ডেঙ্গু ক্লাসিক্যাল ফিভার:
দেশে উদ্বেগজনকভাবে আবারও বাড়ছে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ এবং বদলে গিয়েছে ডেঙ্গু জ্বরের প্যাটার্নও। ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ২৭ হাজার ৭০৫ জন এবং মারা গিয়েছেন ১৪৩ জন।
ডেঙ্গুর এই আউটব্রেকের সময় সর্দি কাশি আর অল্প জ্বর (১০০-১০১ ডিগ্রি ফারেনহাইট) হলেও রোগীর ডেঙ্গু হতে পারে। তীব্র জ্বর বা শরীরে র্যাশ নাও হতে পারে। ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত রোগ। স্ত্রী এডিস মশার কামড়ের মাধ্যমে ডেঙ্গু ভাইরাস মানবদেহে সংক্রমিত হয় এবং ৫- ১৩ দিনের মধ্যে সাধারণত ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণগুলো দেখা দেয়। কয়েক প্রজাতির এডিস মশা (স্ত্রী মশা) ডেঙ্গু ভাইরাসের প্রধান বাহক এবং এদের মধ্যে এডিস ইজিপ্টি মশা অন্যতম।
ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি সেরোটাইপ (ডেন-১, ডেন-২, ডেন-৩, ডেন-৪) আছে। যেকোনো একটি সেরোটাইপ দিয়ে প্রথমবার সংক্রমণ হলে ডেঙ্গু ক্লাসিক্যাল ফিভার হয় এবং সেই নির্দিষ্ট সেরোটাইপের বিরুদ্ধে রোগী আজীবন অ্যান্টিবডি/প্রতিরোধী ক্ষমতা অর্জন করে। কিন্তু ভিন্ন সেরোটাইপগুলোর বিরুদ্ধে সাময়িক প্রতিরোধী ক্ষমতা অর্জন করে।
পরবর্তীতে ওই একই রোগীর ভিন্ন যে কোনো সেরোটাইপের ডেঙ্গু ভাইরাস দিয়ে সংক্রমণ হলে রোগীর মারাত্মক জটিলতা (ডেঙ্গু শক সিনড্রোম বা ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার) হতে পারে। মানুষের দেহের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা ডেঙ্গুর প্রতিটি সেরোটাইপের বিরুদ্ধে ভিন্নরকম অ্যান্টিবডি তৈরি করে। একটি সেরোটাইপের বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি অন্যান্য সেরোটাইপের বিরুদ্ধে পুরোপুরিভাবে সুরক্ষা প্রদান করে না।
ডেঙ্গু ক্লাসিক্যাল ফিভার:
অল্প বা তীব্র জ্বর সেইসাথে সর্দিকাশি, হাড্ডি-মাংসপেশি-জয়েন্টে প্রচণ্ড ব্যথা, কোমর ব্যথা, তীব্র মাথাব্যথা, চোখে বিশেষ করে চোখের পেছনের দিকে ব্যথা, পেটে ব্যথা, বমি বা বমি ভাব, ত্বকে লাল র্যাশ বা ডায়রিয়া থাকলেও ডেঙ্গু সন্দেহ করতে হবে এবং দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। বমি বা ডায়রিয়া দিনে ৩ বার বা তার বেশি হলে, মুখে একদমই কিছু খেতে না পারলে অবশ্যই হাসপাতালে যেতে হবে। তবে বর্তমান ডেঙ্গুতে সব লক্ষণগুলো নাও থাকতে পারে। প্রচণ্ড শরীর ব্যথার কারণে ডেঙ্গুকে ব্রেকবোন ফিভার বলা হয়।
ক্রিটিকাল ফেইজ বা মারাত্মক ডেঙ্গু (ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার এবং ডেঙ্গু শক সিনড্রোম):
সাধারণত জ্বর থাকা অবস্থায় ডেঙ্গু রোগী মারা যায় না বা জটিলতা শুরু হয় না। বরং বিপদ শুরু হয় আসলে ৪ দিন পরে জ্বর কমার পর। আগে সাধারণত ৫-৬ দিনের সময় ক্রিটিকাল ফেইজ শুরু হতো, কিন্তু এখন ৩ দিনের শুরুতেই অনেক রোগী শকে চলে যাচ্ছে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ২ দিন পরেও হতে পারে। আবার অল্প জ্বর থাকা অবস্থায়ও অনেকে খারাপ হয়ে যাচ্ছে। তাই জ্বর কমে গেলেই আরও সতর্ক হতে হবে কারণ এসময় রক্তে প্লাটিলেটও দ্রুত কমতে শুরু করে।
ব্লাড প্রেশার মাপতে হবে প্রথম দিন থেকেই। দিনে ৪-৫ বার মাপতে হবে। যদি ব্লাড প্রেশার সিস্টোলিক বা উপরেরটা ১০০ এর নিচে নেমে যায় এবং ডায়স্টলিক বা নিচেরটা ৬০ এর নিচে নেমে যায় তাহলে সতর্ক হয়ে যেতে হবে। এই দুটোর পার্থক্য বা পালস প্রেশার যদি ২০-এর কম হয় তাহলে রোগী শকে বা খারাপ হয়ে যাচ্ছে বলে ধরে নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে রোগীকে অবশ্যই দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে নিতে হবে।
এছাড়াও রোগীর তীব্র পেটে ব্যথা, পেট ফুলে যাওয়া, রোগীর হাত ও পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া, দাঁতের মাড়ি, নাক বা শরীরের অন্য কোনো স্থান থেকে রক্তপাত, কাশি বা বমির সঙ্গে রক্ত, অস্থিরতা, নেতিয়ে পড়া, প্রচণ্ড দুর্বলতায় অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া, প্রস্রাব কম হওয়া বা লাল হয়ে যাওয়া, কালো পায়খানা, বুকে-পেটে-হাতে-পায়ে পানি, খিঁচুনি, শ্বাসকষ্ট হলে বিপদ চিন্তা করতে হবে।
হাতের আঙুলের নখে জোরে চাপ দিয়ে কিছুক্ষণ ধরে রাখলে নখ সাদা হয়ে গেলে ছাড়ে দেওয়ার পরে এবার নখের রঙ ফিরতে যদি ২ সেকেন্ডের (ক্যাপিলারি রিফিল টাইম) বেশি লাগে তাহলে রোগী শকে আছে বলে চিন্তা করতে হবে।
ব্লাড প্রেশার মেশিন নিয়ে হাতের কব্জি মাঝে রেখে ব্লাড প্রেশার মাপার মতো করে বাতাস দিয়ে টাইট করে সেই অবস্থায় ৪-৫ মিনিট ধরে রেখে বাতাস ছাড়ে দেওয়ার পরে যদি বাহুতে লাল লাল ছোট ছোট অনেকগুলো দেখা যায় তাহলেও রোগীকে দ্রুত হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে। একে বলে টর্নিকেট টেস্ট। যদি সব রিপোর্ট নর্মালও আসে কিন্তু টর্নিকেট টেস্ট পজিটিভ আসে তাহলে নিশ্চিত থাকতে হবে এটা ডেঙ্গু জ্বর। জ্বর শুরুর দিন থেকেই প্রতিদিন এই টেস্ট করা উচিত।
সাধারণত জ্বর থাকা অবস্থায় ডেঙ্গু রোগী মারা যায় না বা জটিলতা শুরু হয় না। বরং বিপদ শুরু হয় আসলে ৪ দিন পরে জ্বর কমার পর।
তবে যাদের ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, হার্ট ডিজিজ, কিডনির বা লিভারের রোগ, উচ্চ রক্তচাপ বা অন্য কোনো দীর্ঘমেয়াদি রোগ আছে, বেশি ওজন, কম রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন রোগী, শিশু এবং বয়স্ক (৬০ বছরের বেশি) হলে প্রথম দিনেই হসপিটাল ভর্তি হতে হবে। যারা রক্ত তরল করার ওষুধ খাচ্ছেন তাদের ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী বন্ধ রাখার প্রয়োজন হতে পারে।
যারা দ্বিতীয় বা তার বেশি বার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয় সাধারণত তারাই ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে বা হেমোরেজিক ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে থাকে, তাদের আইসিইউর প্রয়োজন হতে পারে এবং মৃত্যুঝুঁকিও বেড়ে যায়। তবে প্রথমবার ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু ফিভারে রোগী সাধারণত ৫-৭ দিনে ভালো হয়ে যায়।
তাই সতর্ক সংকেতগুলো সবার জানতে হবে এবং এক বা একাধিক দেখা দিলেই রোগীকে অতিদ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। সাধারণত ডেঙ্গু জ্বর শুরুর হওয়ার ৩ দিন পরে হঠাৎ চলে যায় এবং ৫ম বা ৬ষ্ঠ দিনে আবার জ্বর শুরু হয়। জ্বর না থাকার সময়ই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এলার্মিং বা খারাপ সাইনগুলো দেখা দেয়। সুতরাং এই সময়ে আরও বেশি সচেতন থেকে রোগীর যত্ন নিতে হবে।
ডেঙ্গুর ল্যাবরেটরি টেস্ট:
প্রথম ৩ দিনের মধ্যে রক্তে ডেঙ্গু এনএস১, সিবিসি এবং এসজিওটি টেস্ট করতে হবে। এনএস১ পজিটিভ হলে ডেঙ্গু হয়েছে নিশ্চিত। তবে অনেক সময় প্রথমদিকে সব টেস্ট নরমাল আসতে পারে। সেক্ষেত্রে ডেঙ্গুর লক্ষণ থাকলে একদিন পরেই আবার রিপিট টেস্ট করতে হবে। সিবিসি রিপোর্টে প্লাটিলেট এবং হেমাটোক্রিট/পিসিভি দেখা হয়। এসজিওটি বেশি বেড়ে গেলে রোগী ক্রিটিক্যাল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। পিসিভি নরমালের চেয়ে অনেক বেড়ে যাওয়া শক সিনড্রোমের লক্ষণ।
আবার হিমোগ্লোবিন এবং পিসিভি দুটোই প্রথম দিনের চেয়ে অনেক কমে যায় তবে রোগীর শরীরে কোথাও ব্লিডিং হচ্ছে। সাথে কালো পায়খানা, লাল প্রস্রাব, দাঁতের মাড়ি থেকে-নাক থেকে রক্ত পড়লে দ্রুত হসপিটালে ভর্তি হতে হবে। তাই ডেঙ্গু রোগীর ক্ষেত্রে একদিন পরপর সিবিসি করে ফলোআপ করতে হবে। হেমাটোক্রিট নরমালি হিমোগ্লোবিনের ৩গুণ বেশি থাকে।
৩ দিনের মধ্যে এনএস১ করা না হলে ৫-৭ দিন পরে ডেঙ্গু এন্টিবডি টেস্ট ( IgM, IgG) করতে হবে। তবে সেরোটাইপ ২ দিয়ে সংক্রমণ হলে এনএস১ অনেক ক্ষেত্রেই ফলস নেগেটিভ হতে পারে। আবার টেস্ট মেথড অনুযায়ী রেজাল্ট ভিন্ন হতে পারে। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী কিন্তু টেস্ট নেগেটিভ এ ধরনের রোগী গতবার থেকেই অনেক পাওয়া যাচ্ছে।
ডেঙ্গু হলে সব রোগীরই প্লাটিলেট কমে গিয়ে রক্তপাত হয়ে খারাপ অবস্থা হয় না। প্লাটিলেট ৩০-৪০ হাজারে নেমে গেলেও অনেকসময় কোনো সমস্যা হয় না। প্লাটিলেট ২০ হাজারের নিচে না নামলে সাধারণত ব্লিডিং হয় না, কারোর ১০হাজারেও কিছু হয় না। প্লাটিলেট সংখ্যা ১০ হাজারের বেশি থাকলে এবং রক্তপাত না থাকলে তা নিয়ে ভীত হওয়ার কারণ নেই। বরং অযথা প্লাটিলেট বা রক্ত দিলে রোগী খারাপ হয়ে যেতে পারে।
প্লাটিলেট বাড়তে শুরু করলে দ্রুত সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। ডেঙ্গু হলে প্লাটিলেট কমে গিয়ে নয় বরং রোগী মারা যায় ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে আক্রান্ত হয়ে। প্লাটিলেটের সংখ্যা ভালো থাকলেও কিন্তু রোগী খারাপ হতে পারে। ব্লাড প্রেশার মাপাটা তাই খুব জরুরি।
ডেঙ্গুর চিকিৎসা:
ডেঙ্গু রোগীকে বাসায় প্রচুর পরিমাণে তরল খাওয়াতে হবে। প্রতিদিন ৩-৪ লিটার পানি না তরল জাতীয় খাবার (ডাবের পানি, আধা লিটার পানিতে গোলানো এক প্যাকেট স্যালাইনের পানি, স্যুপ, লেবুর শরবত, ডাবের পানি, হাতে বানানো লবণ চিনি দেওয়া স্যালাইন খাওয়াবেন। যতক্ষণ মুখে খেতে পারবে খাওয়াতে হবে। যদি না পারে বমি হয় বা পাতলা পায়খানা শুরু হয় হাসপাতালে নিতে হবে।
এসময় প্যারাসিটামল বাদে অন্য কোনো ব্যথার ওষুধ খাওয়া যাবে না। তবে ঘন ঘন প্যারাসিটামল খেলে কিডনি সমস্যা দেখা দিতে পারে। ডেঙ্গুর জন্য এখনো কোনো সুনির্দিষ্ট অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ নেই।
তাই যাদের এলার্মিং সাইন নেই তারা বাসায় পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেবেন এবং প্রচুর তরল জাতীয় খাবার যেমন-ডাবের পানি, লেবুর শরবত, ফলের রস, সুপ, ভিটামিন-সি জাতীয় ফল (কমলা, মাল্টা, লেবু, জাম্বুরা) এবং সাথে অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার খাবেন।
শুধু সকালে বা দিনে নয় রাতেও এই মশা কামড়াতে পারে। শুধু বর্ষাকালে নয় বরং বছরের অন্য সময়েও এখন কম হলেও ডেঙ্গু জ্বরের রোগী পাওয়া যাচ্ছে।
কিন্তু প্রয়োজন ছাড়া খাবার স্যালাইন বা শিরায় স্যালাইন দিলে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত এন্টিবায়োটিক শুরু করা যাবে না।
বাচ্চা এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে। শুরুতেই যদি ডাক্তারের পরামর্শ না নেয়, বিপদ চিহ্ন না জানে এবং এলার্মিং সাইন শুরু হলেও বাসায় থাকে তাহলে রোগীর মৃত্যুঝুঁকি বাড়বে।
কোনো কুসংস্কারে কান দেওয়া যাবে না, পেঁপে পাতার রস বা কবিরাজি চিকিৎসা থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ এসবের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
প্রতিরোধ:
গবেষণা অনুযায়ী, এডিস মশা নিজেকে পরিবর্তন করে এখন স্বচ্ছ, পরিষ্কার ও বদ্ধ পানির পরিবর্তে খোলা, নোংরা এমনকি লবণাক্ত পানিতেও জন্মাতে পারে। শুধু সকালে বা দিনে নয় রাতেও এই মশা কামড়াতে পারে। শুধু বর্ষাকালে নয় বরং বছরের অন্য সময়েও এখন কম হলেও ডেঙ্গু জ্বরের রোগী পাওয়া যাচ্ছে।
তাই বাসা, অফিস, মার্কেট বা আশেপাশে কোথাও এডিস মশা জন্মাতে দেওয়া যাবে না। ফুলের টব, যেকোনো ভাঙা পাত্র, কাপ, ডাবের খোসা, ড্রাম, পানির বোতল, ড্রেন, অনেকদিন অব্যবহৃত কমোড, ভাঙা কনটেইনারে বা যেকোনো পাত্রে যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। দিনে বা রাতে মশারি টানিয়ে ঘুমানো, মশা মারার লোশন বা রিপিলেন্ট শরীরে ব্যবহার করা, হাত-পা ঢাকা কাপড় পরা, পুষ্টিকর খাবার খাওয়া এবং সর্বোপরি এ সময়ে জ্বর হলে দ্রুত রক্ত পরীক্ষা করার মাধ্যমে ডেঙ্গু জ্বর থেকে বাঁচা সম্ভব।
ডেঙ্গু প্রতিষেধক টিকা:
ডেঙ্গু প্রতিরোধী টিকা বেশ কয়েকটি দেশ অনুমোদন করেছে।
বর্তমানে বিশ্বের অনেক দেশে ডেঙ্গভ্যাক্সিয়া নামক টিকাটি ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধে লাইসেন্স প্রাপ্ত।
৯-৪৫ বছর বয়সী, প্রাদুর্ভাবের ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে বসবাসকারী এবং একবার ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছেন এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ডেঙ্গু সেরোটাইপ ১, ২, ৩ ও ৪ প্রতিরোধে এই টিকা ব্যবহারের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
টিকা গ্রহণের ব্যাপারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুস্পষ্ট নির্দেশনাটি হলো—‘যে ব্যক্তির একবার ডেঙ্গু জ্বর হয়েছে শুধুমাত্র তাকেই এ টিকা দেওয়া যাবে, আগে হয়নি এমন কেউ এই টিকা নিলে তার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটতে পারে।’
২০২২ সালের শেষের দিকে কিউডেঙ্গা নামে ভ্যাকসিন যুক্তরাজ্যে অনুমোদন পেয়েছে যা ডেঙ্গুর ৪টি সেরোটাইপের বিপরিতেই ৮০ শতাংশ কার্যকর। বিশ্বের অনেক দেশে এটির কার্যকর প্রয়োগ রয়েছে। তবে আমাদের দেশে এখনো কোনো টিকা অনুমোদন পায়নি। আমাদের দেশে মূলত সচেতন থেকে এডিস মশার কামড় এড়িয়ে চলাই ডেঙ্গু প্রতিরোধের প্রধান উপায়।
ডা. কাকলী হালদার ।। সহকারী অধ্যাপক, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ