যুবদল সভাপতির তিন শতাধিক গাছ কেটেছেন আ. লীগ কর্মী 

যুবদল সভাপতির তিন শতাধিক গাছ কেটেছেন আ. লীগ কর্মী 

আওয়ামী লীগ কর্মী সেলিম মোল্যার ভাই যুবদলের একটি ইউনিটের সভাপতি। দেশের বৃহৎ দুই দলের সমর্থক দুই ভাইয়ের মধ্যে রাজনীতি ও জমি সংক্রান্ত বিরোধ দীর্ঘদিনের। বিরোধের জেরে আওয়ামী লীগ কর্মী সেলিম মোল্যা তার ভাই যুবদল সভাপতি সোহরাব মোল্যার তিন শতাধিক গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বিচার চেয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন যুবদল সভাপতি সোহরাব।

আওয়ামী লীগ কর্মী সেলিম মোল্যার ভাই যুবদলের একটি ইউনিটের সভাপতি। দেশের বৃহৎ দুই দলের সমর্থক দুই ভাইয়ের মধ্যে রাজনীতি ও জমি সংক্রান্ত বিরোধ দীর্ঘদিনের। বিরোধের জেরে আওয়ামী লীগ কর্মী সেলিম মোল্যা তার ভাই যুবদল সভাপতি সোহরাব মোল্যার তিন শতাধিক গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বিচার চেয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন যুবদল সভাপতি সোহরাব।

শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার চরভাগা ইউনিয়নের ভূইয়াকান্দি গ্রামে গিয়ে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

স্থানীয় ও থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ভূইয়া কান্দি গ্রামের মৃত হানিফ মোল্যার ছেলে সেলিম মোল্যা ও কাশেম মোল্যা আওয়ামী লীগের সমর্থক। কাশেম মোল্যার ছেলে রফিক মোল্যা চরভাগা ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। হানিফ মোল্যার আরেক ছেলে সোহরাব মোল্যা চারভাগা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি। দীর্ঘদিন ধরে সোহরাব মোল্যার সঙ্গে তার দুই ভাই সেলিম মোল্যা ও কাশেম মোল্যার জমি সংক্রান্ত ও রাজনৈতিক বিরোধ চলে আসছে। বিরোধের সূত্র ধরে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে সেলিম মোল্যা, আবুল কাশেম মোল্যা, সিহাব মোল্যা, রফিক মোল্যা মিলে সোহরাব মোল্যার রোপণকৃত ২৩০টি কাঠ ও ১০০ কলা গাছ কেটে ফেলে। খবর পেয়ে সোহরাব মোল্যা বাধা দিতে গেলে তারা গালিগালাজসহ হত্যার হুমকি প্রদান করে। পরবর্তীতে স্থানীয়দের তোপের মুখে সেলিম মোল্যা ও কাশেম মোল্যাসহ অন্যান্যরা অন্যত্র চলে যান। কাঠ ও কলা গাছ কাটায় সোহরাব মোল্যার দাবি বর্তমান বাজারে প্রায় ২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে তার। বিচার চেয়ে ভুক্তভোগী যুবদল সভাপতি সোহরাব মোল্যা সখিপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।

বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় নিজাম পেদা নামের একজন ঢাকা পোস্টকে বলেন, জমি ও রাজনীতি নিয়ে বিরোধ থাকতেই পারে। কিন্তু গাছ কী দোষ করেছে। গাছ গাছের জায়গায় থাকত, কাগজপত্রে জমির মালিক যিনি, তিনি পরবর্তীতে গাছগুলো নিতে পারতেন। গাছগুলো কাটা অন্যায় হয়েছে।

কবির মাল কর্তনকৃত গাছগুলোর বাগানে বদলির কাজ করতেন। তিনি বলেন, আজ ভোর ৫টার দিকে গাছ কাটা হয়েছে। আমাদেরকেও মামলার ভয় দেখাচ্ছেন সেলিম ও কাশেম মোল্যা। এভাবে গাছ কাটা অন্যায়। এর সুষ্ঠু বিচার হওয়া দরকার।

ভুক্তভোগী যুবদল সভাপতি সোহরাব মোল্যা ঢাকা পোস্টকে বলেন, কাসেম মোল্যা, সেলিম মোল্যা আওয়ামী লীগের সমর্থক, তারা সন্ত্রাসী। আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে তারা আমার জমি দখল করে খেয়েছে। আমার জমিতে আমি গাছ লাগিয়েছি, সেই গাছ তারা কেটে ফেলেছে। আমি থানায় অভিযোগ দিয়েছি। এ ঘটনায় আমি সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।

অভিযুক্ত সেলিম মোল্যা ঢাকা পোস্টকে বলেন, যে জমির গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ দিয়েছে সোহরাব সেই জমি আমি প্রায় ২০ বছর ধরে ভোগদখলে আছি। বাবার মৃত্যুর পর আমরা ভাই-ভাই মিলে সবাই সবার মতো জমি দখলে আছি। কারও সঙ্গে কারও কোনো সমস্যা নেই। সম্প্রতি সোহরাব জমি নতুন করে ভাগ করার প্রস্তাব দিয়েছে। ভাগ করতে হলে সব ভাই বসে জমি ভাগ করে নেব। কিন্তু সোহরাব নিজেই আমার রোপণকৃত কলা গাছ কেটে সেখানে অন্য গাছ রোপণ করেছে। আমাদের বিরুদ্ধে থানায় যে অভিযোগ দিয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ভাইদের মধ্যে সোহরাবই বিএনপি করে। আমরা কোনো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নই। আমাদের জমি দখল করতেই সোহরাব আমাদেরকে আওয়ামী লীগ বানিয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে সখিপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবায়দুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, সোহরাব মোল্যা নামে এক ব্যক্তি গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ দিয়েছে থানায়। অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে পুলিশ।

সাইফ রুদাদ/এমজেইউ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *