বাংলাদেশে গুমের ঘটনা নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে আরও ১১টি অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। ২০১১ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে গুমের শিকার ১২ জনের বিষয়ে বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) আলাদা অভিযোগ দাখিল করেন তাদের পরিবারের সদস্য ও ভুক্তভোগী দুই ব্যক্তি।
বাংলাদেশে গুমের ঘটনা নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে আরও ১১টি অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। ২০১১ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে গুমের শিকার ১২ জনের বিষয়ে বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) আলাদা অভিযোগ দাখিল করেন তাদের পরিবারের সদস্য ও ভুক্তভোগী দুই ব্যক্তি।
ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এক ব্রিফিংয়ে বলেন, বিভিন্ন সময়ে গুম হওয়া ১০ জন ব্যক্তির বিষয়ে নয়টি অভিযোগ করা হয়েছে। তারা আজ পর্যন্ত ফিরে আসেননি। আর দু’জন ফেরত আসতে পেরেছেন। তারা আলাদা অভিযোগ করেছেন।
ব্রিফিংয়ে গুমের শিকার ১২ ব্যক্তির নাম ও তারিখ তুলে ধরেন তাজুল ইসলাম। নয়টি অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, আমিনুল ইসলাম ও আনিসুর রহমান ২০১১ সালের ৩১ অক্টোবর র্যাবের মাধ্যমে অপহৃত হন। মুন্সিগঞ্জ থেকে ২০১৪ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি সোহেল মিয়াজী রানা গ্রেপ্তার হন। ২০১১ সালের ১০ জুলাই আবদুল্লাহ বনানী থেকে নিখোঁজ হন। ২০১১ সালের ৩ ডিসেম্বর ইকবাল হোসেনকে আগারগাঁও থেকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা উঠিয়ে নিয়ে যায়। আইনুল ইসলামকে নারায়ণগঞ্জের মদনপুর চৌরাস্তা থেকে ২০২০ সালের ৪ জুলাই তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। ২০১৮ সালের ২৭ আগস্ট মো. সাজুকে মোহাম্মদপুর থেকে তুলে নেওয়া হয়। ২০১৪ সালের ১ নভেম্বর কুদ্দুসুর রহমান চৌধুরীকে মিরপুর ১ থেকে তুলে নেওয়া হয়। ২০১৩ সালের ৩০ এপ্রিল গাবতলী থেকে মো. কাইয়ূমকে উঠিয়ে নেওয়া হয়। ভাষানটেক থেকে ২০২০ সালের ৬ জুন তুলে নেওয়া হয় মো. মোস্তফাকে। নয় পরিবারের এই ১০ জন এখনো নিখোঁজ। আজ পর্যন্ত তাদের স্বজনেরা জানেন না, তারা কোথায় আছেন।
এর বাইরে আরও দু’টি অভিযোগ জমা পড়েছে বলে জানান তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, দু’জনের মধ্যে একজন ‘বাংলাদেশ গুম পরিবার’ নামের সংগঠনের আহ্বায়ক বেল্লাল হোসেন। তাকে ২০১৬ সালের ১০ অক্টোবর উঠিয়ে নেওয়া হয়। একই বছরের ২ নভেম্বর তাকে একটি জায়গায় ফেলে দেওয়া হয়। এছাড়া, আইনজীবী সোহেল রানাকে ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি উঠিয়ে নেওয়া হয়। একই বছরের ১৩ আগস্ট তাকে ফেলে যাওয়া হয়। পর্যালোচনা করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশ গুম পরিবার সংগঠনের পক্ষ থেকে ৬৪টি গুমের ঘটনার তালিকা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, এগুলো যাচাই–বাছাই ও পর্যালোচনা করা হবে।
এ সময় ফেরত আসা দুই ব্যক্তি (আইনজীবী সোহেল রানা ও বেল্লাল হোসেন) এবং অভিযোগকারী ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। ব্রিফিংয়ে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম এবং বি এম সুলতান মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, ২২ সেপ্টেম্বর বাসা থেকে তুলে নিয়ে গুম করে রাখার অভিযোগে কর্মকর্তাসহ ছয় র্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে একটি অভিযোগ দাখিল করেন ইসরাত রফিক ঈশিতা। এর পরদিন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে (১৫ বছর) গুমের সব অভিযোগ তদন্ত চেয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে আবেদন করেন ব্যবসায়ী এনামুল কবির। পাশাপাশি ২০১৮ সালে ১০ দিন নিজে গুমের শিকার হয়েছেন বলে তিনি অভিযোগে করেন।
কেএ