ফেনীতে জুমার খুতবায় কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতদের ও সমসাময়িক বিষয়ে বয়ান করায় মসজিদের ইমামকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ক্ষোভে চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন ভুক্তভোগী ইমাম হাফেজ মাওলানা জিয়াউল হক।
ফেনীতে জুমার খুতবায় কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতদের ও সমসাময়িক বিষয়ে বয়ান করায় মসজিদের ইমামকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ক্ষোভে চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন ভুক্তভোগী ইমাম হাফেজ মাওলানা জিয়াউল হক।
শুক্রবার (২ আগস্ট) জুমার নামাজের সময় ফেনী সদর উপজেলার ফরহাদনগর ইউনিয়নের পূর্ব নৈরাজপুর গ্রামের চৌধুরী বাড়ি জামে মসজিদে এ ঘটনা ঘটে।
মুসল্লি ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, জুমার নামাজে জুলুম ও হত্যার পরিণাম নিয়ে কোরআন হাদিসের আলোকে বয়ান করছিলেন মসজিদের খতিব মাওলানা জিয়াউল হক। আলোচনার একপর্যায়ে চলমান ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের বিষয়ে কথা বলেন। আলোচনা চলাকালে স্থানীয় বাসিন্দা ক্ষমতাসীন দলের নেতা আবদুর রহিম, তার ভাই আবদুল মান্নান ও ভগ্নিপতি রবিউল হক উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। এ সময় ইমামকে রাজাকার বলে গালমন্দ, হুমকি দিয়ে মাইক ও মোবাইল কেড়ে নেন তারা।
মসজিদের মুয়াজ্জিন মাওলানা ইউসুফ বলেন, জুমার বয়ানে হুজুর সবসময় সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। শুক্রবার জুলুম ও হত্যার পরিণাম নিয়ে আলোচনা করার সময়ে কোটা আন্দোলনে ছাত্রদের হত্যার বিষয়টি তুলে ধরেন। এতে কয়েকজন মুসল্লি হুজুরকে লাঞ্ছিত করেন। এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। পরে হুজুর ক্ষোভ প্রকাশ করে চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী ইমাম হাফেজ মাওলানা জিয়াউল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, দেড় বছর ধরে এ মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। শুক্রবার কোরআন হাদিসের আলোকে জুলুম ও হত্যার পরিণাম নিয়ে বয়ান করছিলাম। উদাহরণ দিতে গিয়ে ছাত্র আন্দোলনে গুলি করে মানুষ হত্যার কথা বলেছি। তখন স্থানীয় আব্দুর রহিম খান তেড়ে এসে সামনে থাকা মাইক সরিয়ে আমাকে রাজাকার বলে সম্বোধন করেন। আবদুল মান্নান ও রবিউল হক নামে দুজন অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন। নামাজ শেষ করে চাকরি ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছি।
অভিযুক্ত আবদুর রহিম খান বলেন, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। এই হুজুর মিথ্যাবাদী। তিনি বয়ানে ফেসবুকে কী ঘটেছে সেটি নিয়ে আলোচনা করছিলেন। আমি তাকে এসব না বলে কোরআন হাদিস থেকে কথা বলার জন্য বলেছি। তার কাছ থেকে মাইক ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়নি।
এ ব্যাপারে ঢাকায় অবস্থানরত মসজিদ কমিটির সভাপতি রবিউল হক চৌধুরী বলেন, ইতোমধ্যে ঘটনাটি জেনেছি। যারা ইমামের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছেন তারা ক্ষমতাসীন দলের লোক।
স্থানীয় ফরহাদনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন টিপু বলেন, বিষয়টি আমি অবগত না। বিস্তারিত জেনে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তারেক চৌধুরী/এমজে