ইরানে হামলার সমালোচনা ইসরায়েলের বিরোধীদলীয় নেতার

ইরানে হামলার সমালোচনা ইসরায়েলের বিরোধীদলীয় নেতার

ইরানে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর ‘সীমিত’ হামলার কঠোর সমালোচনা করেছেন ইসরায়েলের বিরোধীদলীয় নেতা ইয়াইর লাপিদ। ইরানকে ‘শয়তানের অক্ষের প্রধান’ উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ইসরায়েলকে এ জন্য চড়া মূল্য দিতে হতে পারে।

ইরানে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর ‘সীমিত’ হামলার কঠোর সমালোচনা করেছেন ইসরায়েলের বিরোধীদলীয় নেতা ইয়াইর লাপিদ। ইরানকে ‘শয়তানের অক্ষের প্রধান’ উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ইসরায়েলকে এ জন্য চড়া মূল্য দিতে হতে পারে।

শনিবার ভোররাতের দিকে রাজধানী তেহরান এবং তার সংলগ্ন দুই প্রদেশ খুজেস্তান ও ইলামে অভিযান পরিচালনা করে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী। অভিযানের পর এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) পক্ষ থেকে বলা হয়, বিমান বাহিনীর অভিযান ‘সংক্ষিপ্ত এবং সুনির্দিষ্ট’ এবং এই অভিযান শুধু ইরানের সামরিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হবে।

ইয়াইর লাপিদের সমালোচনার জায়গা এটিই। শনিবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, “ইরানের কৌশলগত ও অর্থনৈতিক স্থাপনায় আঘাত না করে শুধু সামরিক স্থাপনাতে হামলা প্রতিরক্ষা বাহিনীর খুবই ভুল একটি পদক্ষেপ হয়েছে। কারণ ইরান হলো শয়তানের অক্ষশক্তির প্রধান। নিশ্চিতভাবেই তারা এর প্রতিশোধ নেবে এবং আমাদেরকে এজন্য চড়া মূল্য দিতে হবে।”

তবে সমালোচনার পাশপাশি ইসরায়েলের বিমান বাহিনীর প্রশংসাও করেছেন লাপিদ। বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, “সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে নিখুঁতভাবে নির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনে আমাদের বিমান বাহিনী আরও একবার প্রমাণ করল যে তাদের অভিযান পরিচালনার দক্ষতা বিশ্বমানের।”

শনিবার ভোররাতের দিকে তেহরান, খুজেস্তান এবং ইলামের সামরিক ঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা হামলা শুরু করে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী। গত ০১ অক্টোবর ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে যে ব্যাপক আকারের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছিল ইরান, তার জবাব দিতেই এ হামলা পরিচালনা করা হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ।

বিবৃতিতে আইডিএফ আরও বলেছে, “এটি পুরোপুরি পরিকল্পিত এবং সুনির্দিষ্ট একটি অভিযান। এ অভিযানে শুধু ইরানের সামরিক স্থাপনাগুলোতে হামলা করা হবে। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা এবং তেল খনিগুলো হামলার আওতার বাইরে থাকবে।”

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলের ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালানোর পর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। এ অভিযানের মূল লক্ষ্য হামাসের কব্জায় থাকা জিম্মিদের উদ্ধার করা এবং গোষ্ঠীটিকে অকার্যকর করা।

গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে গাজায় অভিযান পরিচালনা করছে ইসরায়েলি সেনারা। সেই সঙ্গে গত সেপ্টেম্বর থেকে হামাসের মিত্র ও লেবাননভিত্তিক সশস্ত্র ইসলামি গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধেও অভিযান শুরু করেছে আইডিএফ।

লেবানের অভিযান শুরুর পর ইসরায়েলকে সতর্কবার্তা দিতে গত ১ অক্টোবর রাতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইসরায়েল। ওই রাতে ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে প্রায় ২০০ ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল ইরানের সামরিক বাহিনীর এলিট শাখা ইসলামিক রেভোল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি)।

তবে অ্যান্টি মিসাইল সিস্টেমের মাধ্যমে ইরানের অধিকাংশ ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার আগেই ধ্বংস করে ফেলতে পেরেছিল আইডিএফ। তাই ১ অক্টোবরের হামলায় তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি ইসরায়েলের।

হামলার পরের দিন ২ অক্টোবর জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেন, ইরানকে এ হামলার জবাব দেবে ইসরায়েল। অন্যদিকে ৩ অক্টোবর ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান কাতারে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মত বিনিময় সভায় বলেন, ইসরায়েল যদি গাজা এবং লেবাননে সামরিক অভিযান বন্ধ না করে, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে ফের এ ধরনের হামলা হবে।

উভয়পক্ষের এই পাল্টাপাল্টি অবস্থানের জেরে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ও যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। এই আশঙ্কার মধ্যেই হামলা করল ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী।

সূত্র : টাইমস অব ইসরায়েল

এসএমডব্লিউ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *