খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে মুখপোড়া হনুমান

খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে মুখপোড়া হনুমান

পিরোজপুর শহরে খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে একটি দলছুট মুখপোড়া হনুমান। শহরের বিভিন্ন গাছে, দোকানের সামনে, ঘরের চালে, বাড়ির সীমানা প্রাচীরে হনুমানটিকে ঘুরতে দেখা যায়। হনুমানটি দেখতে সেখানে ভিড় করছে উৎসুক জনতা। কেউ কেউ আবার দোকান থেকে খাবারও কিনে দিচ্ছে। এসব খাবার আয়েশি ভঙ্গিতে খেয়ে বেশ তৃপ্ত হচ্ছে হনুমানটি।

পিরোজপুর শহরে খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে একটি দলছুট মুখপোড়া হনুমান। শহরের বিভিন্ন গাছে, দোকানের সামনে, ঘরের চালে, বাড়ির সীমানা প্রাচীরে হনুমানটিকে ঘুরতে দেখা যায়। হনুমানটি দেখতে সেখানে ভিড় করছে উৎসুক জনতা। কেউ কেউ আবার দোকান থেকে খাবারও কিনে দিচ্ছে। এসব খাবার আয়েশি ভঙ্গিতে খেয়ে বেশ তৃপ্ত হচ্ছে হনুমানটি।

রোববার (২০ অক্টোবর) সকালে পিরোজপুর শহরের সাইদী ফাউন্ডেশন এলাকায় হনুমানটিকে দেখা যায়। হনুমানটি কারও কোনো ক্ষতি করছে না।

অত্যন্ত শান্ত প্রকৃতির এই হনুমানটি স্বাভাবিকভাবেই চলাফেরা করছে। শহরের বাইপাস সড়ক, কৃষ্ণচূড়া মোড়, সিআইপাড়া, সিও অফিস মোড় এলাকায় প্রায়ই হনুমানের দেখা মেলে। বন্যপ্রাণী প্রেমীদের ধারণা যশোরের কেশবপুর বা অন্য কোথাও থেকে কলা কিংবা সবজিবোঝাই ট্রাকে খাবারের খোঁজে চড়ে দলছুট হয়ে পিরোজপুরে চলে এসেছে হনুমানটি।

পিরোজপুর শহরের সাইদী ফাউন্ডেশন এলাকার দোকানদার সাইফুল ইসলাম বলেন, সাইদী ফাউন্ডেশন এলাকায় কিছুদিন ধরে একটি পুরুষ হনুমান দেখা যাচ্ছে। স্থানীয় লোকজনের দেওয়া খাবার খেতে মূলত এরা এখানে আসে। আমার দোকানের সামনে আসলে অনেকেই দোকান থেকে রুটি-কলা কিনে হনুমানটিকে দেয়। আমিও হনুমানটিকে দেখলে খাবার দিই। হনুমানটি খুব শান্ত কারো কোনো ক্ষতি করছে না।

পথচারী শাকিব হাসান বলেন, আগে একসঙ্গে তিন থেকে চারটা হনুমান একসঙ্গে দেখা যেতো, ইদানীং একটি হনুমানকে ঘুরতে দেখা যায়। এটি বাংলাদেশে বিপন্ন প্রাণী। এরা খাদ্যের অভাবে আমাদের লোকালয়ে এসেছে। এদের ক্ষতি না করে আমাদের সবারই কিছু না কিছু খেতে দেওয়া উচিত।

শহরের কৃষ্ণচূড়া মোড় এলাকার দোকানদার মো. রিয়াদ হাওলাদার বলেন, কয়েকদিন ধরেই হনুমানটি আশপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমার দোকানের সামনের একটি দেয়ালের উপরে হনুমানটি এসে চুপচাপ বসে থাকে, খাবার দিলে খায়।

পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মামুনুর রশীদ বলেন, যশোর জেলার কেশবপুরে মূলত এসব মুখপোড়া বা কালোমুখো হনুমান দেখা যায়। মুখপোড়া হনুমান মূলত বৃক্ষচারী প্রাণী। চলাফেরা, খাবার সংগ্রহ, ঘুম, খেলাধুলা, বিশ্রাম, প্রজনন সবকিছু গাছেই সম্পন্ন করে। এরা পারিবারিক বন্ধন নিয়ে থাকে। প্রাপ্ত বয়স্ক একটি পুরুষ হনুমানের নেতৃত্বে দলের সব স্ত্রী, যুবক ও বাচ্চারা থাকে। এরা শান্তিপ্রিয়। দলবদ্ধ এই প্রাণীদের একেকটি দলে সচরাচর ২ থেকে ১৪টি হনুমান থাকে। এরা মূলত পাতাভোজী। গাছের কচি পাতা, বোঁটা, কুঁড়ি ও ফুল খায়। এদের প্রাকৃতিক আবাসস্থল হচ্ছে ক্রান্তীয় ও নিরক্ষীয় শুষ্ক বনভূমি। তবে খাবারের সংকট হলে এরা তাদের এলাকা ছেড়ে আশেপাশে চলে আসে।

তিনি আরও বলেন, মূলত কেশবপুর থেকে ফল কিংবা সবজির ট্রাকে খাবার খেতে উঠে নিজের অজান্তেই এরা পিরোজপুরে চলে এসেছে। এটা কিন্তু এসব হনুমানের জন্য বিশাল বড় ক্ষতির কারণ, কেননা এর ফলে এসব প্রাণীর অভিযোজন ও প্রজননে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়াও বন-জঙ্গল ধ্বংসের কারণে দিনে দিনে প্রাণীটি আশঙ্কাজনক হারে কমে যাচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশসহ পুরো বিশ্বে এরা বিপন্ন বলে বিবেচিত।

পিরোজপুর বন অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (এসএফএনটিসি) আবদুল্লাহ আল বাহারাম বলেন, এটি পুরুষ কালোমুখো বা মুখপোড়া হনুমান। দলছুট হয়ে বা খাদ্যের অভাবে এরা বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ করে লোকালয়ে চলে আসে। এদের যেন কেউ কোনো ক্ষতি বা বিরক্ত না করেন সে বিষয়ে এলাকাবাসীকে সচেতন হতে হবে।

শাফিউল মিল্লাত/এএমকে

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *