আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ বেল্লালের সুচিকিৎসা হচ্ছে না টাকার অভাবে

আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ বেল্লালের সুচিকিৎসা হচ্ছে না টাকার অভাবে

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ঢাকায় দুই পায়ে গুলিবিদ্ধ হন পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার শিক্ষার্থী বেল্লাল। হাসপাতাল থেকে গুলি বের করার পর নিরাপত্তার শঙ্কায় তড়িঘড়ি করে গ্রামে চলে যান তিনি। তবে এখনও পুরোপুরি সুস্থ হননি তিনি। পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না। তাই ঠিক মতো ওষুধ কেনাসহ উন্নত চিকিৎসাও নিতে পারছেন না তিনি। 

বেল্লালের বাবা মো. আলাউদ্দিন গাজী পেশায় একজন সিএনজি চালক। 

পটুয়াখালীর বাউফলের কালাইয়া ইউনিয়নের কালাইয়া গ্রামে বাড়ি বেল্লালের। কালাইয়া ইদ্রিস মোল্লা ডিগ্রি কলেজ থেকে ২০২২ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর আর্থিক অনটনে বিএ ভর্তি হওয়া সম্ভব হয়নি। ইচ্ছা ছিল চাকরি করে পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনবেন। তাই মাস ছয়েক আগে রামপুরা টেলিভিশন ভবন এলাকায় এসএ নার্সিং হোম কেয়ার বিডি নামে একটি প্রতিষ্ঠানে পার্টটাইম চাকরি নেন তিনি। 

৫ আগস্ট ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির উল্টোদিকে মেরুল বাড্ডা এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন তিনি। বেল্লাল ঢাকা পোস্টকে জানান, ঘটনার দিন বন্ধুদের সঙ্গে আন্দোলনে গিয়ে দুই পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়েন সড়কে। কয়েকজন তাকে আফতাবনগরে নাগরিক স্পেশালাইজড হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে 

রোগির চাপ বেশি থাকায় তাকে নেওয়া হয় হেলথ কেয়ার নামে একই এলাকারই ছোট পরিসরে গড়ে ওঠা একটি চিকিৎসা কেন্দ্রে। দুই দিন পরে খবর পেয়ে ছুটে আসেন নারায়ণগঞ্জ এলাকায় পল্লী বিদ্যুতে কর্মরত বড় বোন আঁখি আক্তার। 

এরপর তার পায়ের গুলি বের করা হয় বাসাবো এলাকার মাল্টিকেয়ার হাসপাতালে। এরপর ৯ আগস্ট গ্রামের বাড়ি চলে আসেন বেল্লাল। ক্ষত সারাতে চার ঘণ্টা পর পর ওষুধ খেতে হয় তাকে। এখন পর্যন্ত দুপায়ে ভর করে দাঁড়াতে পারছেন না তিনি। রয়েছে তীব্র জ্বালা-যন্ত্রনা। স্থানীয় একটি ফার্মেসিতে ড্রেসিং করতে গেলে সেখানে গ্রাম্য চিকিৎসক বেল্লালের অবস্থা দেখে উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দিলেও সামর্থ্য নেই তার পরিবারের।  

বেল্লালের বাবা সিএনজিচালক আলাউদ্দিন গাজী ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুটো ছেলে-মেয়ে আমার। আমি সিএনজি চালাই। তেমন আয় হয় না। যা আয় করি তা দিয়ে কোনো রকমে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাতে হয়। এ অবস্থায় ছেলের চিকিৎসা করাবো কীভাবে? 

বেল্লালের মা নাজমা বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ছেলের পায়ে গুলি লাগার কথা শুনে মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে। সংসারের দুরবস্থা। ঋণ করে ঘরের কাজ করেছি। টাকার অভাবে ছেলেটার চিকিৎসা করাতে পারছি না। বিছানায় শুয়ে ব্যথায় কাতরাচ্ছে। মা হয়ে আর সহ্য করতে পারছি না।

আরিফুল ইসলাম সাগর/এনএফ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *