বরগুনায় মোবাইল ফোনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভিডিও থাকায় আরিফ নামে এক যুবককে মারধর করা হয়। এ অভিযোগে মামলা করায় ছয়জনকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনা ঘটেছে।
বরগুনায় মোবাইল ফোনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভিডিও থাকায় আরিফ নামে এক যুবককে মারধর করা হয়। এ অভিযোগে মামলা করায় ছয়জনকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সন্ধ্যার দিকে বরগুনা সদর উপজেলার ৪ নম্বর কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়নের ঘটবাড়িয়া নামক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এতে আহতরা হলেন- মো. আব্দুল হক (৬০), দেলোয়ার ফরাজি (৪৫), বিপ্লব (৩৩), ইউনুস ফকির (৬০), মো. সেলিম ফরাজি (৬৫) ও আব্দুল করিম (৫০)। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত চারজনকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ থেকে নানা বাড়ি বরগুনার কেওরাবুনিয়া এলাকায় বেড়াতে আসেন আরিফ নামে এক যুবক। পরে গত রোববার (১৮ আগস্ট) আরিফ ওই এলাকার ঘটবাড়িয়া বাজারে গেলে কয়েকজন যুবক তার মোবাইল ফোনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভিডিও আছে কিনা দেখতে চান। এ সময় তার ফোনে আন্দোলনের ভিডিও থাকায় তাকে মারধর করাসহ মোবাইল ফোনটি ভেঙে ফেলেন তারা।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আরিফ থানায় মামলা করলে অভিযুক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে আরিফের চাচা সেলিম ফরাজিসহ মামলার পক্ষে অবস্থান নেওয়া কয়েকজনকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করেন। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। এছাড়া গুরুতর আহত চারজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গুরুতর আহত আব্দুল হকের স্ত্রী সালেহা বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার স্বামীর সঙ্গে কারো কোনো শত্রুতা নেই। তনি একজন স্থানীয় ব্যবসায়ী। সন্ধ্যায় কয়েকজন যুবককে অস্ত্র হাতে নিয়ে আসতে দেখে আমি তাকে দোকান বন্ধ করতে বলি। পরে দোকান বন্ধ করে নামার সঙ্গে সঙ্গেই তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়। এছাড়া দোকানে হামলা চালিয়ে সবকিছু ভেঙে ফেলা হয়েছে।
ভুক্তভোগী আরিফের চাচা আহত মো. সেলিম ফরাজি বলেন, আমার ভাতিজা আরিফ নারায়ণগঞ্জ থেকে বরগুনায় এলে আন্দোলনের বিষয়ে জানতে চান এলাকার আব্দুল্লাহ গ্রুপের কয়েকজন যুবক। এ সময় আরিফ তাদের বলে যে সে আন্দোলন করেনি। কিন্তু তারা মানতে রাজি না হয়ে তার সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলেন এবং আরিফকে মারধর করেন। পরে আহত অবস্থায় আরিফকে হাসপাতালে ভর্তি করে তাদের নামে থানায় একটি মামলা করি। এরপর বিকেলে আমরা ঘটবাড়িয়া বাজারে গেলে সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ অস্ত্র হাতে কয়েকজন এসে আমাকেসহ আশেপাশের অনেককে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেন।
বরগুনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হালিম বলেন, আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনায় জড়িতদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে থানা পুলিশ কাজ শুরু করেছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মো. আব্দুল আলীম/এফআরএস