কৈফিয়তের মুখে হেলমেট পরতে বাধ্য হচ্ছেন মোটরসাইকেল চালকরা

কৈফিয়তের মুখে হেলমেট পরতে বাধ্য হচ্ছেন মোটরসাইকেল চালকরা

পুলিশ না থাকায় গত কয়েকদিন ধরে যশোর শহরের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছেন বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তাদের এ কাজে সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ রোভার স্কাউট, বিএনসিসি, আনসার বাহিনীর সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবকরা।

পুলিশ না থাকায় গত কয়েকদিন ধরে যশোর শহরের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছেন বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তাদের এ কাজে সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ রোভার স্কাউট, বিএনসিসি, আনসার বাহিনীর সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবকরা।

সড়কে শিক্ষার্থীদের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে যশোর শহরের ব্যস্ততম সড়কগুলোতে শৃঙ্খলা ফিরেছে। স্বস্তির সঙ্গে নির্বিঘ্নে যাতায়াত করছে সাধারণ মানুষ ও বিভিন্ন যানবাহন। শহরের অভ্যন্তরে রিকশা ও ইজিবাইক চালকদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি বন্ধ হয়েছে। এর মধ্যে বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের কৈফিয়তের মুখে হেলমেট ব্যবহারে বাধ্য হতে হচ্ছেন মোটরসাইকেল চালকরা।

এদিকে গত দুই দিন (বুধবার ও বৃহস্পতিবার) যশোর শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে শিক্ষার্থীরা হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেল চালকদের বাধা দেন। তাদের হেলমেট পরার জন্য অনুরোধ করেন। সড়কের মাঝখানে এক একজন শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে ডিভাইডার তৈরি করেন। ফলে হেলমেট বিহীন চালকদের সড়কে চলতে গেলে ৫০ গজ পর পর তাদেরকে শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে পড়তে হয়। ওই সব মোটরসাইকেল চালকরা কেন হেলমেট পরেনি সেই কৈফিয়ত দিতে দেন শিক্ষার্থীদের। এক পর্যায়ে কৈফিয়তের মুখে পড়ে হেলমেট পরিধান করতে বাধ্য হন মোটরসাইকেল চালকরা।

সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে শিক্ষার্থীদের এ কঠোর পদক্ষেপের ফলে এখন বৃদ্ধি পাচ্ছে হেলমেট পরার প্রবণতা। 

সালমান গাজী নামে এক মোটরসাইকেল বলেন, হেলমেট ছাড়া বেরিয়েছিলাম। শহরের মধ্যে কমপক্ষে ২০ থেকে ৫০ জন শিক্ষার্থীর বাধার মুখে পড়তে হয়েছে। তাই আর ভুল করছি না। আজ হেলমেট নিয়ে বের হয়েছি।

শহরের চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড মোড়ে এক মোটরসাইকেল চালক রবিন শেখ বলেন, বাড়ি থেকে বাজারে এসেছি, এতোটুকু রাস্তা এজন্য হেলমেট নিয়ে আসিনি। তারপরেও ৩ থেকে ৪ জন শিক্ষার্থীকে কৈফিয়ত দিতে হয়েছে কেন হেলমেট পরিনি। তবে তারা হেলমেট পরার জন্য অনুরোধ করছে, কোনো খারাপ ব্যবহার করছে না।

ইমরান হাসান নামে আরেক মোটরসাইকেল চালক বলেন, হেলমেট ব্যবহার না করার কারণে শিক্ষার্থীদের কৈফিয়ত দিতে দিতে মুখ ব্যথা হয়ে গেছে। এজন্য আজ হেলমেট নিয়ে বের হয়েছি। ৫০ গজ পর পর শিক্ষার্থীরা বাধা দিয়ে জিজ্ঞাসা করে কেন হেলমেট পরিনি।

শহরের জজকোর্ট মোড়ে দায়িত্ব পালন করা রেজাউল ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা প্রতিটি সড়কে ৫০ গজ পর পর একেকজন শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে ডিভাইডার তৈরি করেছি। যানবগুলো নিজ নিজ লেন ব্যবহার করছে। যেসব মোটরসাইকেল চালকরা হেলমেট ব্যবহার করছেন না তাদেরকে গতিরোধ করে কৈফিয়ত নেওয়া হচ্ছে এবং হেলমেট ব্যবহারের জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।

দড়াটানা মোড়ে ট্রাফিকের কাজ করা নয়ন হোসেন নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা ৫০ গজ দূরে দূরে দাঁড়িয়ে শৃঙ্খলারা সঙ্গে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছে। বিশেষ করে হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেল চালকদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। তাদের হেলমেট পরতে অনুরোধ জানানো হচ্ছে। জনগণ আমাদের কার্যক্রমে অনেক খুশি।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে যশোর শহরের বিভিন্ন সড়কগুলো ঘুরে দেখা গেছে, শহরের ব্যস্ততম সড়ক মুজিব সড়ক, গুরুত্বপূর্ণ মোড় জজ কোর্ট মোড়, শহরের প্রাণকেন্দ্র দড়াটানা মোড়, চিত্রার মোড়, মনিহার পুরাতন বাস টার্মিনাল, পালবাড়ি মোড়, হাসপাতাল মোড়, নিউমার্কেটসহ বেশকয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে প্রায় পাঁচ  শতাধিক শিক্ষার্থীকে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজ করতে দেখা যায়।

এ্যান্টনি দাস অপু/এমএ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *