কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মৌটুপি গ্রামে দুই পক্ষের সংঘর্ষে কাইয়ূম হত্যার ঘটনায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা তোফাজ্জল হককে প্রধান আসামি করে ১৪০ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। এ মামলায় অজ্ঞাত আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মৌটুপি গ্রামে দুই পক্ষের সংঘর্ষে কাইয়ূম হত্যার ঘটনায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা তোফাজ্জল হককে প্রধান আসামি করে ১৪০ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। এ মামলায় অজ্ঞাত আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
রোববার (০৩ নভেম্বর) রাতে নিহত কাইয়ূমের স্ত্রী জোৎস্না বেগম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হাসমত উল্লাহ মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) ভৈরবের সাদেকপুর ইউনিয়নের মৌটুপি গ্রামে দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় কাইয়ূম মিয়া (৪৫) নিহত হন। ওই গ্রামের রমিজ উদ্দিন মিয়ার ছেলে কাইয়ূম। এ ঘটনায় আহত হন প্রায় ৫০ জন। তাদের মধ্যে গুরুতর আহতদের মধ্যে মোস্তাক, সায়জুল, মিলন, মস্তু মিয়া, মরক আলী ও লিটন মিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, এই দুই বংশের মধ্যে ৫৬ বছর ধরে চলছে দ্বন্দ্ব। বংশ দুটি হলো উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের মৌটুপি গ্রামের বর্তমান চেয়ারম্যানের সরকারবাড়ি ও সাবেক চেয়ারম্যানের কর্তাবাড়ি। সরকারবাড়ি পক্ষে নেতৃত্ব দেন ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের নেতা সরকার শেফায়াত উল্লাহ। আরেকপক্ষ কর্তাবাড়ির নেতৃত্ব দেন সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপির নেতা তোফাজ্জল হোসেন৷
দুই বংশের দ্বন্দ্বে ইকবাল মিয়াসহ এ পর্যন্ত ১৪ জন খুন হয়েছেন।
জানা গেছে, গত ঈদের পর দিন তোফাজ্জল হকের গোষ্ঠীর নাদিম কর্তা সরকার বাড়ির লোকজনের হাতে খুনের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনার জেরে ১৩ সেপ্টেম্বর কর্তা বাড়ির লোকজনের হাতে সরকার বাড়ির ইকবাল খুন হন বলে অভিযোগ ওঠে। দুটি খুনের ঘটনায় উভয়পক্ষ পাল্টাপাল্টি মামলা করে। কর্তা বাড়ির নাদিম হত্যা মামলার আসামিরা আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন।
এসব ঘটনার জেরে গত বৃহস্পতিবার দুই পক্ষের মধ্যে ফের সংঘর্ষ হয়। উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। এতে বল্লমের আঘাতে ঘটনাস্থলেই কাইয়ূম মিয়া নামে একজন নিহত হন। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হন।
ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হাসমত উল্লাহ জানান, নিহত কাইয়ূমের স্ত্রী মামলা করেছেন। এ ঘটনা তদন্ত করে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মোহাম্মদ এনামুল হক হৃদয়/এফআরএস