দরপত্র জমাদানে বাধা দেওয়ায় যুবদলের ৩ নেতা বহিষ্কার, কমিটি বিলুপ্ত

দরপত্র জমাদানে বাধা দেওয়ায় যুবদলের ৩ নেতা বহিষ্কার, কমিটি বিলুপ্ত

লালমনিরহাটে দরপত্র (টেন্ডার) জমাদানে বাধা দেওয়ার অভিযোগে আটক ও পরে মুক্তি পাওয়া যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর আলম জুলহাসসহ (৪০) তিন যুবদল নেতাকে বহিষ্কার এবং লালমনিরহাট জেলা যুবদল কমিটিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

লালমনিরহাটে দরপত্র (টেন্ডার) জমাদানে বাধা দেওয়ার অভিযোগে আটক ও পরে মুক্তি পাওয়া যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর আলম জুলহাসসহ (৪০) তিন যুবদল নেতাকে বহিষ্কার এবং লালমনিরহাট জেলা যুবদল কমিটিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে। এর আগে বুধবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল চত্বরে যুবদল নেতা জুলহাসকে দরপত্র জমাদানে বাধা দেওয়ার অভিযোগে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন সেনাসদস্যরা। যদিও লিখিত কোনো অভিযোগ না থাকায় ওইদিন সন্ধ্যায় তাকে ছেড়ে দেয় সদর থানা পুলিশ। যুবদল নেতাকে আটক ও পরে ছেড়ে দেওয়ার নাটক নিয়ে দেশজুড়ে নানা সমালোচনার মুখে পড়ে পুলিশসহ খোদ যুবদল। আর সুশীলসমাজ বলছে, এটা ক্ষমতা দেখানোর প্রভাব।

যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর আলম জুলহাস লালমনিরহাট পৌরসভা গেট এলাকার বাসিন্দা। তিনি লালমনিরহাট পৌর যুবদলের আহ্বায়ক ও জেলা যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দখল, টেন্ডার-সন্ত্রাস এবং দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও দলের নীতি, আদর্শ ও সংহতি পরিপন্থি নানা অনাচারের কারণে লালমনিরহাট জেলা যুবদলের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। একই অপরাধে লালমনিরহাট পৌর যুবদলের আহ্বায়ক ও জেলা যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম জুলহাস, পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোমিনুল ইসলাম এবং পৌর ৭নং ওয়ার্ড যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন মিয়াকে প্রাথমিক সদস্যসহ সকল ধরনের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এ সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সম্পাদক নূরুল ইসলাম নয়ন অনুমোদন করেছেন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আড়াইশত শয্যাবিশিষ্ট লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের রোগীদের পথ্যসামগ্রী সরবরাহসহ তিনটি গ্রুপে সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য দরপত্র আহ্বান করে হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডা. আব্দুল মোকাদ্দেম। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী বুধবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ের নিদিষ্ট দরবক্সে দরপত্র জমা দিতে বলা হয়। হাসপাতালের দরপত্র জমাদানে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে দরপত্রবক্স তথা হাসপাতাল চত্বরে নিরাপত্তা জোরদার করে পুলিশ। সেই পুলিশের নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দিতে সকাল থেকে অন্যদের দরপত্র জমাদানে বাধা দিয়ে আসছিলেন লালমনিরহাট পৌর যুবদলের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম  জুলহাস। এ সময় দরপত্র গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষকেও লাঞ্ছিত করেন তিনি।

অন্য দরদাতারা দরপত্র জমাদান করতে না পেরে সেনা সদস্যদের খবর দেন। খবর পেয়ে সেনাসদস্যরা এসে ধাওয়া দিয়ে যুবদল নেতা জুলহাসকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ হলে ২৪ জন দরদাতা তাদের দরপত্র জমা দেন।

এ ঘটনায় পরবর্তীতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অভিযোগ দায়ের করেনি। একইসঙ্গে হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর আলম জুলহাসকে সন্ধ্যায় ছেড়ে দেয় সদর থানা পুলিশ। যুবদলের নেতা-কর্মীদের এমন আচরণের কারণে জেলা যুবদলের কমিটি বিলুপ্তসহ তিন নেতাকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় যুবদল।

কমিটি বিলুপ্তের বিষয়ে জানতে জেলা নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও মন্তব্য করতে কেউ রাজি হননি।

নিয়াজ আহমেদ সিপন/এমজেইউ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *