যাত্রীদের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার মেট্রোরেল চলবে; এমন গুঞ্জন শুরু হয়েছিল গত মে মাসের প্রথম সপ্তাহে। তবে এটি এখন আর গুঞ্জন নয়, বাস্তবে পরিণত হচ্ছে যাচ্ছে। ফলে দেশের প্রথম বিদ্যুৎচালিত দ্রুতগতির গণপরিবহন মেট্রোরেল সপ্তাহে সাতদিনই চলাচল করবে। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) যাত্রীরা মেট্রোরেলে ভ্রমণ করতে পারবেন।
যাত্রীদের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার মেট্রোরেল চলবে; এমন গুঞ্জন শুরু হয়েছিল গত মে মাসের প্রথম সপ্তাহে। তবে এটি এখন আর গুঞ্জন নয়, বাস্তবে পরিণত হচ্ছে যাচ্ছে। ফলে দেশের প্রথম বিদ্যুৎচালিত দ্রুতগতির গণপরিবহন মেট্রোরেল সপ্তাহে সাতদিনই চলাচল করবে। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) যাত্রীরা মেট্রোরেলে ভ্রমণ করতে পারবেন।
অন্যদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ডাকা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির মধ্যে গত ১৯ জুলাই সন্ধ্যায় মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় দুর্বৃত্তরা। তারা স্টেশনের টিকিট ভেন্ডিং মেশিন, মূল স্টেশনে যাত্রী প্রবেশের পাঞ্চ মেশিনসহ সবকিছু ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। ফলে ৩৭ দিন বন্ধ থাকার পর গত ২৫ আগস্ট মেট্রোরেল চলাচল শুরু হলেও বন্ধ ছিল ওই দুটি স্টেশনে যাত্রী ওঠানামা। তবে সংস্কার করে বন্ধ থাকা স্টেশন দুটি চালুর উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সেই উদ্যোগের ফলে আপাতত কাজীপাড়া স্টেশন চালু হতে পারে আগামী ২০ সেপ্টেম্বর। আর মিরপুর-১০ স্টেশন চালু হতে আরও কয়েকমাস সময় লাগবে।
রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) মেট্রোরেল পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কাজীপাড়া স্টেশন পরিদর্শন করেছেন। তারা স্টেশনের বিভিন্ন কার্যক্রম ঘুরে দেখেছেন। পরিদর্শন টিমে থাকা দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে জানিয়েছেন, কাজীপাড়া স্টেশন চালুর বিষয়ে আমরা সবপক্ষের ক্লিয়ারেন্স পেয়েছি।
যদিও গত ২৭ জুলাই সদ্য বিদায়ী আওয়ামী লীগ সরকারের সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, ‘মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর ১০ স্টেশন ধ্বংসপ্রাপ্ত। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এটা এক বছরেও যন্ত্রপাতি এনে সচল করা সম্ভব হবে না।’ ২০ সেপ্টেম্বর কাজীপাড়া স্টেশন চালু হলে ওবায়দুল কাদেরের সেই ‘বচনের’ এক বছরের সমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে মাত্র ১ মাস ২৪ দিনেই।
অন্যদিকে, তখন ডিএমটিসিএলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ স্টেশন সংস্কার করে চালু করতে সাড়ে ৩০০ কোটি টাকার মতো খরচ করতে হবে। কিন্তু বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, দুটি স্টেশনের জন্য ১৩৮ কোটি টাকার বেশি লাগবে না।
সেই সময়ে ডিএমটিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদে ছিলেন এমএএন ছিদ্দিক। ক্ষমতার পালাবদল হলে তিনি আর কাজে গতি আনতে পারেননি। তার বিরুদ্ধে ডিএমটিসিএলে একক শাসন প্রতিষ্ঠাসহ নানা অভিযোগ ছিল। প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরাও ছিলেন অসন্তুষ্ট। পরে তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ গত ৯ সেপ্টেম্বর বাতিল করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রতিষ্ঠানটির অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মোহাম্মদ আব্দুর রউফকে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে মোহাম্মদ আব্দুর রউফ ঢাকা পোস্টকে বলেন, মেট্রোরেল আগামী ২০ তারিখে (শুক্রবার) চলবে এটা এখনো নিশ্চিত না। যদি সিদ্ধান্ত হয়, তাহলে ১৮ তারিখ (বুধবার) সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি জানানো হবে। আমাদের প্রস্তুতি আছে শুক্রবারে মেট্রোরেল চালানোর ঘোষণা এবং কাজীপাড়া স্টেশন চালু করার বিষয়টি। কিন্তু এখনো তারিখ ঠিক বলতে পারছি না।
তিনি বলেন, নিরাপত্তা বজায় রেখে কাজীপাড়ায় এই মুহূর্তে শেষ সময়ের কাজগুলো চলছে। আমাদের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি চলছে। গতকালকে আমাদের ফাইনাল টেস্টিং হয়েছে, সেটা আমরা পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। ক্লিয়ারেন্স আমরা সব পক্ষ থেকে পেয়েছি। টুকটাক কিছু বিষয় আছে সেগুলোর কাজ চলছে এই মুহূর্তে। এটাও সর্বোচ্চ ১৮ তারিখের মধ্যে হয়ে যাবে।
আব্দুর রউফ বলেন, আমাদের উপদেষ্টা বলেছেন শুক্রবার মেট্রোরেল চালাতে। আরেকটা চ্যালেঞ্জ ছিল কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ নাম্বার স্টেশন চালু করা। ক্ষতিগ্রস্ত কম হওয়ায় কাজীপাড়া স্টেশনের কাজটি আমরা দ্রুত করেছি। আগামী ১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই এই স্টেশন রেডি হয়ে যাবে। এরপর উপদেষ্টাকে বিষয়টি জানানো হবে। তিনি অনুমতি দিলেই তারপর যে কোনোদিন কাজীপাড়া স্টেশন চালু হয়ে যাবে।
মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশন সম্পর্কে বলেন, নষ্ট হওয়া যন্ত্রপাতি বিদেশ থেকে আমদানি করার কারণে মিরপুর-১০ স্টেশনের সংস্কার কাজ করতে বেশ কয়েক মাস সময় লাগবে। তবে আগে যেমন এক বছরের কথা বলা হয়েছিল, অত বেশি সময় প্রয়োজন হবে না। তার অর্ধেক সময়ের মধ্যেই আশা করি স্টেশন খুলে দিতে পারব।
এমএইচএন/জেডএস