কুমিল্লায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ঝরছে, দুশ্চিন্তায় বানভাসিরা

কুমিল্লায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ঝরছে, দুশ্চিন্তায় বানভাসিরা

স্মরণকালের ভয়াবহ আকস্মিক বন্যায় ডুবেছে কুমিল্লা জেলা। বেশ কয়েকদিনের টানা ভারী বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ভয়াবহ এই বন্যার কবলে পড়েছে কুমিল্লাবাসী। বন্যার মাঝেও থেমে নেই বৃষ্টি। রোববার (২৫ আগস্ট) রাত থেকে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত একটানা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছে জেলার সবগুলো অঞ্চলে। 

স্মরণকালের ভয়াবহ আকস্মিক বন্যায় ডুবেছে কুমিল্লা জেলা। বেশ কয়েকদিনের টানা ভারী বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ভয়াবহ এই বন্যার কবলে পড়েছে কুমিল্লাবাসী। বন্যার মাঝেও থেমে নেই বৃষ্টি। রোববার (২৫ আগস্ট) রাত থেকে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত একটানা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছে জেলার সবগুলো অঞ্চলে। 

আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তা ও আকাশে মেঘের কারণে এই  বৃষ্টি পড়ছে। তবে যে পরিমাণ বৃষ্টি পড়ছে সেটি মিটার স্কেলের হিসেবে যোগ্য নয়। বৃষ্টির সঙ্গে হালকা-মাঝারি আকারের ঠান্ডা বাতাসও প্রবাহিত হচ্ছে। 

কুমিল্লা আবহাওয়া গবেষণা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ আরিফুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত এই বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। 

অপরদিকে, জেলার ১৭টি উপজেলার মধ্যে ১৪টি উপজেলাই বানের পানিতে আবদ্ধ। উজানের পানি আসা বন্ধ না হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতির দিকে। প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। তলিয়ে যাচ্ছে বসতভিটা। বাস্তুচ্যুত হয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠছেন মানুষ। 

জেলার বন্যাকবলিত বেশ কয়েকটি উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ এলাকায় রাস্তাঘাট চেনার কোনো উপায় নেই। কোনো কোনো সড়কে কোমরসমান পানি, আবার কোনোটিতে হাঁটুসমান। ঘরবাড়ির অর্ধেক পর্যন্ত ডুবেছে কিছু কিছু এলাকায়। কারও কারও ঘরে আবার খাট পর্যন্ত পানি উঠেছে। 

বানের পানিতে বাস্তুহারা হয়ে অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে উঠলেও বেশকিছু মানুষকে উঁচুস্থানে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিতে দেখা গেছে। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির ফলে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের দুর্ভোগের অন্ত নেই। 

বৃষ্টির এ ধারা অব্যাহত থাকলে বন্যার পানি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে, এই শঙ্কায় জেলার লাখ লাখ মানুষ দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। 

মোসলেম উদ্দিন নামের এক বানভাসি ঢাকা পোস্টকে বলেন, জীবনে এত পানি কখনও দেখিনি। ঘরের অর্ধেক ডুবে আছে পানিতে। এখন আবার বৃষ্টিও পড়ছে। এমন ভয়াবহ অভিজ্ঞতার সামনে কখনও পড়িনি। 

বুড়িচংয়ের বলরামপুর এলাকার কাজল মিস্ত্রি নামের এক বানভাসি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা যারা নিন্মআয়ের মানুষ আমাদের দুর্গতির শেষ নেই। পরিবার নিয়ে একটা আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছিলাম। এখন বাড়িটি দেখতে যাচ্ছি। কোনোরকমে বাঁশের খুঁটি দিয়ে ঠেস দিয়ে বসতঘরটি আটকে রেখেছিলাম। পানি যেভাবে বাড়ছে তাতে কখন ঘরটা ভেসে যায়, সেই দুশ্চিন্তায় আছি। তারপর বৃষ্টিও পড়ছে। সহজে পানি কমার কোনো লক্ষ্মণ দেখা যাচ্ছে না। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, গোমতীর পানি বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর পানি কমলেও নতুন নতুন এলাকায় পানির প্রবাহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মো. ওয়ালিউজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে গোমতী নদীর পানি। আমরা এখনও খুব ঝুঁকির মধ্যে আছি। নদীর পাড় ভেজা থাকা, উজান থেকে নেমে আসা পানি বন্ধ না হওয়া এবং বৃষ্টি পড়ার বিষয়গুলো আমাদের দুশ্চিন্তা কমাচ্ছে না। 

আরিফ আজগর/এএমক

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *