ইসরায়েলের ইরান আক্রমণ ও বৈশ্বিক হিসাব নিকাশ

ইসরায়েলের ইরান আক্রমণ ও বৈশ্বিক হিসাব নিকাশ

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে দ্বন্দ্ব আরও বৃদ্ধি পেলে অস্থায়ীভাবে হলেও বন্ড এবং ইকুইটির বাজারে অস্থিরতা অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব এবং প্রতিক্রিয়া ফেলবে। অনিশ্চয়তা বৃদ্ধির কারণে বন্ডের দাম কমবে, কোম্পানিগুলোর জন্য ঋণের খরচ বাড়বে।

দীর্ঘসময় ধরেই ইসরায়েল ও ইরান তাদের চলমান ছায়াযুদ্ধকে চালিয়ে যেতে প্রক্সি বাহিনী, গুপ্তচর এবং অসামরিক গোপন উপায়গুলো ব্যবহার করে একে অন্যকে আক্রমণ করেছে। ২০২৪ এর ২৬ অক্টোবর ভোরের দিকে ইরানে ইসরায়েলের আক্রমণ এবং ইসরায়েলের ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন সুবিধা এবং বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ সামরিক ক্ষেত্রগুলো লক্ষ্য করে আক্রমণ করার স্বীকারোক্তি ইরান-ইসরায়েলের ছায়াযুদ্ধের ইতি টানে।

ইসরায়েলের ভাষ্যমতে, এই হামলা ১ অক্টোবর ১৮০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইরানের ইসরায়েলের উপর হামলার প্রতিশোধ। উক্ত হামলা ছিল গাজা এবং লেবাননে মানুষের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি হামলার এবং শীর্ষ আইআরজিসি, হামাস এবং হিজবুল্লাহ নেতাদের হত্যার প্রতিক্রিয়া। ইরানের হামলার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের জন্য তার পূর্ণ সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।

২০২৪ এর ২৬ অক্টোবরের পর ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ভোরের আগে ইসরায়েলি জেট তিনস্তরের তরঙ্গ হামলার মাধ্যমে তেহরান এবং পশ্চিম ইরানের কাছে অবস্থিত ক্ষেপণাস্ত্র কারখানা এবং অন্যান্য সাইটগুলো ধ্বংস করেছে। ইরান এই ইসরায়েলি হামলার নিন্দার পাশাপাশি ইরানের জন্য এখন আত্মরক্ষা করা ‘অধিকার ও বাধ্য’ বলে জানিয়েছে।

ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা দাবি করেছে ইরান আক্রমণগুলো সফলভাবে বাধা দিয়েছে, তবে চারজন সেনা মারা গেছেন এবং কিছু এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইরান কয়েক ঘণ্টার জন্য তার আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছিল, কিন্তু পরে এটি আবার চালু করে। তবে ইরানের ‘আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তার’ প্রতি তার দায়িত্বকে স্বীকৃতি দিয়ে বিবৃতি যথেষ্ট প্রশংসার দাবি রাখে।

পেছনের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, ইরান এবং ইসরায়েল একে অপরের বন্ধু ছিল এবং ইরান ইসরায়েলকে ১৯৫০ সালে স্বীকৃতি দেয়। সীমানা সংযোগবিহীন ইরান এবং ইসরায়েলের মধ্যে কোনো যুদ্ধ হয়নি এবং একে অপরের ওপর কোনো আঞ্চলিক দাবি নেই তবুও বৈরিতার বিভিন্ন কারণ রয়েছে। 

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে দ্বন্দ্ব আরও বৃদ্ধি পেলে অস্থায়ীভাবে হলেও বন্ড এবং ইকুইটির বাজারে অস্থিরতা অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব এবং প্রতিক্রিয়া ফেলবে। অনিশ্চয়তা বৃদ্ধির কারণে বন্ডের দাম কমবে, কোম্পানিগুলোর জন্য ঋণের খরচ বাড়বে।

প্রথমত, ১৯৪৮ সালে ইসরায়েলের জন্ম। মুসলিম/আরব ভূমি দখল করেছে এবং ফিলিস্তিনিদের তাদের মাতৃভূমি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার দরুণ ইরানের ইসলামপন্থিরা ইসরায়েলকে একটি অবৈধ রাষ্ট্র বলে মনে করে। তারা বিশ্বাস করে ইসরায়েলকে একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে প্রতিস্থাপিত করা উচিত যেখানে মুসলমান এবং ইহুদিরা সমানভাবে বসবাস করতে পারে।

দ্বিতীয়ত, ইরান শিয়া ইসলাম দ্বারা শাসিত এবং ইসরায়েল একটি ইহুদি রাষ্ট্র, তাই তাদের মধ্যকার মৌলিক ধর্মীয় এবং আদর্শগত পার্থক্য পারস্পরিক সন্দেহ এবং শত্রুতাকে উসকে দেয়।

তৃতীয়ত, ইরান-ইসরায়েল সম্পর্ক ভেঙে পড়ে মূলত ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামি বিপ্লবের পর। ইরানের ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের নতুন সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি যেসব পশ্চিমা অহংকারী শক্তিগুলোর এবং আঞ্চলিক রাষ্ট্র ফিলিস্তিনসহ অন্যদের ওপর নিপীড়ন নীতির অনুসরণ করেছিল তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর জন্য যুক্তি দিয়েছিল।

চতুর্থত, ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে অস্তিত্বের একটি হুমকি হিসেবে দেখে। ইসরায়েল ইরানের পরমাণু চুক্তির (জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন) সমালোচনা করে এবং ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রমকে ব্যাহত করার জন্য গোপন অভিযানও পরিচালনা করেছে।

পঞ্চমত, দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েল, ইরান প্রতিষ্ঠার বিরোধী বিভিন্ন গোষ্ঠীকে সমর্থন করে আসছে। তেহরানের ‘সন্ত্রাসী’ সংগঠন হিসেবে মনোনীত কয়েকটি গোষ্ঠী যেমন ইউরোপ ভিত্তিক সংগঠন মোজাহেদিন-ই খালক (MEK), ইরানের দক্ষিণ-পূর্ব সিস্তান ও বেলুচিস্তান প্রদেশের সুন্নি সংগঠন এবং ইরাকি কুর্দিস্তানে অবস্থিত কুর্দি সশস্ত্র গোষ্ঠীকে সমর্থন জুগিয়ে যাচ্ছে।

অন্যদিকে ১৯৮২ সালে ইসরায়েলের লেবানন আক্রমণের পর হিজবুল্লাহ তৈরিতে ইরানের সমর্থন ইসরায়েলের প্রতি ইরানের শত্রুভাবাপন্ন মনোভাব প্রকাশ করে। পাশাপাশি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইরান-বিরোধী নীতি (যেমন ‘দ্বৈত নিয়ন্ত্রণ’ এবং নিষেধাজ্ঞা) এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ইসরায়েল, ইহুদিবাদ এবং ইহুদি পুঁজিবাদের প্রতি সম্পূর্ণ সহযোগিতাও ইরান ও ইসরায়েল বৈরিতাকে বৃদ্ধি করেছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকে প্রাধান্য দিয়ে মন্তব্য করেছে, তবে সব পক্ষকে ‘সংযম দেখানোর’ আহ্বান জানিয়েছেন। ইরানের বড় বড় স্থাপনা এবং পারমাণবিক কেন্দ্রাগারগুলো ইসরায়েলের লক্ষ্য না করায় ইসরায়েলকে প্রশংসা করা যাচ্ছে না। কারণ অনেকের মতে এটি যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সামান্য বল দেখানো বা যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতির সফলতা দেখানোর প্রয়াস।

২৮ অক্টোবর ২০২৪ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল বা মার্কিন কর্মীদের বিরুদ্ধে আরও আগ্রাসী পদক্ষেপ নিলে ইরানের ‘গুরুতর পরিণতি’ হবে বলে সতর্ক করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গাজায় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধকে কেন্দ্র করে মধ্যপ্রাচ্যকে নিয়ে কৌশলগত পুনর্নির্ধারণ করেছে। ইরান ও হিজবুল্লাহর বিপক্ষে ইসরায়েলকে সমর্থন দিতে যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে তার সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ইস্যুতে যতই হালকাভাবে চলার চেষ্টা করুক না কেন, মনে হচ্ছে ইসরায়েলেরর ইরান হামলা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে নতুন সমীকরণে ঠেলে দিচ্ছে। চ্যানেল টুয়েলভ (Channel 12) টিভি দ্বারা প্রকাশিত একটি জরিপে দেখায় যে, আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইসরায়েলিরা ডেমোক্রেট কমলা হ্যারিসের চেয়ে রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ব্যাপকভাবে সমর্থন করছে। 

নিঃসন্দেহে, ইসরায়েলের ২৬ অক্টোবরের হামলার পর মনে হচ্ছে ইসরায়েলি হামলা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচনের উপর প্রভাব ফেলছে এবং পরবর্তী রাষ্ট্রপতি যেই হোক না কেন, ইরানের বিষয়ে একটি নতুন নীতির সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করবে। 

ইরানের উপর ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলা মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনাকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করেছে এবং এর সুদূরপ্রসারী বৈশ্বিক প্রভাবও রয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারি, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে একটি বাণিজ্য সংঘর্ষ বিশ্বব্যাপী মুক্ত-বাণিজ্য ব্যবস্থাকে উল্টে দিয়েছে, যার নেতিবাচক প্রভাব বিশ্ব অর্থনীতিতে পড়েছে।

এদিকে, তেহরান এবং তেল আবিব উভয়ই আর্থিক চাপের মধ্যে রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা কয়েক বছরে ইরানের কোম্পানিগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করেছে এবং তেল রপ্তানি থেকে তেহরানের জন্য সবচেয়ে বেশি লাভ করা কঠিন করে তুলেছে।

অন্যদিকে গাজায় ইসরায়েলের বৃহৎ আকারের যুদ্ধ চালানোয় ইহুদি রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে খারাপভাবে প্রভাবিত করেছে। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে দ্বন্দ্ব আরও বৃদ্ধি পেলে অস্থায়ীভাবে হলেও বন্ড এবং ইকুইটির বাজারে অস্থিরতা অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব এবং প্রতিক্রিয়া ফেলবে। অনিশ্চয়তা বৃদ্ধির কারণে বন্ডের দাম কমবে, কোম্পানিগুলোর জন্য ঋণের খরচ বাড়বে। যুদ্ধে ইরানের মতো প্রধান তেল উৎপাদনকারী দেশের সম্পৃক্ততা বিশ্ব তেলের বাজারে প্রভাব ফেলতে পারে।

অন্যদিকে ইসরায়েলের সাথে যুক্ত কোম্পানিগুলো ঝুঁকির মুখে পড়বে। কিন্তু এই সংঘাতময় পরিস্থিতি মার্কিন ডলারকে আরও শক্তিশালী করতে পারে। কিন্তু শক্তিশালী ডলার উন্নয়নশীল দেশগুলোর ডলার দিয়ে নির্ধারিত ঋণ এবং আমদানির ওপর প্রভাব ফেলবে।

বাণিজ্য রুটের ব্যাঘাত : এই সংঘাত বাণিজ্যের জন্য ইউরোপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, আফ্রিকা এবং এশিয়ার মধ্যকার  গুরুত্বপূর্ণ মূল শিপিং রুটগুলিতে বাধার ঝুঁকি বাড়িয়েছে। লোহিত সাগর এবং সুয়েজ খাল রুটগুলো বার্ষিক ৪০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য চলাচলের সুবিধা দেয়। তাই এই অস্থিতিশীলতা শুধু শিপিং লেনকেই নয়, সামুদ্রিক বাণিজ্যের সামগ্রিক নিরাপত্তাকেও হুমকির মুখে ফেলবে। যার ফলে, দ্বন্দ্ব-সম্পর্কিত ডাইভারশনের কারণে শিপিং রুট দীর্ঘ হয়ে খরচ প্রায় ১৫-২০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।

পারমাণবিক আলোচনার ওপর প্রভাব : এই হামলা ইরানের পরমাণু চুক্তিকে পুনরুজ্জীবিত করার চলমান প্রচেষ্টাকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। ইরান দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে যে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি উদ্দেশ্যে বেসামরিক এবং সামরিক উপাদান বিকাশের কোন উদ্দেশ্য নেই। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা এই দাবির বিরোধিতা করেছে।

৮ অক্টোবর ইরানের সংসদ জানিয়েছে তারা ‘ইরানের পারমাণবিক শিল্পের সম্প্রসারণের’ জন্য একটি খসড়া আইন পেয়েছে, যা সংসদে আলোচিত হবে। যা ইরানের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়লে ইরান অবশ্যই তার পারমাণবিক মতবাদ পরিবর্তন করবে বলে বহুদিনের অনুমিত ধারণার সত্যতার আভাস দেয়। 

১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ ও ইরানের মধ্যকার প্রথম কূটনৈতিক যোগাযোগের পর থেকেই উন্মুক্ত ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বহাল রেখেছে। ১৯৭৯ সালে শাহের পতনের সাথে সাথে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্কের নতুন মাত্রা যোগ হয়। কয়েক বছর পর ১৯৮১ সালে ওআইসি সম্মেলনে গঠিত ইসলামী শান্তি কমিটির সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ ইরান ও ইরাকের মধ্যকার বৈরিতা অবসানে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল থেকে ইসলাম, ফার্সি ভাষা এবং সুফিবাদ ইরান ও বাংলাদেশের মধ্যেকার প্রধান যোগসূত্র তৈরি করে।

অন্যদিকে বাংলাদেশিরা ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের হত্যার প্রতিবাদের জন্য ইরানকে সমর্থন করে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে, যেখানে ইরান তেল ও গ্যাস উৎপাদনে এগিয়ে, সেখানে বাংলাদেশ পেট্রোকেমিক্যাল, গার্মেন্টস সেক্টর, ওষুধ ব্যবসা, কৃষি,এবং মৎস্য শিল্পে এগিয়ে। এই সমন্বয় দুই দেশের আমদানি রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি করে। ২০২২ সালে ইরান ও বাংলাদেশের ব্যবসায়িক সহযোগিতাকে উৎসাহিত করতে দ্বৈত কর ও কর ফাঁকি প্রতিরোধে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

বাংলাদেশ কিছু কঠিন চ্যালেঞ্জ, বিশেষ করে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের অবক্ষয় থেকে ফিরে আসার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে এবং সফলতার পথেও হাঁটছে। তবে ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের ফলে মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশিদের কাজের অস্থিতিশীলতা এবং ২০২২ সালের রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের মতো জ্বালানির দামে ওঠানামা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সর্বোপরি বলা যায়, ইরান ইসরায়েলের এই সংঘাত আন্তর্জাতিক রাজনীতির ক্ষেত্র থেকে তিনটি পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হতে পারে। এক, যেখানে ইরান পারমাণবিক অস্ত্রের সক্ষমতা কাছাকাছি, বৈশ্বিক জ্বালানি সরবরাহ এবং শিপিং লেনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে প্রত্যক্ষভাবে সংঘর্ষে জড়ানো থেকে বিরত রাখবে।

দুই, অর্থনৈতিক ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিবেচনা করে পশ্চিমের সাথে ইরান তার সম্পর্ক পুনর্বিবেচনা করতে পারে এবং সম্ভবত চীন, ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে চীন যেমন সহায়তা করেছে, তেমনি ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যেও কিছু নিরঙ্কুশ বোঝাপড়ার মাধ্যম হতে পারে। তিন, লেবাননে এবং গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সাথে হিজবুল্লাহ ও হামাসের যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মিদের ফেরতের চুক্তি আশার আলো পেতে পারে।

অদিতি চক্রবর্তী ।। প্রভাষক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *