আখাউড়া স্থলবন্দরে গত দুই বছর ধরে গুদামে পড়ে থাকা ভারত থেকে আমদানি করা ২২৮ টন গম পচে নষ্ট হয়ে গেছে। শুল্ক কর্তৃপক্ষের গড়িমসির কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে খালাস না করায় গমগুলো নষ্ট হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান।
আখাউড়া স্থলবন্দরে গত দুই বছর ধরে গুদামে পড়ে থাকা ভারত থেকে আমদানি করা ২২৮ টন গম পচে নষ্ট হয়ে গেছে। শুল্ক কর্তৃপক্ষের গড়িমসির কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে খালাস না করায় গমগুলো নষ্ট হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান।
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের দাবি, নষ্ট গমগুলোর ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে অন্তত ৮০ লাখ টাকা। তা ছাড়া দফায় দফায় চিঠি দেওয়ার পরেও আমদানিকারক গমগুলো ছাড়াতে আগ্রহী না হওয়ায় বিপাকে পড়ে কর্তৃপক্ষ। সেক্ষেত্রে সঠিক সময়ে খালাস না হওয়ায় গমগুলো এখন পশু-পাখিদের খাদ্যেরও উপযোগী নয়।
জানা যায়, ২০২২ সালে শুল্কমুক্ত সুবিধায় ভারত থেকে প্রায় সাড়ে ১১ হাজার টন গম আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি করেছিল চট্টগ্রামের আলম ট্রেডার্স। প্রতি টন গমের মূল্য ছিল ৩২৫ থেকে ৩৫০ মার্কিন ডলার। বাজারে গমের চাহিদা থাকায় চালানগুলো দ্রুত খালাস করা হয়েছিল। তবে সেই বছর জুনে ভারতে ভারী বর্ষণের কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় গম আমদানি সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
এরপর আগস্টে আটকে থাকা গমের চালানগুলো পুনরায় বন্দরে আসতে শুরু করে। কিন্তু দীর্ঘ সময় গুদামে পড়ে থাকার ফলে ২২৮ টন গম নষ্ট হয়ে যায়, যা বর্তমানে পশুখাদ্য হিসেবেও ব্যবহারযোগ্য নয় বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান।
তবে ভালো গমের সঙ্গে বৃষ্টিতে ভেজা গম পাঠানো হয়েছে দাবি করে আলম ট্রেডার্সের আখাউড়া স্থলবন্দর প্রতিনিধি মো. আক্তার হোসেন বলেন, গমগুলো ভেজা থাকায় রপ্তানিকারকের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে খালাসের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তবে শুল্ক কর্তৃপক্ষের দীর্ঘসূত্রতার কারণে সঠিক সময়ে খালাস করা সম্ভব হয়নি। এতে গমগুলো গুদামে পড়ে থাকার কারণে সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, এখন আর এগুলো ছাড়ানোর কোনো অর্থ নেই, কারণ গমগুলো পশুখাদ্য হিসেবেও ব্যবহারের উপযোগী নয়।
আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশনের সহকারী কমিশনার মো. ইমরান হোসেন বলেন, গমগুলো ভেজা এবং নিম্নমানের হওয়ায় আমদানি নীতিমালা অনুযায়ী ছাড় দেওয়া সম্ভব ছিল না। তখন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়েও কোনো সাড়া মেলেনি, তারা গমগুলো খালাসে আগ্রহ দেখায়নি।
তিনি আরও বলেন, গমগুলো পশুখাদ্য হিসেবে উপযুক্ত কি-না, তা পরীক্ষা করার জন্য নমুনা পাঠানো হয়েছিল। তবে প্রাথমিক পরীক্ষার রিপোর্টে বিষয়টি নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ না থাকায় পুনরায় রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। নতুন রিপোর্ট আসার পর গমগুলো বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করে ধ্বংস করার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
মাজহারুল করিম অভি/এএমকে