুমকি দিয়েছে। সম্প্রতি আমি জানতে পারি শিশির বিবাহিত।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইমরান হোসেন শিশির মুঠোফোনে বলেন, আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে দলীয় কিছু দুষ্কৃতকারী ওই নারীকে প্রভাবিত করে ভুল বুঝিয়ে আমার বিরুদ্ধে বলার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। পরবর্তীতে ওই নারী তার ভুল বুঝতে পেরে নিজেই তার ফেসবুকে আমার বিরুদ্ধে তার অভিযোগ মিথ্যা বলে স্বীকার করেছে। তাছাড়া আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা, বানোয়াট এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
শিহাব খান/এমজেইউ