রতন টাটার মৃত্যুতে শোক নেতানিয়াহুর, বললেন— ভারতের গর্বিত সন্তান

রতন টাটার মৃত্যুতে শোক নেতানিয়াহুর, বললেন— ভারতের গর্বিত সন্তান

ভারতীয় শিল্পপতি এবং বৈশ্বিক আইকন রতন টাটার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেছেন, তার দেশের অনেক মানুষ রতন টাটার মৃত্যুতে শোকাহত।

ভারতীয় শিল্পপতি এবং বৈশ্বিক আইকন রতন টাটার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেছেন, তার দেশের অনেক মানুষ রতন টাটার মৃত্যুতে শোকাহত।

রতন টাটা গত ৯ অক্টোবর মুম্বাইয়ের ব্রীচ ক্যান্ডি হাসপাতালে মারা যান। বয়সজনিত কারণে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সেখানে তাকে ভর্তি করা হয়েছিল। রোববার (১৩ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

ভারত-ইসরায়েল সম্পর্কের সেতুবন্ধনে রতন টাটার অবদানের প্রশংসা করে চিঠিতে নেতানিয়াহু লিখেছেন, “আমি এবং ইসরায়েলের অনেকেই ভারতের গর্বিত পুত্র এবং আমাদের দুই দেশের বন্ধুত্বের চ্যাম্পিয়ন রতন নেভাল টাটার মৃত্যুর জন্য শোক প্রকাশ করছি।”

এসময় ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে “রতনের পরিবারের প্রতি সমবেদনা পৌঁছে” দিতেও অনুরোধ করেন নেতানিয়াহু।

মৃত্যুকালে রতন টাটার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন তিনি। এজন্য নিয়মিত চেকআপেও থাকতে হতো তাকে। জানা গিয়েছিল, হেলথ চেকআপের জন্য হাসপাতালে গিয়েছিলেন রতন টাটা।

কিন্তু বুধবার বিকেলে ভারতীয় একাধিক সংবাদমাধ্যম দাবি করে, রতন টাটা শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। প্রাথমিকভাবে শোনা গিয়েছিল, হঠাৎ রক্তচাপ নেমে যাওয়ায় কারণে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শেষে বুধবার রাতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, ১৯৩৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর মুম্বাইয়ে পারসিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন রতন টাটা। বাবা নভল টাটার জন্ম গুজরাটের সুরাটে। পরে টাটা পরিবার তাকে দত্তক নেয়। রতন টাটার মা সুনি টাটা আবার সরাসরি জামশেদজি টাটার পরিবারের অংশ। রতন টাটার পিতামহ হরমসজি টাটা জন্মসূত্রেই ওই পরিবারের সদস্য। রতন টাটার যখন ১০ বছর বয়স, সেই সময় তার মা-বাবা আলাদা হয়ে যান। রতন টাটার নিজের এক ভাইও রয়েছেন, জিমি টাটা। সৎ ভাই নোয়েল টাটা। নভল টাটা দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন সিমোন টাটাকে। নোয়েল তাদেরই সন্তান।

মুম্বাই, শিমলা হয়ে নিউইয়র্কের রিভারডেল কান্ট্রি স্কুলে পড়তে যান রতন টাটা। ১৯৫৯ সালে স্থাপত্য নিয়ে স্নাতকস্তরে ভর্তি হন কর্নেল ইউনিভার্সিটিতে। সাতের দশকে টাটা গ্রুপে ম্যানেজার পদে দায়িত্ব পান রতন টাটা। ১৯৯১ সালে জেআরডি টাটা দায়িত্ব ছাড়লে রতন টাটাকে নিজের উত্তরাধিকারী ঘোষণা করেন। প্রথমে তাকে নিয়ে আপত্তি ছিল গ্রুপের ভেতরে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে গ্রহণযোগ্যতা বাড়ে তার।

যে ২১ বছর রতন টাটার হাতে টাটা গ্রুপের দায়িত্ব ছিল, তাতে গ্রুপের আয় বেড়ে হয় ৪০ গুণ, মুনাফা বাড়ে ৫০ গুণ। মধ্যবিত্তকে চার চাকার স্বপ্ন দেখান রতন টাটাই। পশ্চিমবঙ্গের সিঙ্গুরে ন্যানো কারখানা গড়ে ওঠে। যদিও রাজনৈতিক টানাপড়েনে পরে গুজরাটে কারখানা সরিয়ে নিয়ে যেতে হয়।

৭৫ বছর বয়সে ২০১২ সালে টাটা গ্রুপের নির্বাহী ক্ষমতা ছেড়ে দেন রতন টাটা। সেই জায়গায় পারিবারিক আত্মীয় সাইরাস মিস্ত্রিকে আনা হয়। কিন্তু ২০১৬ সালে সাইরাসকে টাটা সন্সের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ফের অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্বে ফেরেন রতন টাটা।

এরপর ২০১৭ সালে নটরাজন চন্দ্রশেখরণকে অন্তর্বর্তীকালীন চেয়ারম্যান ঘোষণা করা হয়। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে সমাজসেবামূলক কাজে আরও বেশি করে যুক্ত হয়েছিলেন রতন টাটা।

২০০০ সালে ‘পদ্মভূষণ’ সম্মান পান রতন টাটা। ২০০৮ সালে পান ‘পদ্ম বিভূষণ সম্মান’। মহারাষ্ট্র, আসাম সরকারও তাকে সম্মান প্রদান করে। ইউনিভার্সিটি অব কেমব্রিজ, লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্স, আইআইটি বম্বে, ইয়েল ইউনিভার্সিটি, রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ, রাজা তৃতীয় চার্লসের থেকেও বিশেষভাবে সম্মানিত হন।

টিএম

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *