সিনিয়র অ্যাডভোকেট হলেন সেই অন্ধ আইনজীবী

সিনিয়র অ্যাডভোকেট হলেন সেই অন্ধ আইনজীবী

সিনিয়র অ্যাডভোকেট হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছেন দৃষ্টিহীন আইনজীবী মো. মোশাররফ হোসেন মজুমদার। প্রধান বিচারপতি ড.  সৈয়দ রেফাত আহমেদের সভাপতিত্বে এনরোলমেন্ট কমিটি আপিল বিভাগের ৫৪ আইনজীবীকে সিনিয়র অ্যাডভোকেট হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছেন। তার মধ্যে স্থান পেয়েছেন মোশাররফ। ফলে সুপ্রিম কোর্টের ইতিহাসে কোনো দৃষ্টিহীন আইনজীবী সিনিয়র হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়া তিনিই প্রথম ব্যক্তি।

সিনিয়র অ্যাডভোকেট হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছেন দৃষ্টিহীন আইনজীবী মো. মোশাররফ হোসেন মজুমদার। প্রধান বিচারপতি ড.  সৈয়দ রেফাত আহমেদের সভাপতিত্বে এনরোলমেন্ট কমিটি আপিল বিভাগের ৫৪ আইনজীবীকে সিনিয়র অ্যাডভোকেট হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছেন। তার মধ্যে স্থান পেয়েছেন মোশাররফ। ফলে সুপ্রিম কোর্টের ইতিহাসে কোনো দৃষ্টিহীন আইনজীবী সিনিয়র হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়া তিনিই প্রথম ব্যক্তি।

যারা আইন পেশায় আসেন তাদের স্বপ্ন থাকে সিনিয়র অ্যাডভোকেট হওয়ার। সেই  স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় আনন্দে ভাসছেন মোশাররফ হোসেন মজুমদার। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, অনেক আগেই আমার সিনিয়র অ্যাডভোকেট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আগে দলীয়ভাবে সিনিয়র অ্যাডভোকেট তালিকাভুক্ত হওয়ার কারণে আমার সে সৌভাগ্য হয়নি।

মোশাররফ হোসেন মজুমদার বলেন, বর্তমান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ যোগ্যতার ভিত্তিতে ও নিরপেক্ষভাবে সিনিয়র অ্যাডভোকেট তালিকাভুক্ত করেছেন। এ কারণে অনেক বছর পর হলেও সিনিয়র অ্যাডভোকেট হতে পেরেছি। মাননীয় প্রধান বিচারপতির নিকট আমি কৃতজ্ঞ।

১৯৫৮ সালের ৬ জুন ফেনী জেলায় জন্ম গ্রহণ করেন মোশাররফ হোসেন মজুমদার। চার বছর বয়সেই টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়ে হারিয়েছিলেন দৃষ্টিশক্তি। কিন্তু দমে যাননি। চোখের সামনের অন্ধকার দূরে ঠেলে শিক্ষার আলোয় আলোকিত হওয়ার অদম্য ইচ্ছায় এগিয়ে গেছেন মোশাররফ হোসেন মজুমদার। বাবার অনুপ্রেরণায় ব্রেইল পদ্ধতিতে (কাগজের ওপর বিন্দুকে ফুটিয়ে তুলে লেখার পদ্ধতি, এসব বিন্দুতে আঙুল বুলিয়ে দৃষ্টিহীনরা পড়েন) শুরু করেন পড়ালেখা।

দৃষ্টিহীন মোশাররফ পড়াশোনায় কতটা মেধাবী ছিলেন— এর প্রথম স্বাক্ষর রাখেন ১৯৭৭ সালে। ওই বছর উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষায় যশোর শিক্ষা বোর্ডে মানবিক বিভাগ থেকে ১৯তম স্ট্যান্ড করে তাক লাগিয়ে দেন সবাইকে। ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে। তিনি ছিলেন ঢাবির আইন বিভাগের দৃষ্টিশক্তিহীন প্রথম শিক্ষার্থী। আইন পড়া শেষে ১৯৮৩ সালে ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন মোশাররফ। এরপরই শুরু হয় আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন। ১৯৮৫ সালে অ্যাসিস্ট্যান্ট পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। ১৯৮৯ সালে হাইকোর্টে আইনপেশা পরিচালনার অনুমতি পান। ২০০২ সাল থেকে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন দৃষ্টিহীন মোশাররফ। শিশু বয়সে চোখের আলো নিভে গেলেও ‘মনের আলো’ জ্বালিয়ে চার দশক ধরে আইনপেশায় দ্যুতি ছড়াচ্ছেন। শুধু তা-ই নয়, দীর্ঘ সময় ধরে সেন্ট্রাল ল’ কলেজে শিক্ষকতাও করছেন। প্রতিবন্ধীদের অধিকার রক্ষায় কাজ করছেন, গড়ে তুলেছেন সংগঠন।

এমএইচডি/এমএ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *