ভোলায় জোয়ারের পানিতে ব্রিজ ভেঙে খালে, দুর্ভোগে ১০ হাজার মানুষ

ভোলায় জোয়ারের পানিতে ব্রিজ ভেঙে খালে, দুর্ভোগে ১০ হাজার মানুষ

ভোলার বোরহানউদ্দিনে জোয়ারের পানির চাপে একটি লোহার ব্রিজ ভেঙে খালে পড়ার ঘটনা ঘটেছ। এতে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন তিন গ্রামের অন্তত দশ হাজার মানুষ। ব্রিজটি ভেঙে যাওয়া কেউ খাল পারাপার হচ্ছেন ডিঙি নৌকা দিয়ে, আবার কেউ কেউ সময়মতো নৌকা না পেয়ে খালে নেমে পানিতে ভিজে খালটি পার হচ্ছেন। তবে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে রয়েছেন স্কুলগামী কোমলমতি শিক্ষার্থী, অসুস্থ রোগী ও বয়স্করা। 

ভোলার বোরহানউদ্দিনে জোয়ারের পানির চাপে একটি লোহার ব্রিজ ভেঙে খালে পড়ার ঘটনা ঘটেছ। এতে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন তিন গ্রামের অন্তত দশ হাজার মানুষ। ব্রিজটি ভেঙে যাওয়া কেউ খাল পারাপার হচ্ছেন ডিঙি নৌকা দিয়ে, আবার কেউ কেউ সময়মতো নৌকা না পেয়ে খালে নেমে পানিতে ভিজে খালটি পার হচ্ছেন। তবে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে রয়েছেন স্কুলগামী কোমলমতি শিক্ষার্থী, অসুস্থ রোগী ও বয়স্করা। 

জানা গেছে, প্রতিদিন বিদ্যালয়ে যাওয়ার সময় নৌকা না পেয়ে অনেকে শিক্ষার্থী সময়মতো ক্লাসে উপস্থিত হতে পারে না। আবার নৌকা না পাওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন প্রতিদিন। অসুস্থ রোগীদের সময়মতো চিকিৎসকের কাছে নিতে পারছেন না রোগীর স্বজনরা। 

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ২০০৪-২০০৫ অর্থ বছরে আয়রন ব্রিজ প্রকল্পের আওতায় ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার সাচড়া ইউনিয়নের গোবিন্দপুর, দরুন ও সাচড়া গ্রামের মানুষের সহজ যাতায়াতের জন্য দরুন খালের ওপর ৮০ ফুট লম্বা ও প্রায় ১২ ফুট চওড়া একটি আয়রন ব্রিজ নির্মাণ করেন এলজিইডি। এই ব্রিজ দিয়ে সহজেই যাতায়াত করতেন ওই তিন গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ।

কিন্তু চলতি বছরের ১ জুলাই অতি জোয়ারের পানির চাপে ব্রিজের দুইপাশের মাটি সরে গিয়ে ব্রিজটি মাঝ বরাবর ভেঙে খালে পড়ে যায়। আর এতেই চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ওই তিন গ্রামের বাসিন্দারা।

গোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. ইসমাইল বলেন, আমরা গোবিন্দপুর গ্রামেরই বাসিন্দা। অনেক বছর পর্যন্ত দরুন খালের ওপরের এ ব্রিজটি দিয়ে যাতায়াত করতাম। ব্রিজটি আমাদের যোগাযোগের একমাত্র সহজ পথ ছিল। ব্রিজটি ভেঙে পড়ায় আমাদের সেই সহজ যোগাযোগ এখন বন্ধ। আমরা অনেকটাই ঘরবন্দি হয়ে পড়েছি।

মো. আলামিন বলেন, আমাদের গ্রামের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে স্বজনরা রোগীকে নিয়ে চরম বিপদে পড়েন। হঠাৎ গ্রামের কেউ একজন গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে যে দ্রুত হাসপাতালে নেব সেই সুযোগও আমাদের নেই।

সাচড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিদ্দিক মিয়া বলেন, ব্রিজ ভালো থাকতে আগে পায়ে হেঁটে ওই ব্রিজটির ওপর দিয়ে ৫-৭ মিনিটের মধ্যেই দরুন বাজারে যেতে পারতাম এবং যে কোনো যানবাহনে মাত্র ৩/৪ মিনিটের মধ্যে স্থানীয় দরুন বাজার মূল সড়কে পৌঁছে ১০/১৫ মিনিটের মধ্যে উপজেলা সদরে যেতে পারতাম। আমরা চাইলেও এখন আর সহজে বোরহানউদ্দিন উপজেলা শহরেও দ্রুত যেতে পারি না। 

ব্রিজটি জোয়ারের পানির চাপে ভেঙে যাওয়ায় এখন এ সহজ পথে চলাচল বন্ধ। এখন বিকল্প পথ দিয়ে ঘুরে ১০ মিনিটের রাস্তা প্রায় ১ ঘণ্টা পায়ে হেঁটে দরুন বাজার মূল সড়ক হয়ে উপজেলা সদরে যেতে সময় লাগে প্রায় ১ থেকে সোয়া ঘণ্টা।

স্থানীয় দরুণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী মিম ও হাসনাহেনা বলেন, ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ায় আমার স্কুলে যাতায়াত করতে অনেক সমস্যা হচ্ছে। স্কুলে যাওয়ার সময় ব্রিজের গোঁড়ায় নৌকা না পেলে দাঁড়িয়ে থাকি ফলে ঠিক সময়ে স্কুলের ক্লাসে উপস্থিত হতে পারি না। 

এ বিষয়ে বোরহানউদ্দিন উপজেলার এলজিইউডি প্রকৌশলী মো. মাইদুল ইসলাম খান বলেন, ২০০৪-২০০৫ অর্থ বছরে লোহার ব্রিজ প্রকল্পের মাধ্যমে সাচড়া ইউনিয়নের গৌবিন্দপুর, সাচড়া ও দরুন গ্রামের মানুষের সহজ যাতায়াতের জন্য দরুন খালের ওপর প্রায় ৮০ ফুট লম্বা ও প্রায় ১২ ফুট চওড়া এই ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু গত ১ জুলাই ব্রিজটি অতি জোয়ারের পানির চাপে দুপাশের মাটি সরে গিয়ে ভেঙে পড়েছে। এতে ওই তিন গ্রামের মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন।

একই স্থানে নতুন আরেকটি ব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে প্রকৌশলী আরও জানান, আপাতত গ্রামবাসীদের সুবিধার্থে ভেঙে যাওয়া ব্রিজটি অপসারণ করে ওই একই স্থানে উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে একটি অস্থায়ী কাঠের ব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনা আছে। সেখানে নতুন আরেকটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তবে কত টাকা ব্যয়ে ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।

একই স্থানে অতিদ্রুত নতুন একটি স্থায়ী ব্রিজ নির্মানের দাবি এই তিন গ্রামের বাসিন্দাদের। 

আরকে

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *