কৃষক দল নেতা শহীদুলের সমর্থককে হত্যা মামলার আসামি শামা ওবায়েদ

কৃষক দল নেতা শহীদুলের সমর্থককে হত্যা মামলার আসামি শামা ওবায়েদ

ফরিদপুরের নগরকান্দায় কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক (পদ স্থগিত) শহীদুল ইসলামের সমর্থক কবির ভূঁইয়াকে (৫০) কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (পদ স্থগিত) শামা ওবায়েদকে (৫২) আসামি করে মামলা হয়েছে। শুক্রবার দিবাগত রাত (২৩ আগস্ট) ১টার দিকে নগরকান্দা থানায় নিহত কবির ভূঁইয়ার স্ত্রী  মোনজিলা বেগম (৪৪) বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন।

ফরিদপুরের নগরকান্দায় কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক (পদ স্থগিত) শহীদুল ইসলামের সমর্থক কবির ভূঁইয়াকে (৫০) কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (পদ স্থগিত) শামা ওবায়েদকে (৫২) আসামি করে মামলা হয়েছে। শুক্রবার দিবাগত রাত (২৩ আগস্ট) ১টার দিকে নগরকান্দা থানায় নিহত কবির ভূঁইয়ার স্ত্রী  মোনজিলা বেগম (৪৪) বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন।

এ মামলায় ৩৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত হিসেবে ৫০ থেকে ৬০ আসামি করা হয়েছে। মামলায় শামা ওবায়েদের নাম এক নম্বরে রাখা হয়েছে। তাকে এ মামলায় হুকুমের আসামি করা হয়েছে।

এজাহারে শামা ওবায়েদের ভূমিকা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, গত বুধবার (২১ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম ওরফে বাবুলের নগরকান্দা থানা বিএনপি, নগরকান্দা থানা কৃষক দল, যুব দল, ছাত্র দলসহ নগরকান্দার জনগণের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য নগরকান্দা পেট্রোল পাম্পের সামনে পথ সভায় আয়োজন করা হয়। এই সংবাদ পেয়ে বিএনপির নেত্রী শামা ওবায়েদ রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় ওই পথসভাকে পণ্ড করার জন্য তার পক্ষের লোকদের নির্দেশ দেয় এবং একই সঙ্গে আরও নির্দেশ দেয় যে, যা কিছু হোক, যেভাবেই হোক লোক মারতে হলে মরবে তবুও শহীদুলের পথ সভা করতে দেওয়া যাবে না। তাতে খুন জখমের মামলা মোকদ্দমা যাই হোক আমি দেখব। টাকা পয়সা যত লাগে আমি দেব। 

এজাহারে আরও বলা হয়, শামা ওবায়েদের এই নির্দেশ পাওয়ার পর অন্যান্য জায়গার মত নগরকান্দা বেইলী সেতুর পশ্চিম পাড়ে মিনার গ্রামের রাস্তা দিয়ে আমার স্বামী বাড়ি থেকে নগরকান্দা বাজারে বাজার করার উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময় একই দিন বেলা সাড়ে  ১১টার দিকে নগরকান্দা বেইলি সেতুর পশ্চিম পার্শ্বে মিনারগ্রাম ভ্যানস্ট্যান্ড সংলগ্ন রাস্তার ওপর পৌঁছানো মাত্রই আসামিরা বলে, ‘ওকে মারধর করে খুন কর, শামা আপা হুমুক দিয়েছে। শহীদুল ইসলাম বাবুলের লোকদের যাকে যেখানে পাবি তাকেই খুন করবি।’ এরপর আসামিরা ১৮ ইঞ্চি ধারালো অস্ত্র ও লোহার রড দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আমার স্বামীর মৃত্যু নিশ্চিত করে।

এ মামলায় এজাহারভুক্ত ৩৬ জনের মধ্যে নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি বাবুল তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান মুকুল (৫০) ও তার ভাই মাসুদুর রহমানও রয়েছেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নগরকান্দা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর রহমান শনিবার সকাল ১০টার দিকে ঢাকা পোস্টকে বলেন, শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে নিহতের স্ত্রী মোনজিলার অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। এ মামলায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তবে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

প্রসঙ্গত, গত বুধবার (২১ আগস্ট) কৃষক দল নেতা শহীদুল ইসলামের মোটর শোভাযাত্রা করে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা চৌরাস্তা হয়ে নগরকান্দা উপজেলা সদর ও তালমার মোড় হয়ে ফরিদপুর শহরে এসে শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে নগরকান্দা সদরে শামা ওবায়েদের সমর্থকরা শহীদুল ইসলামের সমর্থকদের ওপর হামলা করে নিজেদের দখলে নিয়ে নেয় এবং বাজারে সশস্ত্র মহড়া দেয়। এ হামলায় শহীদুল ইসলামের সমর্থক নগরকান্দা পৌরসভার ছাগলদী মহল্লার বাসিন্দা কবির ভূঁইয়া (৫০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হন। পরে শহীদুল ইসলাম নগরকান্দা উপজেলা সদরে না গিয়ে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের তালমার মোড় এলাকায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দিয়ে শেষ করেন। পরে ওই দিন সন্ধ্যায় ফরিদপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে শহীদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেছিলেন, আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলি, এই খুনের নির্দেশদাতা শামা ওবায়েদ ইসলাম। স্পষ্টভাবে আমি এ কথা বলছি। তিনিই খুনের মদদদাতা, নির্দেশদাতা। 

এ প্রেক্ষাপটে বুধবার (২১ আগস্ট) রাতেই বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত আলাদা দুই পত্রে বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদসহ শহীদুল ও শামা ওবায়েদের সকল পদ স্থগিত করেন। তবে শামার প্রাথমিক সদস্যসহ ‌সকল পদ স্থগিত করলেও গতকাল শুক্রবার (২৩ আগস্ট) বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে পাকিস্তানের হাই কমিশনার সৈয়দ আহমদ মারুফের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং পরবর্তীতে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর পাশে স্পেশাল অ্যাসিসট্যান্ট টু দ্য চেয়ারপারসনস ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজরি কমিটির সদস্য পরিচয়ে উপস্থিত ছিলেন শামা ওবায়েদ।

ফরিদপুরে স্থানীয় বিএনপির রাজনীতিতে শামার আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ জুলফিকার হোসেন বলেন, শামার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে দাগ লাগানোর জন্য তার নাম জড়ানো হয়েছে। নিরপেক্ষ তদন্ত করলেই প্রমাণ হবে তিনি এতে জড়িত নন। ওই দিন তিনি বাড়িতেই ছিলেন না। 

জহির হোসেন/আরকে

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *