গাজায় নিহতের সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়াল

গাজায় নিহতের সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়াল

২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর যুদ্ধ বাঁধার পর থেকে এ পর্যন্ত গত ১০ মাসে গাজায় মোট নিহত হয়েছেন ৪০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। সেই সঙ্গে মোট আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৯২ হাজার।

২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর যুদ্ধ বাঁধার পর থেকে এ পর্যন্ত গত ১০ মাসে গাজায় মোট নিহত হয়েছেন ৪০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। সেই সঙ্গে মোট আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৯২ হাজার।

যুদ্ধে অবশ্য ইসরায়েলি বাহিনীর সেনা সদস্যরাও নিহত হয়েছেন। গত দশ মাসের যুদ্ধে গাজায় নিহত হয়েছেন ৩ শতাধিক সেনা কর্মকর্তা ও সদস্য। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, গাজায় এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৪০ হাজার ৫ জন এবং আহত হয়েছেন মোট ৯২ হাজার ৪০১ ফিলিস্তিনি। এই নিহত এবং আহতদের মধ্যে সামরিক-বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের অনুপাত কত— তা আলাদা করা হয়নি; তবে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গাজার হতাহতদের অধিকাংশই নারী এবং শিশু।

এদিকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, যুদ্ধে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছে হামাসের ১৭ হাজার যোদ্ধা। কোন উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে নিহত হামাস যোদ্ধাদের এই সংখ্যা সম্পর্কে আইডিএফ নিশ্চিত হলো— তা অবশ্য ভেঙে বলেননি রিয়ার অ্যাডমিরাল হাগারি।

ফিলিস্তিনের সাংবাদিক এবং সেখানে কর্মরত আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মীদের মতে, গাজায় নিহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি। কারণ যেসব নিহত ও আহত ফিলিস্তিনিদের হাসপাতাল পর্যন্ত নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে, শুধু তাদের হিসেব দিয়ে হতাহতের তালিকা তৈরি করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় যারা ধংসস্তূপের তলায় চাপা পড়ছেন, তাদেরকে তালিকায় রাখা হয়নি। তাছাড়া খাদ্য ও চিকিৎসার অভাবে যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদেরকেও হিসেবে ধরা হয়নি।

তাদের এই বক্তব্যকে সমর্থন করে এবং নিজেদের অনুসন্ধানের ভিত্তিতে গত জুলাই মাসে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা ও পিআর রিভিউ সাময়িকী ল্যানসেট। সেখানে দাবি করা হয়, যুদ্ধের গত দশ মাসে গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা ১ লাখ ৮৬ হাজারের বেশি।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস এবং তাদের মিত্রগোষ্ঠী প্যালেস্টাইনিয়ান ইসলামিক জিহাদের ১ হাজার যোদ্ধা ইসরায়েলের ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে মোট নিহত হন ১ হাজার ২০০ জন। সেই সঙ্গে ২৪০ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় ধরে নিয়ে যায় যোদ্ধারা।

আকস্মিক এই হামলার পর ওইদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী, যা এখনও চলছে।

হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে সমঝোতা এবং গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য অভিযানের শুরু থেকে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র, মিসর এবং কাতার— ৩ দেশ। গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মিদের মুক্তির জন্য দু’পক্ষকে একটি নতুন চুক্তির আওতায় আনতে চেষ্টা করছেন মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর প্রতিনিধিরা। গতকাল ১৫ আগস্ট ছিল সেই চুক্তি প্রস্তুত সংক্রান্ত বৈঠক। ইসরায়েল এবং হামাস নেতাদের সেই বৈঠকে আসার আহ্বানও জানানো হয়েছিল।

সেই বৈঠকে আসতে সম্মত হয়েছিল ইসরায়েল। তবে হামাসের হাইকমান্ড জানিয়েছে, তারা আর নতুন কোনো বৈঠক চায় না; এর পরিবর্তে গত জুনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গাজায় যে তিন স্তরের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন, সেটির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে গোষ্ঠীটি।

সূত্র : ওয়াশিংটন পোস্ট

এসএমডব্লিউ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *