‌ঘরে হাঁটু পানি, কলার ভেলায় বৃদ্ধাকে নিয়ে আশ্রয় খুঁজছেন তারা

‌ঘরে হাঁটু পানি, কলার ভেলায় বৃদ্ধাকে নিয়ে আশ্রয় খুঁজছেন তারা

‌ঘরে হাঁটু পানি। থাকার কোনো ব্যবস্থা নেই। এজন্য ঘর থেকে বের হয়ে আইছি। কোথায় যাবো তা জানি না। তবে আগে রোডে (শুকনো স্থান) উঠি। তারপর বুঝা যাইবো কোন দিকে যাইতে পারি। কোথায় গিয়ে উঠতে পারি।

‌ঘরে হাঁটু পানি। থাকার কোনো ব্যবস্থা নেই। এজন্য ঘর থেকে বের হয়ে আইছি। কোথায় যাবো তা জানি না। তবে আগে রোডে (শুকনো স্থান) উঠি। তারপর বুঝা যাইবো কোন দিকে যাইতে পারি। কোথায় গিয়ে উঠতে পারি।

কলার ভেলায় করে রোকেয়া বেগম (৮৫) নামে এক বৃদ্ধা নারীকে নিয়ে আশ্রয়ের খোঁজে নেমে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের যাদৈয়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হালিম। 

প্রায় কোমর পরিমাণ পানির মধ্যে আব্দুল হালিম কলার ভেলা টেনে আনছেন। পেছন থেকে এক কিশোর তা ঠেলছেন। আর ভেলাতে শুয়ে আছেন এক বৃদ্ধা নারী।

কোথায় যাচ্ছেন এবং ওই নারীর কী হয়েছে— জানতে চাইলে আব্দুল হালিম বলেন, ভেলাতে শুয়ে থাকা ওই নারী আমার কিছু হন না। আমার মায়ের মতো এজন্য আমি ভেলাটা টেনে সহায়তা করছি। আমার মা বেঁচে থাকলে আমিও করতাম। কিশোরকে জিজ্ঞেস করলে জানায়, তার নানি হয়। তার আপুর বাড়িতে যাবেন তারা। 

কিন্তু পেছন দিয়ে হেঁটে আসা রোকেয়া বেগমের ছেলে জানিয়েছে, বাড়ির পাশের খায়রুল এনাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়ণ কেন্দ্রে জায়গা নেই। বাড়িতেও পানি। এ অবস্থাতে বাড়িতে থাকার সুযোগ নেই। এজন্য মেইন রোডে উঠে থাকার জন্য একটা ব্যবস্থা করে নেবেন তারা। 

শুক্রবার (২৩ আগস্ট) থেকে নোয়াখালীর বন্যার পানি লক্ষ্মীপুরে ঢুকতে শুরু করে। শনিবার (২৪ আগস্ট) বিকেল থেকে পানির চাপ বেড়ে যায়। এরমধ্যে শনিবার রাত থেকে লক্ষ্মীপুরে বৃষ্টি শুরু হয়। এতে সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ, চরশাহী, দিঘলী, উত্তর জয়পুর, বাঙ্গাখাঁ, মান্দারী, তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন, শাকচর ও চররুহিতা ইউনিয়ন প্লাবিত হয়। এসব ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ৪-৫ ফুট পানিতে কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। একই সঙ্গে লক্ষ্মীপুর জেলা শহর দিয়ে বয়ে যাওয়া রহমতখালী খালসহ ওয়াপদা খালগুলোতে পানি উপচে পড়ছে। এতে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সমসেরাবাদ, লামচরী, মধ্য বাঞ্চানগর, শিশু পার্ক এলাকা ও লাহারকান্দি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। এসব এলাকার ১২ হাজার ৭৫০ জন মানুষ আশ্রয়ণকেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে বলে জানা গেছে। তবে অধিকাংশ মানুষ নিজের বাড়ি-ঘর ছেড়ে স্বজনদের বাড়িতে গিয়ে উঠেছে। আবার অনেকেই নিজের ঘরে ছকি বা খাটের ওপর রান্না-বান্না করছেন বলে জানা গেছে।

এমএ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *