ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে একদিনে ব্রিটেনে ঢুকল ৭ শতাধিক মানুষ

ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে একদিনে ব্রিটেনে ঢুকল ৭ শতাধিক মানুষ

ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশকারী অভিবাসীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। গত শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিপজ্জনক এই চ্যানেল পাড়ি দিয়ে একদিনেই যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছেন ৭ শতাধিক মানুষ।

ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশকারী অভিবাসীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। গত শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিপজ্জনক এই চ্যানেল পাড়ি দিয়ে একদিনেই যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছেন ৭ শতাধিক মানুষ।

সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার ৭০৭ জন মানুষ ছোট নৌকায় ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়েছে বলে ব্রিটেনের স্বারাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে। এটি এই বছরের এখন পর্যন্ত একদিনে চ্যানেল পাড়ির চতুর্থ সর্বোচ্চ সংখ্যা।

বিবিসি বলছে, সর্বশেষ এই পরিসংখ্যানসহ ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে চলতি বছর যুক্তরাজ্যে প্রবেশকারী অভিবাসীর সংখ্যা এখন ২৪ হাজার ৩৩৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এর আগে গত ১৮ জুন এক দিনে সর্বোচ্চ ৮৮২ জন ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়েছিলেন।

গত জুলাই মাসে লেবার পার্টি নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর থেকে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ চ্যানেল পাড়ি দিতে তাদের যাত্রা করেছেন। ব্রিটিশ সরকার বলেছে, তারা এই ধরনের ক্রসিং বন্ধ করার জন্য অগ্রগতি করছে এবং সাবেক পুলিশ প্রধান মার্টিন হিউইটকে নতুন সীমান্ত নিরাপত্তা কমান্ডার হিসাবে নিয়োগ করেছে।

যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়েভেট কুপার বলেছেন, ছোট নৌকায় করে চ্যানেল পারাপার বন্ধ করার জন্য সরকার ইউরোপীয় পুলিশ বাহিনীর সাথে কাজ করবে। এছাড়া ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন।

ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র বলেছেন: “আমরা সকলেই বিপজ্জনক ছোট নৌকায় করে চ্যানেল পারাপার বন্ধ করতে চাই। কারণ এই ধরনের ক্রসিং জীবনকে হুমকির মুখে ফেলে এবং আমাদের সীমান্ত নিরাপত্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমরা তাদের ব্যবসায়িক মডেল ভেঙ্গে দিতে এবং তাদের বিচারের আওতায় আনতে কিছুতেই থামব না।”

এর আগে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ফ্রান্স থেকে ইংল্যান্ড পৌঁছানোর চেষ্টারত একটি অভিবাসীবাহী নৌকা ডুবে গত ১৫ সেপ্টেম্বর আট জন মারা যান। এতে করে এ বছর এখন পর্যন্ত ফ্রান্সের উপকূল থেকে চ্যানেল অতিক্রম করে ইংল্যান্ড পৌঁছাতে গিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ৪৬ জনে পৌঁছেছে।

এর আগে এই মাসের শুরুর দিকেই নৌকাডুবিতে ১২ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল।

প্রসঙ্গত, প্রবল স্রোতের ফলে ইংলিশ চ্যানেল বেশ বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। ছোট নৌকাগুলো এর ফলে নিয়মিতই বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। তারপরেও নিজ দেশে যুদ্ধ বা দারিদ্র্য থেকে পালিয়ে আসা বহু মানুষ নিয়মিতই জীবনের ঝুঁকি নিয়েই ছোট নৌকায় ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিচ্ছেন।

পাস-ডি-ক্যালে অঞ্চলের প্রিফেক্ট জ্যাক বিলান্টের মতে, কেবল গত ১৪ সেপ্টেম্বরই ফ্রান্স থেকে চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার আটটি প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছিল। সেসময় একদিনেই অন্তত ২০০ মানুষকে চ্যানেল থেকে উদ্ধার করা হয়।

ঋষি সুনাকের নেতৃত্বাধীন সাবেক কনজারভেটিভ সরকার ‘নৌকা বন্ধ করুন’ স্লোগান পরিচিত করে তুলেছিল। তবে নবনির্বাচিত লেবার সরকারও অভিবাসীদের চ্যানেল পারাপারে সহায়তা করা অপরাধী চক্রকে দমন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েই ক্ষমতায় এসেছে।

অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংঘাত বা পর্যাপ্ত খাদ্য ও পানি সরবরাহের অভাবে অসহনীয় পরিস্থিতিতে বসবাস করতে বাধ্য হওয়া লাখ লাখ মানুষের এই প্রচেষ্টা এতো সহজে বন্ধ হবে না।

এছাড়া সমস্যার আংশিক সমাধান হিসেবে ব্রিটেনে অভিবাসনে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের আইনি ও নিরাপদ বিকল্প প্রস্তাব করার আহ্বান জানিয়েছেন অনেকে।

টিএম

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *