চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ইংরেজি বিভাগের ২১ সালের মাস্টার্স পরীক্ষার ফলাফল পুনর্মূল্যায়নে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ নাসিরুদ্দিনের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া ইংরেজি বিভাগের সভাপতি মাহ-এ-নূর কুদ্সী ইসলামকে জেলের হুমকি দেন তিনি। এ নিয়ে বিভাগটিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ইংরেজি বিভাগের ২১ সালের মাস্টার্স পরীক্ষার ফলাফল পুনর্মূল্যায়নে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ নাসিরুদ্দিনের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া ইংরেজি বিভাগের সভাপতি মাহ-এ-নূর কুদ্সী ইসলামকে জেলের হুমকি দেন তিনি। এ নিয়ে বিভাগটিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতারের কাছে ইংরেজি বিভাগের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাসিরুদ্দিনের হস্তক্ষেপ ও জেলের হুমকি দেওয়ার ব্যবস্থা চেয়ে চিঠি দিয়েছেন ইংরেজি বিভাগের সভাপতি মাহ-এ-নূর কুদসী ইসলাম।
চিঠিতে মাহ-এ-নূর কুদসী বলেন, গত ১৮ আগস্ট ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের ২১ সালের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। এই পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ছিলেন ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক যাকীয়াহ্ তাসনীম (অধ্যাপক মোহাম্মদ নাসিরুদ্দিনের স্ত্রী)। প্রকাশিত ফলাফলে ৩৫ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হওয়ায় তারা ফলাফল পুনর্মূল্যায়নের দাবিতে আন্দোলন করেন। এ দাবির প্রেক্ষিতে তাদেরকে ব্যক্তিগতভাবে ইংরেজি বিভাগের কার্যালয়ে ফলাফল পুনর্মূল্যায়নের জন্য আবেদন করতে বলা হয়। পরবর্তীতে এ বিষয়টি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের মাধ্যমে উপাচার্যের কাছে প্রেরণ করা হবে এবং উপাচার্যের অনুমতি সাপেক্ষে পুনর্মূল্যায়ন কমিটি কার্যক্রম শুরু করবে বলে শিক্ষার্থীদেরকে জানানো হয়।
চিঠিতে কুদসী ইসলাম আরও বলেন, গত বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) শিক্ষার্থীদের আবেদনের ফর্ম পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে জমা দিতে গেলে সেখানে যাকীয়াহ্ তাসনীম ও তার স্বামী অধ্যাপক নাসির উদ্দিন উপস্থিত হন এবং আমাকে দেখা মাত্রই তিনি অত্যন্ত ক্ষিপ্রতার সঙ্গে মারমুখী হয়ে আমাকে বলতে থাকেন, গত ১ সেপ্টেম্বর ফলাফল পুনর্মূল্যায়নের সভাটি উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে অন্য কারো প্ররোচনায় একটি ষড়যন্ত্রমূলক নাটক মঞ্চায়িত করেছি। এজন্য আমাকে উনি ছেড়ে দেবেন না, দেখে ছাড়বেন। এমনকি আমাকে জেলের ভাত খাইয়ে ছাড়বেন।
তিনি বলেন, ওনাদের উভয়কে আমি অত্যন্ত নম্রতা ও বিনয়ীর সঙ্গে বুঝাবার চেষ্টা করেছি, এমন কোনো সিদ্ধান্ত সভায় বিভাগের পক্ষ থেকে নেওয়া হয় নাই, যাতে যাকীয়াহ্ তাসনীম কর্তৃক প্রকাশিত ফলাফল অশুদ্ধ বা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। শুধু শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে খাতা পুনর্মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু উভয়েই কোনো কথা শুনতে নারাজ।
এ বিষয়ে ইংরেজি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মাহ্-এ-নুর কুদসী ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি এ বিষয়ে উপাচার্যের নিকট অভিযোগ দিয়েছি। তিনি ব্যবস্থা নেবেন।
অভিযুক্ত মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাসিরুদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ম্যাম আমার নামে কেন অভিযোগ করলেন আমি বুঝলাম না। ওনার সঙ্গে আমাদের খুবই ভালো সম্পর্ক রয়েছে। পারিবারিক সম্পর্কের মতো। আমি এ বিষয়ে ওনার সঙ্গে কথা বলবো।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ আগস্ট ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্স ২১ সালের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। এতে ৩৫ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়। শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, ‘পূর্বে বিভাগের নানান অনিয়মের প্রতিবাদ করার কারণে আমরা এই আক্রোশের শিকার হয়েছি’। পরে শিক্ষার্থীরা ফলাফল পুনর্মূল্যায়নের দাবিতে আন্দোলন করেন। এর প্রেক্ষিতে গত ২৮ ও ২৯ আগস্ট পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও ডীনদ্বয়ের সঙ্গে একটি মিটিং হয়। এতে যাকীয়াহ্ তাসনীম অনুপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া গত ১ সেপ্টেম্বর অ্যাকাডেমিক সভাতেও তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। পরে গত বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) শিক্ষার্থীদের আবেদনের ফর্ম পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে জমা দিতে গেলে সেখানে যাকীয়াহ্ তাসনীম ও তার স্বামী অধ্যাপক নাসির উদ্দিন উপস্থিত হয়ে ইংরেজির বিভাগের সভাপতি মাহ্-এ-নুর কুদসীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং তাকে জেলে পাঠানোর হুমকি দেন।
আতিকুর রহমান/এএমকে