অজানা জটিলতায় পেশাগত সনদ পাচ্ছেন না ৩ সহস্রাধিক নার্স

অজানা জটিলতায় পেশাগত সনদ পাচ্ছেন না ৩ সহস্রাধিক নার্স

বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ডিপ্লোমা ইন পেশেন্ট কেয়ার (নার্সিং) বিভাগ (৩ বছর মেয়াদি) থেকে পাস করেও পেশাগত সনদ পাচ্ছেন না ৩ হাজার ২০০ জন নার্স। ফলে দীর্ঘ শিক্ষা জীবন শেষ করেও কর্মজীবনে প্রবেশ করতে পারছেন না তারা। এতে করে এসব নার্সরা পড়েছেন চরম বিপাকে। আর এর পেছনে অজানা কারণকে দায়ী করেছেন ভুক্তভোগীরা। 

বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ডিপ্লোমা ইন পেশেন্ট কেয়ার (নার্সিং) বিভাগ (৩ বছর মেয়াদি) থেকে পাস করেও পেশাগত সনদ পাচ্ছেন না ৩ হাজার ২০০ জন নার্স। ফলে দীর্ঘ শিক্ষা জীবন শেষ করেও কর্মজীবনে প্রবেশ করতে পারছেন না তারা। এতে করে এসব নার্সরা পড়েছেন চরম বিপাকে। আর এর পেছনে অজানা কারণকে দায়ী করেছেন ভুক্তভোগীরা। 

শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে সোনার বাংলা নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন শতাধিক নার্স।

তারা বলেন, ২০০৫ সালে তৎকালীন সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ডিপ্লোমা ইন পেশেন্ট কেয়ার (নার্সিং) সহ মোট ৭টি হেলথ টেকনোলজি কোর্স চালু করে। পরে ২০০৯ সালে সরকার বদল হলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আন্ত জটিলতার সৃষ্টি হয়। যার ফলে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে পাস করা ডিপ্লোমা ইন পেশেন্ট কেয়ারসহ (নার্সিং) মোট ৭টি হেলথ টেকনোলজির ছাত্র-ছাত্রীরা সরকারি ও বেসরকারি চাকরি ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হতে শুরু করে। এমন অবস্থায় ২০১৩ সালে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ১৪৪তম বোর্ড সভায় ডিপ্লোমা ইন পেশেন্ট কেয়ার টেকনোলজি কোর্সের নাম পরিবর্তন করে অন্যান্য কোর্সের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ডিপ্লোমা ইন নার্সিং টেকনোলজি ৪ বছর মেয়াদি করা হয়।

তারা আরও বলেন, এরমধ্যে ৩ বছর মেয়াদি কোর্সে পড়াশোনা শেষ করা শিক্ষার্থীরা নিরুপায় হয়ে ২০১৬ সালে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করেন। দীর্ঘ শুনানির পরে হাইকোর্ট ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষে রায় দেয়। পরে বাংলাদেশ নার্সিং কাউন্সিল হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। সেখানেও দীর্ঘ শুনানি শেষে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়কে বহাল রেখে রায় দেয়।

সংবাদ সম্মেলনে সোনার বাংলা নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আলমগীর রানা অভিযোগ করে বলেন, হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ আমাদের পক্ষে রায় দিলেও সেটি বাস্তবায়নে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। পরে ছাত্র-ছাত্রীরা আবারও আন্দোলন শুরু করলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের ৫ম সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, বাংলাদেশ নার্সিং কাউন্সিলের নিয়ম অনুযায়ী কমপ্রিহেনসিভ পরীক্ষার মাধ্যমে পেশাগত সনদ (লাইসেন্স) প্রদান করতে হবে।

তিনি বলেন, একইসঙ্গে আমাদের ওপর ৬ মাসের প্রশিক্ষণ চাপিয়ে দেওয়া হয় এবং কারিগরি শিক্ষাবোর্ডে এই কোর্স চালাবেনা এমন সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। পরে বাধ্য হয়েই আমরা বাংলাদেশ নার্সিং কাউন্সিলের নিয়ম অনুযায়ী এক ও অভিন্ন প্রশ্নে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হই। একইসঙ্গে ৫ম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশের ৭৭টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জেলা সদর হাসপাতালে ৬ মাসের প্রশিক্ষণে অংশ নেই। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, এই প্রশিক্ষণে অংশ নিতে গিয়ে আমরা যে যেখানে কর্মরত ছিলাম সেখান থেকে চাকরিচ্যুত হই।

তিনি আরও বলেন,  সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, প্রশিক্ষণ শেষে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। সেখানেও আমরা উত্তীর্ণ হই। কিন্তু এত কিছুর পরেও আমাদের পেশাগত সনদ (লাইসেন্স) দেওয়া নিয়ে শুরু হয় টালবাহানা করা হচ্ছে। পরে আন্দোলন করলে সচিব স্বাস্থ্য ও শিক্ষা বিভাগের সচিব এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতিতে আমাদের ১০ জনকে এক ও অভিন্ন পেশাগত সনদ (লাইসেন্স) দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এরপর আবারও বন্ধ থাকে এই কার্যক্রম। পরে সবমিলিয়ে ৬০০ জন এই সনদ পেলেও এখনও  ৩ হাজার ২০০ জন সনদ পাইনি। এখানে আমাদের কোনো দোষ নেই। কিন্তু কেন বারবার হয়রানি করা হচ্ছে সেটি আমরা জানি না। অবিলম্বে আমাদের এক অভি সনদ দিতে হবে। না হলে আমরণ অনশন শুরু করব।

সংবাদ সম্মেলনে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে নার্সিং সম্পন্ন করার শতাধিক নার্স অংশ নেন।

আরএইচটি/এমএ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *