বন্যা ও পানিতে ডুবে মৃতদের দাফনের নিয়ম

বন্যা ও পানিতে ডুবে মৃতদের দাফনের নিয়ম

মানুষ এবং যেকোনো জীব মৃত্যু বরণ করে। জীব হিসেবে জ্ন্ম নিলে মৃত্যু বরণ করতেই হবে এটাই অমোঘ নিয়ম। সবাইকে এই সত্য বিশ্বাস করতে হয়, বিশ্বাস না করে কোনো উপায় নেই। মৃত্যু স্বাভাবিক মেনেই কেউ মারা গেলে অন্যরা তার দাফন, কাফনের ব্যবস্থা করেন। 

মানুষ এবং যেকোনো জীব মৃত্যু বরণ করে। জীব হিসেবে জ্ন্ম নিলে মৃত্যু বরণ করতেই হবে এটাই অমোঘ নিয়ম। সবাইকে এই সত্য বিশ্বাস করতে হয়, বিশ্বাস না করে কোনো উপায় নেই। মৃত্যু স্বাভাবিক মেনেই কেউ মারা গেলে অন্যরা তার দাফন, কাফনের ব্যবস্থা করেন। 

তবে কিছুর মৃত্যুর কারণে মৃত ব্যক্তিকে স্বাভাবিক নিয়মে দাফন করা যায় না। অনেক সময় লাশ পাওয়া যায় না। কখনো কখনো লাশ কবরস্থ করার জায়গাও পাওয়া যায় না। এমন মৃত্যুগুলো ঘটে থাকে জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, লঞ্চডুবি, ট্রলারডুবি, নৌকাডুবির কারণে।  এসব ব্যক্তির মরদেহ গোসল, কাফন, দাফন ও জানাজায় করণীয় বিষয়ে ইসলামি আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদদের মতামত হলো—

পানিতে ডুবে কোনো মুসলিম মারা গেলে তাকে গোসল করাতে হবে স্বাভাবিক মৃতদের মতোই। মৃতের শরীর পবিত্র থাকলেও গোসল করাতে হবে। তবে কোনো কারণে মৃতকে দ্বিতীয়বার গোসল দিতে না পারলে এমতাবস্থায় ওই মৃতব্যক্তির জানাজা পড়া যাবে, কিন্তু জীবিত ব্যক্তিরা গুনাহগার হবেন। 

কিন্তু পানি থেকে উঠানোর সময় যদি একবার অথবা দু’বার অথবা তিনবার গোসলের নিয়তে নেড়ে উঠানো হয়, তাহলে গোসল করানোর দায়িত্ব আদায় হয়ে যাবে।

কোনো কারণে যদি লাশ এতটুকু ফুলে যায় যে, হাত লাগানোর উপযুক্ত না থাকে অর্থাৎ গোসলের জন্য হাত লাগানোর দ্বারা লাশ ফেটে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে তাহলে এ ধরনের নরম লাশে শুধু পানি ঢেলে দেওয়াই যথেষ্ট। ওই অবস্থায় সাধারণ লাশের গোসলের মতো ডলাডলি জরুরি নয়। এরপর নিয়মমতো কাফন দিয়ে জানাজার নামাজ পড়ে দাফন করা হবে। 

তবে জানাজার নামাজ পড়ার পূর্বেই যদি লাশ ফেটে যায় তাহলে নামাজ পড়া ছাড়াই দাফন করে দিতে হবে। 

যদি লাশের অর্ধাংশের বেশি পাওয়া যায় গোসল দিতে হবে এবং জানাজা পড়তে হবে। এমনিভাবে মাথাসহ অর্ধেক পাওয়া গেলেও তার গোসল দিতে হবে এবং জানাজা পড়তে হবে। যদি শুধু মাথা পাওয়া যায় তবে দাফন করা হবে; গোসল এবং জানাজা লাগবে না। (ফতোয়ায়ে আলমগিরি: ১/১৫৯; আদ্দুররুল মুখতার: ২/১৯৯)

লাশ যদি দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে যায় কিন্তু ফেটে না যায় তাহলেও তার জানাজার নামাজ পড়তে হবে। আর লাশ ফুলে গিয়ে ফেটে গেলে জানাজার নামাজ পড়তে হবে না। (মারাকিল ফালাহ: ১/৪১০; ইমদাদুল আহকাম: ১/৮৩০)

পানিতে ডুবে কোনো ব্যক্তি মারা গেলে তিনি শহীদের মর্যাদা পাবেন। এক হাদিসে হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী সা. বলেছেন—

পানিতে ডুবে, কলেরায়, প্লেগে ও ভূমিধসে বা চাপা পড়ে মৃত ব্যক্তিরা শহীদ। (বুখারি ৭২০) 

অপর বর্ণনায় এসেছে, একবার রসুলুল্লাহ সা. বললেন, তোমরা তোমাদের মধ্যে কোন কোন ব্যক্তিকে শহীদ বলে গণ্য কর? তারা বলল, হে আল্লাহর রসুল! আল্লাহর পথে যে নিহত হয়, সে-ই শহীদ। তিনি বললেন, তাহলে তো আমার উম্মতের মধ্যে শহীদ খুবই অল্প। লোকেরা বলল, তাহলে কারা শহীদ বলে গণ্য হবে, হে আল্লাহর রসুল? তিনি বললেন, যে আল্লাহর পথে নিহত হয় সে শহীদ, যে আল্লাহর পথে মারা যায় সে শহীদ, যে প্লেগ রোগে মারা যায় সে শহীদ, যে পেটের রোগে প্রাণ হারায় সে শহীদ এবং যে পানিতে ডুবে মারা যায় সেও শহীদ। (রিয়াদুস সালেহিন ১৩৬২)

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *