খোঁজ নেয়নি সিনিয়র অফিসাররা : যশোরের পুলিশ সদস্যরা

১১ দফা দাবিতে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন যশোরের পুলিশ সদস্যরা। খবর পেয়ে পুলিশ সুপার মাসুদ আলমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পুলিশ লাইনে গিয়ে পুলিশ সদস্যদের দাবি এবং তাদের কষ্টের কথা শোনেন।

১১ দফা দাবিতে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন যশোরের পুলিশ সদস্যরা। খবর পেয়ে পুলিশ সুপার মাসুদ আলমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পুলিশ লাইনে গিয়ে পুলিশ সদস্যদের দাবি এবং তাদের কষ্টের কথা শোনেন।

বিক্ষোভে কনস্টেবলরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আন্দোলন চলাকালে বাহিরে বিভিন্ন জায়গায় নাশকতা চলছিল। সারা দেশের মতো যশোরের পুলিশ সদস্যদেরও মারার জন্য টার্গেট করেছিল দুর্বৃত্তরা। বিভিন্ন স্পটে, থানায় ডিউটি করাকালীন সময়ে আমাদের কোনো সিনিয়র অফিসার খোঁজও নেয়নি। জল-খাবারও পাইনি আমরা। আমরা অসহায়ত্বের মতো প্রাণসংশয়ে সময় পার করেছি।

বিক্ষোভকারী পুলিশ সদস্যরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বহু পুলিশ সদস্য হত্যা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। যদিও ছাত্র আন্দোলনে সরকারের বিভিন্ন বাহিনীর গুলিতেও অনেক ছাত্র নিহত হয়েছে। কিন্তু সব দায় পুলিশের কাঁধেই চাপানো হয়েছে। এতে আন্দোলনরত ছাত্র ও সাধারণ মানুষের কাছে পুলিশকেই গালমন্দ শুনতে হচ্ছে। এর ফলে কোনো পুলিশ সদস্য কোথাও দায়িত্ব পালনে গেলে বিনা কারণেই তাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হচ্ছে। এ সব ঘটনায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা (বিসিএস ক্যাডার) বিষয়টি এড়িয়ে চলছেন। নিহত ও আহত পুলিশ সদস্যদের কোনো খোঁজখবরই নেননি তারা। সে কারণে মাঠ পর্যায়ে কোনো পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালনে জীবনের নিরাপত্তা পাচ্ছেন না।

মাঠপর্যায়ের পুলিশ সদস্যরা ১১ দফা দাবি নিয়ে কর্মবিরতি পালন করেছেন—

* স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠন এবং পুলিশ বাহিনীকে সংস্কার করে জনগণের কল্যাণে নিয়োজিত করতে হবে;* পোশাকের রং পরিবর্তন করে ড্রেস কোড অনুযায়ী আইজিপি পর্যন্ত একই রঙের হতে হবে;* পুলিশ সদস্যদের হত্যার বিচার ও নিহতদের পরিবারে কমপক্ষে একজনকে সমপদে চাকরি দেওয়াসহ ক্ষতি পূরণ দিতে হবে;* লোভী পুলিশ সদস্যদের অবৈধ সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে পুলিশের কল্যাণে ব্যবহার করতে হবে;* দায়িত্ব পালনকালে জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় যে সকল পুলিশ সদস্য আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছেন তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ বা হয়রানি করা যাবে না;* সব পুলিশ সদস্যদের শ্রম আইন অনুযায়ী ৮ ঘণ্টা কর্মঘণ্টা করতে হবে। এর বেশি সময় দায়িত্ব পালন করলে ওভার টাইম বিল হিসেবে প্রতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে;* ২০ দিন নৈমিত্তিক ছুটির পাশাপাশি দুই মাস অর্জিত ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে;* প্রত্যেক পুলিশ সদস্য নিজ জেলায় বদলি ও ঊর্ধ্বতনদের মতো পদায়নসহ আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে;* সব পুলিশ সদস্য ও তার পরিবারের চিকিৎসা করানো এবং পদোন্নতির ক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের মতো অধস্তন সদস্যদের বিভাগীয় পরীক্ষা একবারই হতে হবে। পোস্টিং বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে;* সার্জেন্ট ও সাব-ইন্সপেক্টরদের পিএসসির অধীনে নিয়োগ দিতে হবে। এসআই ও এএসআইদের মতো সার্জেন্ট এবং এটিএসআইদের তদন্ত ক্ষমতা দেওয়াসহ ট্রাফিক পুলিশের মামলার টার্গেট দেওয়া বন্ধ ও রেকার বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে;* পুলিশ কমিউনিটি ব্যাংক থেকে সব কল্যাণ তহবিলের হিসাব প্রতি বছর দিতে হবে এবং লোনের ক্ষেত্রে সুদের হার ১০ শতাংশের নিচে আনতে হবে। নবম থেকে ষষ্ঠ গ্রেডে পদোন্নতি এবং সর্বোচ্চ ১০ বছরের মধ্যে পদোন্নতি নিশ্চিত করা অন্যতম। 

এ্যান্টনি দাস অপু/এমজে

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *