নতুন রাষ্ট্রপতি আনতে দুই দিনের সময় নিলেন সারজিস-হাসনাত

নতুন রাষ্ট্রপতি আনতে দুই দিনের সময় নিলেন সারজিস-হাসনাত

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন কয়েক শতাধিক মানুষ। তাদের শান্ত করতে বঙ্গভবনের সামনে আসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম। তারা বিক্ষোভকারীদের আশ্বস্ত করেন যে আগামী দুই দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মাদ শাহাবুদ্দিনকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে।

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন কয়েক শতাধিক মানুষ। তাদের শান্ত করতে বঙ্গভবনের সামনে আসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম। তারা বিক্ষোভকারীদের আশ্বস্ত করেন যে আগামী দুই দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মাদ শাহাবুদ্দিনকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে।

মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে রাষ্ট্রপতির বাসভবন বঙ্গভবনের সামনে বিক্ষোভ করে আসছিল বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা।

এদিন রাত সোয়া ১১টায় সরেজমিনে দেখা যায়, বঙ্গভবনের প্রবেশ মুখে সেনাবাহিনীর ব্যারিকেড অবস্থান নিয়ে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে নানা স্লোগান দিচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা। তাদের দাবি, রাষ্ট্রপতি ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লোক। তিনি শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে মিথ্যাচার করেছেন। যার মাধ্যম শপথ ভঙ্গ করেছেন এবং রাষ্ট্রপতি হিসেবে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন। তাকে পদত্যাগ করতে হবে।

বিক্ষোভকারী আবদুল মঈন বলেন, রাষ্ট্রপতি নিজেই তার বক্তব্য নিয়ে মিথ্যাচার করেছেন। তিনি ৫ আগস্ট বলেছেন শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন এবং সেটা তিনি গ্রহণ করেছেন। এখন তিনি একটি পত্রিকার সম্পাদককে বলেছেন শেখ হাসিনার পদত্যাগের কোনো দালিলিক প্রমাণ তার কাছে নেই।

এর আগে রাত ৮টা ২০ মিনিটে বঙ্গভবনের সামনের ব্যারিকেড ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ সদস্যরা তাদের বাধা দেন। বিক্ষোভকারীদের দমনে সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ে।

পুলিশ পক্ষে থেকে দাবি করা হয়, বিক্ষোভকারীদের হামলায় কয়েকজন পুলিশ আহত হয়েছেন।

ডিএমপির মিডিয়া বিভাগের ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, বিকেল ৪টা থেকে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে কয়েক শতাধিক মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। একপর্যায়ে তারা বঙ্গভবনে সামনের একটি রাস্তায় বন্ধ করে দেন।  বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে বঙ্গভবনে ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এতে বিক্ষোভকারীদের হামলায় কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

এদিকে রাত সাড়ে ১১টায় বঙ্গভবনে সামনে আসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহর ও সারজিস আলম। তারা বিক্ষোভকারীদের আশ্বস্ত করেন যে, আগামী দুই দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মাদ শাহাবুদ্দিনকে পদত্যাগ বাধ্য করবেন। অর্থাৎ আগামী বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) মধ্যে রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ না করলে তারাও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিয়ে কর্মসূচিতে যাবেন।

সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আপনার জানেন রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন রাষ্ট্রের প্রধান। রাষ্ট্রপ্রধান যখন না থাকে, তাকে যখন অপসারণ করা হয়, তখন সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির জায়গায় থাকেন স্পিকার। কিন্তু যখন স্পিকার থাকেন না তখন এই পদ শূন্য হয়ে যাবে। তার সুযোগ নিয়ে বিদেশি শক্তি, যারা আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে, যারা ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেয়, তারা নানা ধরনের ষড়যন্ত্রের পাঁয়তারা করছেন। আমরা কি তাদের ষড়যন্ত্র করার সুযোগ দেব? না।

তিনি আরও বলেন, ষড়যন্ত্রকারী মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিনকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে। কিন্তু পরবর্তী রাষ্ট্রপতি চূড়ান্ত হওয়ার আগে যদি এই রাষ্ট্রকে রাষ্ট্রপতিহীন করে ফেলা হয় তাহলে বিদেশি শক্তিরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। আমরা তা হতে দেব না। তাই আগামী দুই দিন বুধবার ও বৃহস্পতিবার সবার সঙ্গে কথা বলে এমন একজনকে রাষ্ট্রপতি করা হবে যাকে নিয়ে কোনো বির্তক থাকবে না। তারপর শাহাবুদ্দিনকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে। এ জন্য আমাদের দুই দিন সময় দিন।

সর্বশেষ রাত সোয়া ১২টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দেখা যায়, হাসনাত আবদুল্লাহর ও সারজিস আলমের দুই দিনের সময় নেওয়া পর বিক্ষোভকারীদের একাংশ চলে গেলেও অন্যরা বঙ্গভবনে সামনে অবস্থান নিয়ে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখেন।

সে সময়েও বিক্ষোভকারী রুবেল বলেন, সময় কেন লাগবে (পদত্যাগের জন্য)। আরও কি রক্ত লাগবে নাকি। চুপ্পু (রাষ্ট্রপতির ডাক নাম) পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরা বঙ্গভবন ছেড়ে যাব না।

এআর/এফআরএস

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *